ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নতুন বিচারক আসায় এই মামলার যুক্তি-তর্ক শুনানি নতুন করে হবে বলে মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আসাদুজ্জামান খান রথি।
এ মামলার প্রধান আসামি সাবেক সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, যিনি বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত।
দফায় দফায় পিছিয়ে যাওয়া এ মামলার যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে গত ২২ জানুয়ারি প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা আক্তার রায়ের দিন ঠিক করেছিলেন।
সেদিন মন্ত্রীর প্রটোকল নিয়ে আদালতে হাজির হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। মামলার বাকি চার আসামির মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত মেজর কাজী এমদাদুল হক ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্নেল মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূইয়াও আদালতে ছিলেন।
রায়ের তারিখ ঠিক করার এক সপ্তাহ পর গত ২৯ জানুয়ারি প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হোসনে আরার বদলির আদেশ আসে। তার জায়গায় নতুন বিচারক হিসাবে যোগ দিয়েছেন খন্দকার হাসান মাহমুদ ফিরোজ।
আসাদুজ্জামান রথি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাধারণত বিচারক পরিবর্তন হলে কোনো মামলার রায় দেয়ার ক্ষেত্রে যুক্তি-তর্ক শুনানি আবার হয়। তারপরই নতুন বিচারক রায় দেন। ”
মঞ্জুর হত্যা মামলায় এরশাদসহ পাঁচ আসামিই উচ্চ আদালতের জামিনে রয়েছেন।
বাকি দুই আসামি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুল লতিফ ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্নেল শামসুর রহমান শামসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রমে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে।
১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামে একদল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন জিয়াউর রহমান। ওই ঘটনার পর পুলিশের হাতে আটক হন জেনারেল মঞ্জুর। পুলিশ হেফাজত থেকে ১ জুন চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নেয়ার পর তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
তবে সরকার বদল এবং দফায় দফায় রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনে মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে আসতে লেগে যায় আরো ১৮ বছর।
মামলার শুনানির সময় আত্মপক্ষ সমর্থনে এরশাদ বলেন, জেনারেল মঞ্জুরকে জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দেয়ার জন্য তৎকালীন সরকার রেডিও টিভিতে ৫ লাখ টাকা ঘোষণা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
“ধরা পড়ার পর মেজর মঞ্জুরকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে আনার পথে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে এবং পরে নিরাপত্তা প্রহরীর সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়।
একপর্যায়ে আবুল মঞ্জুর গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। ”
তখনকার স্বরাষ্ট্র সচিব মাহবুবুজ্জামান এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, তখনকার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের নির্দেশে পুলিশ আবুল মঞ্জুরকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে।
২০১২ সালের ২ অক্টোবর নাজিমউদ্দিন রোডের বিশেষ এজলাসে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন করে লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন এরশাদ। মামলার অপর আসামি অবসরপ্রাপ্ত মেজর কাজী এমদাদুল হকও আদালতে লিখিত বক্তব্য দেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দসহ রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৮ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয় এ মামলায়। তখনকার সেনা প্রধান আবু সালেহ মো. নাসিম এবং তৎকালীন মহানগর হাকিম আবুল হাসেমও ছিলেন সাক্ষীদের মধ্যে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।