প্রধানমন্ত্রী মুজিবকন্যা শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন। নবগঠিত সরকারের অলঙ্কারশোভিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের জন্য শুভকামনা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় মানুষের জন্য সুখকর না হলেও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় এ নির্বাচন শেষ পর্যন্ত জনগণকে মেনে নিতে হয়েছে। নির্বাচন-উত্তর গতকাল তৃতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে শেখ হাসিনা ৪৮ সদস্যের যে মন্ত্রিসভা উপহার দিয়েছেন তা প্রশংসিত হয়েছে। বলা যায়, ধূসর নির্বাচনে উজ্জ্বল বর্ণময় সরকার। মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া জনপ্রতিনিধি ও মানুষদের নাম শনিবার রাত থেকে গণমাধ্যমের সুবাদে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সফল প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান যিনি প্রজ্ঞা, মেধা ও যোগ্যতার ক্যারিশমায় ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের সাহসিকতায় '৯৬ সালের কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করেছিলেন। তার মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে ঠিক কিন্তু মানুষ মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়াদের ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে ভুলেনি। গতকাল শীতের বিকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করান। মন্ত্রিসভায় ক্লিন ইমেজের অভিজ্ঞ দক্ষদের সঙ্গে তারণ্যেরও অভিষেক ঘটেছে। '৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা ২১ বছরের টানা সংগ্রামের পথ হাঁটা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনে একটি দক্ষ ও সফল মন্ত্রিসভা উপহার দিয়েছিলেন। তার নাম ছিল জাতীয় ঐকমত্যের সরকার। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিশাল গণরায় নিয়ে এলেও মন্ত্রিসভা নির্বাচনে সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় ছন্দপতন ঘটেছিল। মহাজোট সরকার নামে হলেও কার্যত সেটি নষ্টভ্রষ্ট কমিউনিস্ট প্রভাবিত আওয়ামী লীগের দুর্বল মন্ত্রিসভা ছিল। এবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপির বর্জনের মুখে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রেখে তার দলকে নির্বাচনে রাখার মাধ্যমে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ভোট সম্পন্ন করেছে। সিইসি রকিবের নির্বাচন ছিল যতটা ধূসর, তারচেয়ে উজ্জ্বল বর্ণময় হয়েছে শেখ হাসিনার সরকার গঠন। অ্যারাবিয়ান ব্লাকহর্স খ্যাত শেখ হাসিনার সঙ্গে এবার দক্ষতা আর তারুণ্যনির্ভর মন্ত্রিসভাও ছুটতে পারবেন সমান তালে। এমনটি আশাই করা যায়। মন্ত্রিসভায় শুধু আওয়ামী লীগ নয়, শুধু ১৪ দল নয়, জাতীয় পার্টিরও প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ প্রবীণ জেলা নেতৃত্ব আর উদীয়মান তরুণদের সমন্বয়ে মুজিবকন্যার তরীতে উজ্জ্বল, অভিজ্ঞ নেতৃত্বের সমাহার ঘটেছে। এখানে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়- তিন প্রজন্মের সানি্নধ্য পাওয়া নেতৃত্বের মিলন ঘটেছে। ২০০৮ সালের সরকারে ঠাঁই পাওয়া মন্ত্রীদের অনেকে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অতিকথন আর ক্ষমতার আস্ফালনে মানুষকে ত্যক্ত-বিরক্ত করে ফেলেছিলেন। গণমাধ্যম তাদের চেহারা বার বার উন্মোচিত করেছে। রাজধানী থেকে দূর পাড়াগাঁয়ে মানুষের মুখে মুখে তারা সমালোচিত হয়েছেন। অনেকের নাকি দেশ-বিদেশে অনেক সম্পদও হয়েছে। মানুষের আফসোস ছিল মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা তাদের চিনতে পারেননি। কিন্তু এবার মন্ত্রিসভা গঠন করতে গিয়ে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন তিনি মানুষের ভাষা শুনতে পেরেছেন। মানুষের ভাষা উপলব্ধি করেছেন। সবারই আমলনামা তার নজরের বাইরে নয়। এখান থেকে বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেকেই সামনে পথ চলতে পারেন শিক্ষা নিয়ে। বিগত