আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর রায় দেওয়া হয় গত বছরের ২ মার্চ। আর এরপর বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের চারটি গ্রামের সবগুলো মন্দির ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। শিরনাম ছিল, বগুড়া ও বাগেরহাটে মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাংচুর : আগুন
Click This Link
উত্তরবঙ্গে বিএনপির দূর্গ হিসেবে পরিচিত বগুড়া জেলায় সংখ্যালঘুদের উপাসানালয়ে এ ধরনের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যায় সেখানকার হিন্দু জনগোষ্ঠী। এ ঘটনায় সারাদেশ জুড়ে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ঘটনাটির গুরুত্ব অনুভব করে ওই মাসেই তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া দক্ষিণ সাবেক পাড়া মধ্যপাড়া, কর্মকারপাড়া, সাবেকপাড়া ও বামুনিয়া গ্রামের ভাঙা মন্দিরগুলো পরিদর্শন করেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মভূমির সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করতে তার এই ছুটে যাওয়া প্রশংসা কুড়িয়েছিল বটে।
ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিটি মন্দিরের জন্য খালেদা জিয়া ৪ টন চাল বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছিলেন। বামুনিয়া গ্রামের ৬৫ বছরের বৃদ্ধ অক্ষয় চন্দ্র পাল বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে গেলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ওই ওয়াদার কথা ভোলেননি। এই করেসপন্ডেন্ট দ্বয়কে কাছে পেয়ে স্মৃতি হাতড়ে স্পষ্ট করেই বললেন, ‘নেত্রী ৪ টন চাল দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
এই চালের টাকা দিয়ে আমরা মন্দির ঠিক করবো। কিন্তু আজ ১০ মাস হয়ে গেলেও ওই চাল আমরা পাইনি। ’
সাঈদীর রায়ে একদিন পর শতাধিক লোক মিছিল নিয়ে বামুনিয়া গ্রামের কালিমন্দির চুরমার করে।
অক্ষয় চন্দ্র পালের এই কথার সমর্থন জানালেন একই গ্রামের হরেশ চন্দ্র পাল। তিনি বলেন, নেত্রী টাকা দেওয়ার কথা বললে তারা খুশি হয়েছিলেন।
এভাবে কয়েক মাস যাওয়ার পর টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে যান তারা। এরপর নিজেরাই প্রায় ৮০ হাজার টাকা তুলে ইট দিয়ে দেওয়াল গাঁথা শুরু করেন। কিছু দূর যাওয়ার পর টাকা শেষ হয়ে যায়। এখন তাদের কাছে অর্থ না থাকায় কাজ এগোচ্ছে না।
একই রকম দাবি করলেন সোনারায় ইউনিয়নের কর্মকারপাড়া শারদীয় দূর্গামন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চন্দ্র কর্মকার।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক বললেন, ‘অন্যসব মন্দিরের মতো তাদের মন্দিরেও ৪ টন চাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। উনি যদি আমাদের কিছু না দেন, তাহলে কে দেবেন?’
১০ মাসেও সেই চাল না পেয়ে কিছুটা মন কষ্টের কথা উল্লেখ করলেও কোনো ক্ষোভ প্রকাশ করলেন না তিনি।
বামুনিয়া সার্বজনীন হরিমন্দিরের পাশে থাকেন লিটন মহান্ত ও কৃঞ্চ চন্দ্র প্রামানিক। এই দুই যুবক বললেন, নেত্রী (খালেদা জিয়া) চার মন্দিরে ১৬ টন চাল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই হিসেবে তাদের মন্দিরে ৪ টন চাল আসার কথা ছিল।
তাদের আশা আজ না হোক কাল তারা এই চাল পাবেনই।
লিটন মহান্ত ও কৃঞ্চ চন্দ্রের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন পাশেই ছিলেন বিনতী রানী হালদার। তিনি বললেন, মন্দিরই ভাঙা হয়নি, সব প্রতিমা ভেঙে রাস্তায় ফেলে রাখে ওরা। মন্দির ভাঙার পর মনটাও ভেঙে যায় তার। তবে নেত্রী যখন কামারপাড়ার সমাবেশে সাহায্য দেওয়ার কথা বললেন, তখন সবাই আশায় বুক বেঁধে ছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের সেই প্রতিশ্রুত চাল না পেয়ে হতাশ হয়েও ভেঙে পড়েননি সোনারায় ইউনিয়নের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। শোককে শক্তিতে পরিণত করে নিজেরাই নিজেদের মতো ঘুরে দাঁড়াতে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছেন তারা।
বামুনিয়া গ্রামের বাসিন্দারা কাজ শুরু করে থেমে গিয়েছেন। তবে বাকি সব গ্রামের বাসিন্দারা ভাঙা মন্দিরের স্থলে মন্দিরের দেওয়ালে নির্মাণের কাজ শেষ করেছেন। দক্ষিণ সাবেক পাড়া মধ্যপাড়ার স্বপন চন্দ্র সরকার ও নীরোদ চন্দ্র সরকার তাদের গ্রামের মন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গে বললেন, গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে এক লাখ টাকার কাজ শেষ করেছেন।
এখন ছাদ, গ্রিল মিলিয়ে তাদের আরো দুই লাখ টাকা লাগবে। এই টাকাও তারা যোগাড় করতে পারবেন। সুত্র
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।