সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস রুখতে ঠাকুরগাঁওমুখী রোডমার্চের পথে টাঙ্গাইলের রামনা বাইপাসে এক পথসভায় তিনি একথা বলেন।
ইমরান বলেন, “জামায়াত-শিবির একাত্তরে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছে, এখনো করছে। পাকিস্তান এখনো তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে। তাদের সহায়তায়ই তারা দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা করছে।
“এখন তাদের প্রস্তুতি নিতে হবে, বাংলাদেশ ছেড়ে তাদের আশ্রয়স্থলে চলে যাবার জন্য।
নির্যাতিত মানুষের প্রতি আমাদের বার্তা হচ্ছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে, জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে নাই। আমরা বলছি, আপনাদের(হিন্দুদের) বাংলাদেশ ছেড়ে কোথাও যেতে হবে না। বাংলাদেশ ছাড়তে হলে জামায়াত-শিবিরকে ছাড়তে হবে। ”
সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি এবং জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, “বাংলাদেশে আজ সাম্প্রদায়িক হায়েনারা ফনা তুলেছে। আমরা যে আন্দোলন শুরু করেছিলাম, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে।
আমাদের সেই আন্দোলন সফল না করে আমরা ঘরে ফিরবো না। ”
পরে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা মোড়ে আরেক পথসভায় তিনি বলেন, “জামায়াত-শিবির ধর্মকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে দেশকে দুইভাগে বিভক্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। ধর্মকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে তারা একাত্তরেও মানুষের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে। তারা তখনো সফল হয়নি, এবারও তারা সফল হবে না। ”
স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানান ইমরান।
সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কেউ আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলে তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে প্রত্যাখ্যানের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এলেঙ্গা মোড়ের পথসভায় স্লোগান ধরেন শাহবাগের স্লোগানকন্যা হিসেবে পরিচিত লাকি আক্তার।
স্লোগান দেয়ার পর তিনি বলেন, “আমাদের সংগ্রাম সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। এই সংগ্রামকে সফল করতে হলে আপনারা আপনাদের এলাকাকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত করুন, জামায়াত-শিবির মুক্ত করুন। ”
এর আগে দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা তিন রাস্তার মাথায় এক পথসভায় ইমরান
বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলাকারীরা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের বিরোধিতা করেছে, যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা হিন্দুদের ওপর হায়েনার ছোবল দিয়েছে। রক্তাক্ত করেছে সারা দেশ। নৃশংস তাণ্ডব চালিয়েছে মানুষের উপর। ধর্ষণ করেছে মা-বোনদের।
“এদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে।
আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, হামলাকারীরা এদেশকে পিছিয়ে দিয়ে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চায়। ”
সকালে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে গণজাগরণ মঞ্চ। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় শাহবাগ থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে রোডমার্চ শুরু করে তারা।
পথে আশুলিয়ায় ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনে প্রথম পথসভা এবং কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় দ্বিতীয় পথ সভা হয়।
এরপর টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জে সমাবেশ করেছে তারা। এরপর চান্দাইকোনার (রায়গঞ্জ) পাবনা বাজার এবং শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে পথসভার পর বগুড়া সাতমাথায় জনসমাবেশ করে শেষ হবে প্রথম দিনের কর্মসূচি। রোডমার্চের বহর প্রথম রাত থাকবে বগুড়ায়।
রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে জনসমাবেশের পর ঢাকার পথে ফিরবে রোডমার্চে যোগ দেয়া জাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।
এর আগে গত ১১ ও ১২ জানুয়ারি যশোরের অভয়নগরের মালোপাড়া অভিমুখে রোডমার্চ করে গণজাগরণ মঞ্চ।
রোডমার্চে মোট ছয়টি পথসভা এবং দুটি জনসভায় অংশ নেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।