মন্ত্রিসভার অনেকেই আবার নতুন মন্ত্রিসভায় ফিরে এসেছেন আমলনামার ওপর ভর করে। এবার যারা হিসাব-নিকাশ করে চলবেন তাদেরও ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। আমলনামা লাল কালিতে লেখা হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার। মানুষের বিচার-বুদ্ধির ক্ষমতা প্রখর। বার বার প্রমাণ হয়েছে ক্ষমতার চেয়ারে যারা বসেন তারা ভুল করেন। সাধারণ মানুষ ভুল করে না। সাধারণ মানুষের ভাষা শুনে কার্যত আগামী দিনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রাষ্ট্র পরিচালনার পরিকল্পনা থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবীন-প্রবীণের, প্রাজ্ঞ-অভিজ্ঞদের সঙ্গে দলের ত্যাগীদের কাতারবন্দি করেছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দল সরকারের বাইরে থেকে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। সরকারকে সমালোচনায় নাস্তানাবুদ করে জবাবদিহিতা আদায় করে। কিন্তু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর একক নির্বাচনে এসে লেজেগোবরে অবস্থা লাগিয়ে যে জাতীয় পার্টি আসন ভাগাভাগির ভোটে অংশ নিয়েছে সেখানে কতটা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে সেটা সবাই জানেন। সংসদীয় গণতন্ত্রের রাজনীতিতে আজকের বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা ভুনাখিচুড়ির রূপ নিয়েছে। হয়তো বাঙালির খিচুড়ি পছন্দ বলেই ইংরেজি নববর্ষে এই উপহার। আর তাই সংসদীয় গণতন্ত্রের চেতনার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ হলেও জাতীয় পার্টির প্রাজ্ঞ নেতাদের মন্ত্রিসভায় যোগদান সরকার, দেশ, মানুষ ও তাদের দলের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। কার্যত এবারই জাতীয় ঐকমত্যের সরকার হয়েছে।
গতকাল শপথ অনুষ্ঠানে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ। রাজনীতির দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া হাওর জয়ী মাঝি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সংসদে স্পিকারের অভিজ্ঞতা ও সব মহলের আস্থা কুড়িয়ে রাষ্ট্রপতির আসনে বসেছেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দেখা গেছে। তাকে স্পিকার নিয়োগের পর নানা মহলে গুঞ্জন থাকলেও তিনি তার মেধা, যোগ্যতা, দক্ষতা এক কথায় ব্যক্তিত্ব আর পারফরমেন্সে স্পিকার হিসেবে খুব কম সময়েই গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। ঝড়ঝঞ্ঝা উত্তাল সে াতের বিপরীতে সাঁতার কাটা মুজিবকন্যা শেখ হাসিনার এক পাশে ছিলেন তার স্নেহময়ী ছোট বোন শেখ রেহানা, পেছনে তাদের পুত্রগণ, আরেক পাশেই এই কঠিন পরিস্থিতির মুখে সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে জাতীয় পার্টির হালধরা এবং আজকের সংসদে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ। রওশনের পাশেই বিষণ্ন মনে বসেছিলেন সিএমএইচের শয্যা থেকে আসা সাবেক রাষ্ট্রপতি জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। বঙ্গভবনে প্রবেশ করতেই তুমুল করতালিতে তাকে বরণ করার মাধ্যমে সবাই জানিয়ে দিলেন, বিপর্যয়ে পড়লেও গ্ল্যামারাস হারাননি তিনি। আকর্ষণের কেন্দ্রেই রয়েছেন। নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে উল্টো হাঁটা না দিয়ে ময়দানে নামলে হয়তো ইতিহাস অন্যরকম হতো। সংসদে ও ক্যাবিনেটে জাতীয় পার্টির আসন বাড়ত। এরশাদকে শপথ অনুষ্ঠানে বিষণ্নচিত্তে বসে থাকতে হতো না। ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে কখনো কারাগারে, কখনো মামলার সুতায় হাত-পা বাঁধা এরশাদ স্বাধীনভাবে রাজনীতিটুকু করতে পারেননি। মানুষ বুঝলেও হয়তো তিনি বোঝার চেষ্টা করেননি। তবে জাতীয় পার্টির কর্মীদের প্রাণ যেমন তিনি, মানুষের ওপর তার প্রভাবও ফুরিয়ে যায়নি।
