চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে সরকার ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির আশার কথা বললেও বিশ্ব ব্যাংক বলছে, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭ শতাংশের বেশি হবে না।
বিশ্ব ব্যাংকের অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রোসপেক্টস’-এ বুধবার বাংলাদেশের বিষয়ে এমন পূর্বাভাসই দেয়া হয়েছে।
বছরে দুই বার- জানুয়ারি ও জুনে বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্ব ব্যাংক। গত বছর ১৩ জুন প্রকাশিত বছরের দ্বিতীয় প্রতিবেদনে চলতি বছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬ দশমিক ১ শতাংশ ধরা হলেও বুধবারের প্রতিবেদনে তা কমিয়ে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
ঋণদাতা এই সংস্থাটি বলছে, “রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নির্বাচনকে ঘিরে অস্থিতিশীলতার কারণে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে ধরা হচ্ছে।
”
প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা ও বিশৃঙ্খলার কারণে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি কমেছে। তবে সরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে আনা গেছে।
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ঘনীভূত হওয়ায় ২০১৩ সালের শেষ দিকে এসে মূল্যস্ফীতিও কিছুটা বেড়েছে।
২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়লেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে তা কমে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে। কারণ হিসেবে রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি জনশক্তি রপ্তানি কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে বিশ্ব ব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্বল জিডিপি প্রবৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় রাজস্ব আদায়ে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এই অঞ্চলে রাজস্ব আদায়ের হার সমপর্যায়ের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম।
পোশাক খাতের বিরাজমান নিরাপত্তা সমস্যার সঙ্গে চলমান সামাজিক অস্থিরতা যোগ হয়ে বাংলাদেশের শিল্প ও রপ্তানি সক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও বিশ্ব ব্যাংক হুঁশিয়ার করেছে।
সংস্থাটি বলছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যবসায়ীদের আস্থা ও বিনিয়োগের স্থিতিশীলতা অর্জনের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অবশ্য বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে আশার কথাই বলা হয়েছে বিশ্ব ব্যাংকের এই প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে অর্থনৈতিক মন্দার ধকল কাটিয়ে উন্নয়নশীল ও উচ্চ আয়ের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি বাড়তে থাকায় এবছর বিশ্ব অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, “উন্নত অর্থনীতিগুলোর সক্ষমতা বাড়তে থাকায় তা সামনের মাসগুলোতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকেও শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে। তবে দারিদ্র্য কমানোর হারে গতি আনতে উন্নয়নশীল বিশ্বকে আরো কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে, যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, আর্থিক ব্যবস্থা শক্তিশালী হয় এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ে। ”
বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বছর বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ, ২০১৫ সালে হবে ৩ তশমিক ৪ শতাংশ এবং তার পরের বছর হবে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এ বছর ৫ দশমিক ৭ শতাংশ ও ২০১৬ সালে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।