মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে ১০ ফেব্রুয়ারি। ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা আকতার যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে গতকাল বহুল আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে এ মামলার বিচারকাজ চলছে। মামলার অন্যতম আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আদালতে হাজির ছিলেন। শুনানিতে উপস্থিত হতে সরকারি প্রটোকলের গাড়িতে করে বেলা ১১টার দিকে আদালতে যান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ।
অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি চার আসামির মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত মেজর কাজী এমদাদুল হক ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভঁূইয়াও যুক্তিতর্কের শুনানিতে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুল লতিফ ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসুর রহমান শামসের বিরুদ্ধে এ মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। মামলার পাঁচ আসামিই উচ্চ আদালতের জামিনে রয়েছেন। যুক্তিতর্ক শেষে আদালত বলেন, মঞ্জুর হত্যার ১৪ বছর পর মামলাটি করা হয়। আর মামলার বিচার চলছে ১৯ বছর।
এ ১৯ বছরে ২২ জন বিচারক এ মামলায় দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯ বছরে মামলার কলেবর বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের এ মামলায় রায় দিতে একটু সময় লাগবে। নির্ধারিত প্রথম তারিখেই রায় দেওয়ার চেষ্টা করব। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে হয়তো আরও পাঁচ-সাত দিন লাগতে পারে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান রচি সাংবাদিকদের বলেন, প্রসিকিউশন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
এ মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত। এরশাদের প্রধান আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মামলার এজাহারে এরশাদের নাম ছিল না। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। আর অন্য আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ছিল না। বাদীসহ ২৮ জন সাক্ষীর কেউই এ ঘটনায় এরশাদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সাক্ষ্য দেননি।
প্রসিকিউশন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারেনি।
১৯৮১ সালের ৩০ মে একদল সেনার গুলিতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর পুলিশের হাতে আটক হন জেনারেল মঞ্জুর। পুলিশ হেফাজত থেকে ১ জুন চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নেওয়ার পর তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ১৯৯৫ সালে মঞ্জুরের বড় ভাই আবুল মনসুর আহমেদ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ১৫ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ অভিযোগপত্র দেন।
বিচার শুরু হয় আদালতে। তবে সরকার বদল এবং দফায় দফায় রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনে মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে আসতে কেটে যায় আরও ১৮ বছর। অভিযোগের জবাবে ২০১২ সালের ২ অক্টোবর আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন এরশাদ। তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।