বিশ্ব ইজতেমা মুসলমানদের একটা বড় জমায়েত। শীতকালে এবং খোলা মাঠে ইজতেমা হওয়ার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি কিছুটা বেশি। এ ছাড়া রয়েছে সংক্রামক রোগের ঝুঁকির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মেনিনগোক্কাল মেনিনজাইটিস বা মেনিনগোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত ইনফেকশনের বিষয়টিকেও বেশ সতর্কতার সঙ্গে দেখা উচিত বলে মত দিয়েছেন গবেষকরা। অন্যান্য ইনফেকশনের মধ্যে শেভ বা ক্ষৌরকর্ম করার প্রাক্কালে এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং সি এর ঝুঁকিরও কথা মনে রাখা উচিত।
তবে এসব স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রায় সবই প্রতিরোধ করা কিংবা এড়ানো সম্ভব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে। প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতামূলক সাধারণ ব্যবস্থাগুলো হলো_ অদম্য আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ইজতেমার উদ্দেশে যাত্রা করার প্রাক্কালে একজন মুসলি্লর কাছে কোনো কিছুকেই আর বাধা মনে হয় না। এই মানসিকতার বশবর্তী হয়ে অনেকে অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়েন। যার ফলে দেখা যায়, যাত্রার আগেই ক্যাম্পে তিনি পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ছেন। এটা কখনোই কাম্য নয়।
তাই শুরুতেই শক্তি সঞ্চয়ের জন্য ধীরস্থির থাকতে হবে। অহেতুক ছোটাছুটি এখানে কাম্য নয়। * পানি স্বল্পতাজনিত ঝুঁকি এড়াতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। রাতে ভ্রমণ করতে হবে। কিছুটা লবণাক্ত খাবার এ সময়ে দরকার হয়, ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া লবণের ঘাটতি মেটানার জন্য।
* শরীরের পানিস্বল্পতা এড়াতে সঙ্গে বিশুদ্ধ খাবার পানি রাখতে হবে। অতিরিক্ত ঘামের কারণে সৃষ্ট শারীরিক অবসাদ কাটাতে খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা যেতে পারে। * বেশির ভাগ মুসলি্ল গলাব্যথা, কাশি, ঘনঘন হাঁচি, সর্দি এবং জ্বরে ভুগে থাকেন। হঠাৎ পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য এমনটি হয়ে থাকে। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সাধারণ কিছু ওষুধপত্র যেমন_ ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল, হাঁচি-সর্দির জন্য ফেঙ্ােফেনাডিন জাতীয় ওষুধ (ট্যাবলেট ফেনাডিন/ ফিঙ্াল/ ফেঙ্াে), কাশির জন্য এডোভাস সিরাপ কিংবা সিনেকড ট্যাবলেট গ্রহণ করা যেতে পারে।
এগুলো অল্প করে সঙ্গে নিয়ে যাওয়াই ভালো। * ইজতেমার উদ্দেশে বের হওয়ার পর থেকে মাল্টিভিটামিন (ফিলওয়েল গোল্ড/ সিলভার) গ্রহণ করা উচিত। কারণ এই দিনগুলোতে সুষম খাবারের অভাব দেখা দিতে পারে। সেই ঘাটতি পূরণে প্রতিদিনই মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উচিত।
* যদি কারও অ্যাজমা-হাঁপানি থাকে তখন অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে পথে কীভাবে চলতে হবে সে বিষয়ে সম্যক ধারণা ও প্রস্তুতি থাকতে হবে।
সঙ্গে রাখতে হবে হাঁপানির প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো।
* মসজিদে বা অন্য কোথাও চলা ফেরার সময় কড়া সুগন্ধি ব্যবহার করা উচিত হবে না। কারণ সুগন্ধি হাঁপানি এবং বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা মাইগ্রেনের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয় বলে মনে করা হয়।
* এ সময় অনেক হাঁটতে হয়। কাজেই দেশ থাকতেই হাঁটার প্রস্তুতি নিতে হবে।
হঠাৎ অতিরিক্ত হাঁটার কারণে পায়ের মাংসপেশিতে খিল ধরতে পারে কিংবা কিছুটা ব্যথা হতে পারে। * এ সময় ভিড়ের মধ্যে একজন থেকে অন্যজনের দূরত্ব কম থাকে। এত কাছাকাছি অবস্থানের কারণে যে কোনো সংক্রামক রোগ খুব সহজেই একজন থেকে অন্যজনে ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে। কাজেই ঝুঁকি এড়াতে হোটেল বা অবস্থানস্থল থেকে বের হওয়ার সময় মুখে মাস্ক বা মুখোশ পরা যেতে পারে। * যারা চশমা ব্যবহার করেন, অতিরিক্ত একজোড়া বাড়তি চশমা তাদের সঙ্গে নেওয়া উচিত।
* ইজতেমায় সবাই একসঙ্গে বসবাস করেন। এ সময় ব্যক্তিগত বদঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করার চেষ্টা করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।