আওয়ামী লীগ রাজনীতির প্রাণ ও দুঃসময়ের কাণ্ডারি আমির হোসেন আমু ও ক্রাইসিস ম্যানেজার তোফায়েল আহমেদ এবার মন্ত্রিসভায় স্বসম্মানে ফিরেছেন দল ও নেত্রীর প্রতি এক কঠিন সময়ে পাশে থেকে হাল ধরার অগি্নপরীক্ষা দিয়ে। আবুল মাল আবদুল মুহিত মন্ত্রী থাকার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করলেও শেখ হাসিনার অনুরোধেই থাকলেন। মরহুম আবদুর রাজ্জাক ও মরহুম আবদুল জলিল বেঁচে থাকলে তাদের পাশে উজ্জ্বল মূর্তি নিয়ে দাঁড়াতেন। বহুদিন পর অতীতের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা নিয়ে মন্ত্রিসভায় ফিরেছেন মোহাম্মদ নাসিম ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তাদের সঙ্গে এরশাদের গুডমিনিস্টার তুখোর আড্ডাবাজ চোখ-কান খোলা জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। বন ও পরিবেশের চেয়ে হয়তো বিদ্যুৎ-জ্বালানিতেই তাকে বেশ মানাত। জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এরশাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। উচ্চশিক্ষিত রুচিশীল এই অভিজ্ঞ মানুষটির ২০০৯ সালের সরকারে শপথগ্রহণের পাওনা এবার শেখ হাসিনা পুষিয়ে দিলেন। তার সঙ্গে আরেক মেধাবী ছাত্রনেতা, ডাকসুর সাবেক জিএস ও এরশাদের মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন বাবলুকে মন্ত্রিসভায় না দেখা এক বিস্ময়। সৎ পিতার সৎ ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ফিরেছেন স্বমহিমায়। এবার নিশ্চয়ই সময় দেবেন মন্ত্রণালয়ে। রীতিমতো যুদ্ধের ময়দানে সময়মতো ফল প্রকাশ ও শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার কৃতিত্ব নিয়ে ফিরেছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। কৃষির মতিয়া চৌধুরী এ নিয়ে তিনবার মন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায়। মিডিয়ায় বিরোধী দলকে আক্রমণে রাখা ১৪ দলের হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন শুরু থেকেই অলঙ্কার হয়ে মন্ত্রিসভায় দেখা দিলেন। জাতীয় পার্টির মশিউর রহমান রাঙ্গা ও মুজিবুল হক চুন্নুকে যথার্থই নিয়েছেন শেখ হাসিনা। এখানে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও কাজী ফিরোজ রশিদের ঠাঁই হলে ছন্দপতনটা ঘটত না। কিংবা টেকনোক্রেট কোটায় জি এম কাদের। জাপার সাংগঠনিক শক্তির বিচারে রুহুল আমিন হাওলাদারকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। এমনকি জাতীয় পার্টির দ্বিতীয় দুর্গ সিলেট থেকে সেলিম উদ্দিনকেও অন্তত একটি উপমন্ত্রী দেওয়া যেত। হয়তো বিরোধী দলের উপনেতা ও চিফ হুইপের মর্যাদা বাড়িয়ে ঘাটতি পূরণ করা যায় প্রজ্ঞাবানদের বসিয়ে। সামনে মন্ত্রিসভায় আরও দুই-তিনজনকে নিয়ে দেখা যায় পূর্ণতা। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের সারিতে লতিফ সিদ্দিকী রাজনীতিতে পারিবারিক অবদানের সিঁড়িপথেই ফিরে এসেছেন। ফিরে এসেছেন নীরবে কাজ করা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ওয়ান-ইলেভেন থেকে শিক্ষা নেওয়া রাজনীতিতে প্রশংসিত জনপ্রিয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ফিরে আসাটাই স্বাভাবিক ছিল। শেখ হাসিনা ভুল করেননি। আওয়ামী লীগের সারিতে প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ঠাঁই না পাওয়াকে মৃদু ছন্দপতনের মতো দেখা গেল। নষ্টভ্রষ্ট কমিউনিস্টদের কেউ বিতর্ক মাথায় নিয়ে ভোটে হেরেছেন, কেউবা ব্যর্থ হয়েছেন মন্ত্রিসভায় আসতে। শেখ হাসিনার জন্য এটি প্লাসই হয়েছে। তাদের সঙ্গে বাদ পড়া বিতর্কিত মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ডের কারণে ঠাঁই না পাওয়া প্রাপ্য ছিল। শহীদ ময়েজউদ্দিনের কন্যা মেহের আফরোজ চুমকীর আবার প্রতিমন্ত্রী হওয়া তার দক্ষতা, চারিত্রিক গুণাবলী ও মিষ্টি ব্যবহারের কারণে পাওনা ছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধা মৌলভীবাজারের গণমানুষের নেতা দিলখোলা, রাজনীতি করতে এসে অনেক সম্পদ বিক্রি করা সৈয়দ মহসিন আলী, ময়মনসিংহের অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, বারবার বিজয়ী পাবনার ঈশ্বরদীর শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, মাগুরার বীরেন শিকদার, নওগাঁর ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক, গাজীপুরের