আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোহামেডান ছাড়াই হকি লিগ!

হকির বর্জন থেকে চার ক্লাব সরে আসেনি। ঐতিহ্যবাহী দুই দল মোহামেডান ও ওয়ারী ছাড়াও মেরিনার্স আর বাংলাদেশ স্পোর্টিং তাদের এ সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। চার দল ছাড়াই শেষ হয়েছে বিজয় দিবস ও ক্লাব কাপ টুর্নামেন্ট। আগামীকাল থেকে পর্দা উঠছে ঘরোয়া হকির সবচেয়ে মর্যাদাকর আসর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বিজয় দিবস বা ক্লাব কাপে অভ্যন্তরীণ সমস্যা দেখিয়ে বিভিন্ন ক্লাব অংশগ্রহণ থেকে বিরত ছিল।

এই তালিকায় কোনো কোনো সময়ে বড় দুই দল মোহামেডান-আবাহনীও ছিল। সুতরাং এবার দুই টুর্নামেন্টে মোহামেডানসহ চার ক্লাবের অংশ না নেওয়াটা বড় কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু লিগে মাঠে নামেনি এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। সত্যি বলতে কি দুই প্রধানের কোনো একটি দলকে ছাড়া ফুটবল, ক্রিকেট বা হকির লিগ অনুষ্ঠিত হবে তা ভাবাই যায় না। অথচ এই প্রথম মোহামেডানের মতো জনপ্রিয় দলকে ছাড়াই প্রিমিয়ার লিগ শুরু হতে যাচ্ছে।

এ ক্ষেত্রে ফেডারেশনের অবশ্য কিছু করার নেই। কারণ কেউ যদি না খেলে তাকেতো আর জোর করে মাঠে নামানো যায় না। তাছাড়া চার ক্লাবকে ফিরিয়ে আনতে ফেডারেশনের তরফ থেকে কম চেষ্টাতো চালানো হয়নি। তাদের বর্জনে হকির কর্মসূচি থেমে থাকতে পারে না। তাই কম দল হলেও নিয়মিত আসর মাঠে নামানো ছাড়া কোনো পথই ছিল না।

চার ক্লাব বরাবরই বলছে ফেডারেশনের বর্তমান নির্বাচিত কমিটি ভেঙে না দিলে তারা তাদের বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল থাকবে। কথা হচ্ছে, কি এমন হয়েছে যে কমিটি বিলুপ্তি করতে হবে। তাদের দাবি যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। এটা ঠিক নির্বাচন যে পুরোপুরি নির্ভুল হয়েছে তাও বলা যাবে না। কিছু ত্রুটিতো ছিলই।

তবে এ ঘটনা নতুন নয়, প্রতি নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরনের অভিযোগ উঠে। কিন্তু কোনো সময়ে কেউ লিগ বর্জন করেনি। কেননা আন্দোলনের সঙ্গে লিগের তো কোনো সম্পর্ক নেই। প্রতিবাদের নামে মোহামেডানের নেতৃত্বে হকিতে এবার যে কর্মকাণ্ড ঘটেছে তা সত্যিই নিন্দনীয়। দলবদল বর্জন ছাড়াও জাতীয় খেলোয়াড়দের ক্যাম্পে যোগদানে বাধা দেওয়া হয়।

খেলোয়াড়দের ব্যবহার করে ফেডারেশন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তারাতো ঘোষণা দিয়েছিল তাদের এ আন্দোলনের সঙ্গে জাতীয় দলের সব খেলোয়াড়রা একাত্দতা প্রকাশ করেছে। বাস্তবে কি তাই হয়েছে, ক্লাব কাপে স্বল্পসংখ্যক দল অংশ নিলেও অধিকাংশ জাতীয় খেলোয়াড়রা মাঠে নেমেছিলেন। প্রথমে আটদল আন্দোলনে শরিক হলেও এখন মাত্র আছে চার ক্লাব। তাও আবার মোহামেডান ও মেরিনার্স ছাড়া বড় কোনো দল নেই।

সুতরাং তারা যে উদ্দেশ্য আন্দোলনে নেমেছিল তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলা যায়। কারণ তারাতো আর হকির চাকাকে অচল করতে পারেনি।

যাক গুটি কয়েক কর্মকর্তার কারণে মোহামেডানের ভাবমূর্তি নষ্ট হলেও সচেতন ক্রীড়াপ্রেমীরা ঐতিহ্যবাহী দলটিকে ছাড়া লিগ হবে তা ভাবতেই পারছেন না। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমত উল্লাহ গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে কিন্তু আসর বর্জন করবে তা ভাবতেই পারেনি। আমরা বারবার তাদের অনুরোধ করেছি মাঠে ফেরার।

এমনকি বলা হয়েছে যদি আপনারা খেলতে চান তাহলে আলাদাভাবে দলবদলের ব্যবস্থা করব। কিন্তু তারা আসেননি, এখনতো আর অপেক্ষা করা যায় না। তাদের ছাড়াই আমরা লিগ শুরু করতে বাধ্য হয়েছি। সুতরাং এক্ষেত্রে ফেডারেশন কোনো ঘাটতি রাখেনি। সাত দলকে নিয়েই লিগ শুরু করতে হচ্ছে।

আবাহনী আছে কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান নেই বলে লিগ জৌলসময় হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। তাছাড়া লিগ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে নতুন সমস্যাও তৈরি হতে যাচ্ছে। কেননা লিগে সর্বনিম্ন পয়েন্ট পাওয়া দল রেলিগেশনে চলে যায়। সেক্ষেত্রে মোহামেডানসহ চার ক্লাব অংশ না নেওয়াতে তাদের ভাগ্য কি থাকবে। বাইলজ যদি মানা হয় তাহলে আগামী মৌসুমে এদের কারোর প্রিমিয়ার লিগে থাকার কথা নয়।

রহমত উল্লাহ বলেছেন, এ বিষয়ে এখন কিছু বলা সম্ভব নয়। আর এর জন্য আলাদা এক কমিটি রয়েছে। অর্থাৎ বাইলজ যদি মানা হয় তখন হকি অঙ্গনে নতুন করে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হবে। কেননা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে শাস্তি নেওয়াটা ঝুঁকির ব্যাপার। সেক্ষেত্রে মোহামেডানসহ চার দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে হকিতে আরও বড় ধরনের জটিলতা দেখা দেবে।

অর্থাৎ যতই হকির চাকা সচল থাকুক না কেন এ খেলার ঝামেলা সহসা কাটছে না। কিন্তু হকি কি এভাবেই চলবে?

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.