প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, কমিশন সব দলের অংশগ্রহণ চায়। এ ব্যাপারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছি রাষ্ট্রপতিকে। এ ছাড়া নির্বাচনকালীন প্রশাসনে রদবদল, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করার অসুবিধা ও সংসদ ভেঙে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুবিধাসহ নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে ইসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। গতকাল বিকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। যেখানে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। রাষ্ট্রপতিকে আসন্ন নির্বাচন আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। নির্বাচনের তফসিল কবে ঘোষণা করা হবে জানতে চাইলে কাজী রকিব বলেন, যথাসময়ে তা জানানো হবে। সাক্ষাৎকালে সিইসির সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, মো. শাহ নেওয়াজ ও ইসি সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক। ইসির প্রতিনিধি দল বিকাল সাড়ে ৩টায় বঙ্গভবনে পেঁৗছেন। বিকাল সাড়ে ৫টার পর তারা বেরিয়ে আসেন। নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী দেশের বাইরে থাকায় প্রতিনিধি দলে ছিলেন না। দশম সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি তুলে ধরতেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তাদের এই সাক্ষাৎ বলে জানিয়েছেন সিইসি।
ইসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতির কাছে তফসিলের কিছু সম্ভাব্য তারিখ উপস্থাপন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতে নির্বাচন করতে হলে তার ৪৫ দিন আগেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। আর নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে সংসদ বহাল থাকলে কি কি সমস্যা হতে পারে তা এবং নির্বাচনের সময়ে ইসি চাইলে প্রশাসনের বদলিগুলো যেন দ্রুত সম্পন্ন করা হয় তাও বলা হয়েছে। এমনকি ৩০০ আসনে একসঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্বল্পতা রয়েছে। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন বলেও রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে কমিশনকে। সিইসি কাজী রকিব এর আগে জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত সময় রেখেই ভোটের তফসিল দেবেন তারা। সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন কবে হবে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে লিখিত পরামর্শ দেবেন। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে এবং ভোট হবে। গত ২৪ অক্টোবর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছিলেন, মেয়াদপূর্তির আগে শেষ ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য মহাজোটসহ সবার সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি যথাসময়ে রাষ্ট্রপতিকে লিখিত পরামর্শ দেবেন।
সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তুতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন। ওইদিন আটজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন।
২০১১ সালের ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সরকারি ও বিরোধী দলসহ নিবন্ধিত দলগুলোর (জামায়াত ছাড়া) সঙ্গে সংলাপ করে পরবর্তীতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে পাঁচ সদস্যের ইসিকে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগ দেন। চার সিটি করপোরেশনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হওয়ার পর সমালোচনার পাশাপাশি বিএনপি নেতাদের প্রশংসাও কুড়ান ইসি। দায়িত্ব পাওয়ার পর বর্তমান ইসির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির এর আগে একদফা সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়। এবার দেখা করলেন নির্বাচন প্রস্তুতি জানাতে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।