অতি উৎসাহী!!!! কিন্তু আগ্রহ নাই!!!! ২০১২ এর চাকা ঘুরলোই শুধু ঘটন অঘটনের রাস্তা ধরে। ভারী চাকায় পিষ্ট হলও তাই নানা ঘটনা। আসলে এত বেশী ঘটনা আমরা হজম করেছি মাত্র গত হওয়া বছরে তাই উপযুক্ত ঘটনার জাবড় কাঁটাও ব্যাপক কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজনীতি, অর্থনীতি, বানিজ্য, শিক্ষা, সন্ত্রাস আরও শত শত প্যাকেজের ভিড়ে জাবড় কাঁটব কেবল ১টি ঘটনা। বোধকরি এটুকুই উপযুক্ত উপাদেয় হবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার।
আরে আরে দাঁড়ান! তার আগে আমাদের ক্রমবর্ধমান খোলসাবৃত বপুর ধারক বাহক বীর এ জাতির হজম শক্তির তারীফ করব না তা কি করে হয়?
এত্ত সব হোলসেল ঘটনা দিব্যি হজম করে বসে আছি তবুও মন খারাপ। আবার কেউ কেউ খানিক বাদে বাদে তৃপ্তির ঢেঁকুরও ও তুলছি। আরও বুঝি হজম করার বাকি?! ভয় হয়! হজম শক্তির পরিধি বাড়াতে বাড়াতে একদিন না এ মানচিত্রই হজম করে ফেলি।
চকচকে খোলস যার সাজসজ্জা করতে করতে আপন গাত্র চর্মই চর্মরোগে আজ জর্জরিত করে ফেলি। তারিফ করার ব্যাপার বটে।
এই না হল আমার সোনার মায়ের সোনার ছেলে!
কি? ভাবছেন তামাশা করছি?
হায়! যদি তামাশাও এ জাতি বুঝত!
বিদায়ী ১২ এর শেষ কয়েকটা দিন ধরেই মন খুবই ব্যথাতুর। বিবেকের পানে তাকিয়ে আরও চমকে যাই। এ কোন ভগ্নদেহী বিবেক আমার হৃদয়ে লালিত হচ্ছে? এ কোন অসাড়তা আমার স্নায়ুগুলোকে গ্রাস করেছে? নাকি ঘটনার আকস্মিকতায় খুবই হতবিহবল হয়ে পড়েছি?
আজ তাই ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে বোধদয় বেলার সেই প্রথম প্রহরে যখন আলতো হাতের স্পর্শে, আশ্বস্ত পূর্ণ হাসিতে শিক্ষা নামক বিশাল রাজ্যের সদর দরজায় কচি পা দুটো ফেলি। আজ চোখের তারায় উঁকি দিচ্ছে কচি মনের সেই ভয়ালদর্শন চেহারা, কানে বাজছে সেই ব্যক্তিটির পাজর কাঁপানো শিক্ষামূলক ধমক। আজ স্মরন করছি সেই মহান কারিগড়দের যারা জাতির মেরুদন্ড নির্মাণের গুরুভার কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
জি, আজ আমি সেই মহান শিক্ষকদের কথাই স্মরন করছি।
স্মরন করছি সেই শিক্ষকের কথা যিনি তার প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছিলেন শুধুমাত্র চাকরি জাতীয়করণ নামক একটা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে। যিনি হাসপাতালে ধুকে ধুকে মৃত্যুবরণ করেছিলেন শুধু এইটুকু দাবি আদায়ে। মনে পড়ে কী এ তামাশা?
একবার ভেবেছি কি তার কথা? কিভাবে তার পরিবারের, তার সেই পাঠশালার পঞ্জিকা অতিবাহিত হচ্ছে? ভাববোই বা কি করে? নিজের পঞ্জিকার পাতা উল্টানোর কথাই তো ভেবে ভেবে পার। কেউ হয়ত বলে উঠবে তা ভাবার বহু লোক আছে।
আছেই তো, থাকবেই তো, এমন করেই তো আছি।
আফসোস! প্রখর রোদ কিংবা তুমুল ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে, চিরচেনা সঙ্গী একখানা ছাতি মাথায় করে, গ্রামের সেই মেঠো পথ ধরে আর হয়তো তার আপন পাঠশালায় যাওয়া হবে না। তার চিরচেনা কর্কশ শিক্ষাসুলভ কণ্ঠে আর হয়তো শ্রেণীকক্ষের সেই জীর্ণ দেয়ালগুলো প্রতিধ্বনিত হবে না। সাবাস বেটা বলে পিঠ চাপড়ে দেয়া সে হাত আর হয়তো কারও কচি মনে স্বপ্নের বীজ বুনবে না।
আজ কে আমাদের এ অধিকার দিল তাকে তার পৃথিবী থেকে অনেক অনেক দূরে সড়িয়ে দেয়ার? উত্তর কি আদৌ পাব কিনা জানি না।
আরও একটু পিছনে যাই-
মনে পড়ে কি অকালে প্রাণ দেয়া সেই সুখী দম্পতির কথা? যারা তাদের কলম জোড়াকে ব্যবহার করতেন জাতির দর্পণরূপে।
জি জনাব! আমি সেই সাংবাদিক সাগর-রুনির কথাই বলছি।
আমি ফিকে হয়ে যাওয়া সাগর-রুনির সেই স্বপ্নের আকাশের কথাই স্মরন করছি। যাতে ভেসে বেড়াচ্ছে একটুকরো কাল মেঘ। যে বৃষ্টি হয়ে ঝরবার অধীর অপেক্ষায় পঞ্জিকার পাতা উলটাচ্ছে।
এভাবেই তো কেটে যাচ্ছে, যাবেই। তবে এভাবেই হয়তো একে একে একদিন খুলে পরবে এ মায়ের শাড়ীর আঁচলের প্রত্যেকটি ভাঁজ।
আরও তামাশা কি স্মরন করতে হবে?
থাক! তা না হয় আগামী দিনের জন্যই তোলা রইলো। ২০১৩ যেন আর কোন তামাশার জন্ম না দেয় এ আশাই করি।
বিদায় নিব,তবে তার আগে---
হে শিক্ষক, হে মানুষ গড়ার মহান কারিগর! তোমার চরণে হাজার সালাম।
হয়তো আমি তোমার ছাত্র নই, তবে তোমরাইতো একদিন আমাদের শিখিয়েছিলে- “বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র” তাই আমি না হয় তোমার শিক্ষা থেকে বঞ্ছিত এক ছাত্র হিসেবেই রইলাম।
হে কলম সৈনিক! তোমাদের জানাই হাজার সালাম। তোমাদের রেখে যাওয়া ছোট্ট এক টুকরো কাল মেঘ যেন অচিরেই বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে এ মায়ের আঁচলে। এ আঁচল যেন আদরভরে শুষে নেয় তোমাদের অসমাপ্ত কান্না।
মা ও মা! এ জাতি আমায় তার কোলে ঠাই না দেক তোমার কোলের ছোট্ট এক কোনায় আমার এ ভগ্ন দেহের যেন একটু ঠাই হয়।
ভাল থেকো মা, ভাল রেখো তোমার সন্তানদের আরও ১টি বছর। নতুন দিগন্তের নতুন প্রহরে তোমার নিকট এটুকুই আর্জি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।