এই ক্ষতির কারণে চলতি অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসবে বলেও আভাস সংস্থাটির। তবে তারা মনে করছে, এত ক্ষতির পরও তা প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বেশি।
বুধবার ঢাকায় ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদন প্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতির চালচিত্র বিশ্লেষণ করে বিশ্ব ব্যাংক সার্বিক বিষয় ইতিবাচক বললেও বেসরকারি বিনিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “চলতি অর্থবছরে সবমিলিয়ে ৪৫ দিন হরতাল-অবরোধ হয়েছে।
“এই ৪৫ দিনে যে আয় কম হয়েছে- সে হিসাব করেই আমরা দেখেছি, ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।
”
ডলারের এই অঙ্ককে বর্তমান বাজারে টাকায় রূপান্তর করলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১১ হাজার কোটি টাকা।
“এটা মূলত উৎপাদনের ক্ষতি। সব খাতের উৎপাদনের যে ক্ষতি হয়েছে, সেটাই এই হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে,” বলেন জাহিদ।
তাদের হিসাবে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সেবাখাতে ৮৬ শতাংশ। শিল্প খাতে ক্ষতির হার ১১ শতাংশ, কৃষিতে ৩ শতাংশ।
বাংলাদেশের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি গত ডিসেম্বরে বলেছিল, সংঘাতের রাজনীতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ভোটের আগে রাজনৈতিক মতবিরোধকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের শেষ কয়েকমাসে হরতাল-অবরোধের কারণে প্রবৃদ্ধি যা ধরা হয়েছিল, তা অর্জিত হবে না বলে স্বীকার করে নেয় সরকারও।
চলতি বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছিল, যা এখন ৬ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
তবে তা-ও অর্জিত হবে না বলে ধারণা করছে বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা। এডিবি বলছে, প্রবৃদ্ধি নেমে আসবে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে।
আইএমএফ বলছে, এই অঙ্ক ৬ এর নিচে নেমে আসবে।
গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ব ব্যাংক ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের আভাস দিলেও এখন তা থেকে আরো কমিয়ে ধরেছে।
জাহিদ বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতির কারণেই প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসবে।
রেমিটেন্স প্রবাহ হ্রাস এবং রপ্তানি আয়ের সম্ভাব্য ধীরগতিকে প্রবৃদ্ধি কমার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি।
“তবে এই ৫ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রলয়ঙ্করী হ্রাস নয়; আকাশ ভেঙেও পড়ছে না।
এত কিছুর পরও এই প্রবৃদ্ধি যদি অর্জিত হয়, তাহলে আমি সেটাকে সন্তোষজনকই বলব। ”
বিশ্ব ব্যাংকের হিসাবে প্রতিবেশীদের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ছাড়া অন্য দেশগুলোর তুলনায় এই প্রবৃদ্ধির হার বেশি।
ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।