প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশিরা বেশি বেশি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে। বিরোধী দল কী তা তারা জানে না। বিরোধী দল মানে ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের একটি দল। যারা নির্বাচন করবে না তারা কখনো বিরোধী দল হতে পারে না। তারা হয়তো একটি রাজনৈতিক দল হতে পারে। দেশের স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তিদের কথায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি তিনি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরাজিত শক্তির দোসররা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র করে চলেছে এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যাচার করছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলে তারা দেশের স্বাধীন অস্তিত্ব চায় না। আমরা ওয়েস্ট মিনিস্টার স্টাইলে একটি সংসদ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংসদের সমাপনী ভাষণে এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় সভাপতিত্ব করছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সাবেক বিরোধী দলের সহিংস রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় বিএনপি-জামায়াত একজোট হয়ে নির্বাচন বানচাল করার নামে যে ধরনের জঘন্য কার্যক্রম করেছিল তা আমরা দেখেছি। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এটা দুর্ভাগ্য। তিনি বলেন, বিদেশিরাও আমাদের দেশে বেশি বেশি নাক গলান। আমরাও তাদের পাত্তা দেই। যারা পার্লামেন্টে নেই, শুধু রাজনৈতিক দল তাদের তো কোনো অস্তিত্বই নেই। বিরোধী দল তো সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার জন্য নয়। শুধু ভাতা নেব, সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমণ করব, কমিটি থেকে টাকা নেব, গাড়ি নেব, প্লট নেব, সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করব অথচ সংসদে আসব না, বসব না, দেশের মানুষের স্বার্থে কথা বলব না। এটা তো কোনো বিরোধী দল হতে পারে না। তিনি বলেন, নবম সংসদের ৪১৮ দিনের মধ্যে যে বিরোধী দলের নেত্রী মাত্র ১০ দিন সংসদে আসেন, সাড়ে ৭ ঘণ্টা সরকারের ওপর মনের ঝাল মিটিয়ে বক্তব্য দেন, সেই বিরোধী দল থাকলে আর না থাকলেই কী আসে যায়। তাদের জন্য অনেকের কান্নাকাটি কেন, তা আমি বুঝি না। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানই এদেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকার ও আলবদরদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। জিয়া নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলেন। তাহলে তিনি কীভাবে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারীদের পক্ষ নিয়েছিলেন? প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজাকারদের জিয়াই তো প্রতিষ্ঠিত করেন। জিয়াই তাদের হাতে পতাকা তুলে দেন।
আর তার স্ত্রী নিজামী, মুজাহিদদের মন্ত্রী বানান। তারাই আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯টি ক্যু হয়েছিল। ফায়ারিং স্কোয়াডে দিয়ে মারা হতো। একটির পর একটি ক্যু হতো, আর আর্মি অফিসার মারত। লোকে বলে জিয়া নাস্তার টেবিলে বসেও মৃত্যুদণ্ডে সই দিতেন। তার কোনো অসুবিধা হতো না।
দশম সংসদের বিরোধী দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বিরোধী দল প্রতিদিন সংসদে থেকেছে। বিরোধীদলীয় নেতা সংসদে থেকে কথা বলেছেন। এটি খুবই ইতিবাচক। বিরোধী দল সংসদে থেকে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সমর্থন করবে এবং সরকারের সমস্যা থাকলে বিরোধিতা করবে এমন হওয়া উচিত। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধীদলীয় নেতা নারী এবং স্পিকার নারী- এটা পৃথিবীতে বিরল দৃষ্টান্ত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।