এক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের জনশক্তির বাজার শক্তিশালী করা ও বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের অংশগ্রহণ বাড়াতে ভূমিকা রাখতে চান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার নিজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে আমার প্রথম ও প্রধান কাজ হবে একটি আধুনিক মুসলিম প্রধান গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুমহান ভাবমূর্তি বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেয়া। বাংলাদেশ এমন একটি মুসলিম প্রধান দেশে যার প্রতিবেশি কোনো মুসলিম দেশ নেই। আমাদের দেশ এগিয়ে চলছে একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে।
“বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির বিশাল বাজার ছিল মধ্যপ্রাচ্যে।
সেই বাজার প্রায় হারিয়ে গেছে। আমার শাসনামলে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত সুদৃঢ় ছিল। সেখানে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্কও কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে ভূমিকা রেখেছে। আমার বিশ্বাস ও আস্থা- সেই সম্পর্ককে আবারো ফিরিয়ে আনতে পারব। তার ফলে জনশক্তির বাজার ফিরে পাব।
”
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্যও মধ্যপ্রাচ্যকে বিবেচনা করা যেতে পারে মন্তব্য করে এরশাদ বলেন, “আমার একান্ত চেষ্টা থাকবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে এফডিআই বৃদ্ধি করা। বিদেশি বিনিয়োগের দিক থেকে আমরা মধ্যপ্রাচ্যকে নির্ধারণ করতে পারি। সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য বিশেষ ইপিজেড প্রতিষ্ঠার জন্য আমার প্রস্তাব থাকবে। ”
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে বারবার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করা সাবেক এই সামরিক একনায়ক গত ১২ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিএমএইচে ভর্তি হন।
সিএমএইচে থাকা অবস্থাতেই নির্বাচনে তিনি রংপুর-১ আসনে জয়ী হন।
এরপর মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হন এরশাদ। ওই দিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি।
বিশেষ দূত করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এরশাদ বলেন, এর বিপরীতে ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধা তিনি চান না।
“আমি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়ে নিজে কোন সুযোগ-সুবিধা চাচ্ছি না। আমার সরকারি গাড়ি-বাড়িরও প্রয়োজন নেই।
একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমার যেটুকু সুযোগ সুবিধা প্রাপ্য সেটুকু ভোগ করেই আমি বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালন করতে চাই। অতীতের সব গ্লানি ভুলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে তার সহযাত্রীরূপে সাথে নিয়েছেন- আমি তার মর্যাদা রক্ষা করতে সদা সচেষ্ট থাকব। ”
এরশাদ বলেন, “বিগত দিনের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে মুছে ফেলে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর একটি গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছেন। ”
এর আগে একাধিক দলীয় কর্মসূচিতে দেশের রাজনৈতিক সংকটের জন্য মহাজোট সরকারকে দায়ী করা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বিবৃতিতে নিজের অতীতের অবস্থান থেকে সরে এসে বলেন, “রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশের ভাবমূর্তির বিরাট ক্ষতি হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে ব্যাপক অগ্রগতি ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরেও রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য জনগণের মধ্যে চরম হতাশার সৃষ্টি হয়।
আমার বিশ্বাস অচিরেই সেই হতাশা কেটে যাবে। ”
রাজনৈতিক সংঘাতে বিশ্বের সামনে দেশের ইমেজ ক্ষুন্ন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কিছু পশ্চিমা মিডিয়া বাংলাদেশের নেতিবাচক বিষয়ের ওপর অধিকতর আলোকপাত করে আমাদের ইমেজ ক্ষুন্ন করেছে। কোন কোন মহল বাংলাদেশ জঙ্গী রাষ্ট্র হয়ে যাচ্ছে বলেও অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে যা কখনোই এ দেশে হবে না। অপপ্রচারের কবলে পড়েও দেশের ভাবমূর্তি অনেক ক্ষুন্ন হয়েছে। ”
এরশাদ বলেন,“আমি সৈনিক হিসেবে দেশের স্বার্থে সবসময় যুদ্ধ করতে প্রস্তুত ছিলাম।
এবং এখনো দেশের অর্থনৈতিক ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে আমার দায়িত্ব পালন করে যেতে পারব। আমি জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছি। এখন আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং মঙ্গল সাধনই আমার জীবনের একান্ত কাম্য ও লক্ষ্য। ”
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।