আ ক ম মোজাম্মেল হককে জীবনের পড়ন্ত বেলায় শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভায় নিয়ে দলের আদর্শবান নেতা-কর্মীদের জন্য সম্মানের নজির রাখলেন। ক্রিকেটের সাফল্য দিয়ে আ হ ম মোস্তফা কামাল, সাংস্কৃতিক জগতের তারকা আসাদুজ্জামান নূরকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে সরকারকে আলোকিত করেছেন। তাদের সঙ্গে একঝাঁক তরুণের মধ্যে ফুটবলের কিংবদন্তি আরিফ খান জয়কে উপমন্ত্রী করে আলোর ঝলকানি দিয়েছেন। টানা পাঁচবারের বিজয়ী কর্মীবান্ধব ও দলের যুবকর্মীদের প্রাণ মীর্জা আজমের পাওনা দেরিতে হলেও পুষিয়ে দিলেন। পাহাড়ের ছেলে সৎ জনপ্রতিনিধি বীর বাহাদুরের অভিষেক চমৎকার। সেই সঙ্গে নসরুল হামিদ বিপু, জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের প্রতিমন্ত্রী হওয়া তরুণ প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়েছে। তরুণরা যত বিনয়ী হবেন ততই ভালো করবেন।
রাজপথের আন্দোলনের লড়াকু মুখ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পথ হাঁটা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে আগমন মাঠের কর্মীদের আনন্দ দিয়েছে। সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী মরহুম এইচ এস কে সাদেক পত্নী ইশমত আরা সাদেক নতুন মুখ হিসেবে এসেছেন। প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের একজন সৎ জনপ্রতিনিধি হিসেবে সুনাম রয়েছে। সাবেক আমলা এম এ মান্নান সেই সুনামের পথে নিশ্চয়ই হাঁটবেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে পথ হাঁটা কর্মীপ্রিয় রেলের মুজিবুল হক নিজ গুণেই ফিরেছেন। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু কীর্তিমান আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ মরহুম অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের ছেলে প্রথিতযশা আইনজীবী, মেধাবী, বিনয়ী আনিসুল হক সব মহলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন। ভূমিতে সাফল্য কুড়ানো তৃণমূল থেকে উঠে আসা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার পূর্ণমন্ত্রী হলেন।
প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীগণ শপথ নিয়েছেন। আইন অনুযায়ী দেশ ও সংবিধানের প্রতি আনুগত্য থেকে কারও প্রতি রাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে অর্পিত কর্তব্য পালন করবেন। দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সহিংস রাজনীতি দেশের মানুষকে প্রাণহীন করে দিয়েছে। অর্থনীতিতে নেমে এসেছে বিপর্যয়। সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আগামী দিনে দেশ ও মানুষের কল্যাণে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির ঊধের্্ব উঠে মানুষের ভাষা ও অনুভূতি হৃদয় ও মননে লালন করে কথা নয়, কাজ বেশি নীতিতে ভূমিকা রাখবেন এটাই প্রত্যাশা। দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল এখনো আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। তাদের আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় নিয়ে আসতে এবং অভীষ্ট লক্ষ্যে পেঁৗছতে পথ হাঁটবেন। গণমাধ্যম ইতিবাচক খবর প্রচার করে না, নেতিবাচক খবরকে প্রাধান্য দেয়- এ অভিযোগ তখনই ভুল প্রমাণ করতে পারবেন যখন তারা শপথ অনুযায়ী অর্পিত দায়িত্ব সুনামের সঙ্গে পালন করতে পারবেন। যতক্ষণ মানুষের কল্যাণে ইতিবাচক দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন ততক্ষণ আমাদেরই নয়, গণমানুষেরও সমর্থন পাবেন। ভুল করলে আমরা নই, আমজনতাই নয়, প্রকৃত বন্ধুর অন্তর থেকে উচ্চারিত হবে ভুল ভুলই। আমরা চাই না আমাদের মন্ত্রীগণ, আমাদের দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদগণ, সম্ভাবনাময় তরুণগণ মন্ত্রিত্বের দায়িত্বে ভুল করুন। আমরা চাই আপনাদের হাত ধরে দেশে শান্তি, উন্নয়ন, সুশাসন আসুক। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক। দমন-পীড়ন নয়, আল
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।