আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না ঋণখেল

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঋণখেলাপিরা অংশ নিতে পারবেন না। এ জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রার্থীদের ব্যাংক ঋণ-সংক্রান্ত খেলাপি তথ্য-সংশ্লিষ্ট এলাকার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সংকলন ও সরবরাহ করতে ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে। পরিপত্রের কপি সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বরাবরে পাঠানো হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার আহমেদ স্বাক্ষরিত জারি করা পরিপত্রে বলা হয়, 'ব্যাংক কোম্পানি আইন দ্বারা সংজ্ঞায়িত দেনাদার হিসেবে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩-এর আওতায় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সংজ্ঞায়িত দেনাদার, কোম্পানির পরিচালক হিসেবে, ফার্মের অংশীদার হিসেবে কিংবা অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ দ্বারা সংজ্ঞায়িত কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিচালক হিসেবে কোনো ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণের অর্থ বা ওই ঋণের কিস্তি পরিশোধে খেলাপি হয়ে থাকলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হতে অযোগ্য হবেন।'

পরিপত্রে আরও বলা হয়, 'উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী কোনো প্রার্থী (যে কোনো পদের) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে যদি কোনো ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত কোনো ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ি রাখেন তিনি নির্বাচনের যোগ্য হবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত নিজস্ব বসবাসের জন্য গৃহনির্মাণ অথবা ক্ষুদ্র কৃষিঋণ এর আওতাভুক্ত হবে না।' আরও বলা হয়, যদি একইভাবে কোনো প্রার্থী এমন কোনো কোম্পানির পরিচালক বা ফার্মের অংশীদার হন যার কোনো ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত কোনো ঋণ বা তার কোনো কিস্তি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে পরিশোধে খেলাপি হয়েছে, তাহলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন কিংবা তার আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে সরবরাহ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শাখা ব্যবস্থাপক/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এ সংক্রান্ত আইন ও তার ব্যাখ্যা অনুসারে সব হিসাব হালনাগাদ করে খেলাপি ঋণ গ্রহীতাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তৃতীয় ধাপের তফসিল, ভোটগ্রহণ ১৫ মার্চ : ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন। ১৫ মার্চ তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ হতে পারে। আইনি বাধ্যবাধকতার কারণেই দ্রুতার সঙ্গে ইসি এসব নির্বাচনের তফসিল দিচ্ছে। ইসি সূত্র জানিয়েছে, ৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষকর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইসি। আর বৈঠক শেষ করে বিকালেই তফসিল দেওয়া হতে পারে।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রণালয় তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণের জন্য ১৫ মার্চ (৭৪ উপজেলা), ৪র্থ ২৫ মার্চ (৭২ উপজেলা), ৫ম ৩১ মার্চ (৬৫ উপজেলা) ও ৬ষ্ঠ ধাপের ৩ মে (৫৭ উপজেলায়) ভোটগ্রহণের প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত তারিখে সম্মতি দিয়েছে। সেই অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল দিচ্ছে ইসি। অন্যদিকে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করে ২৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৫২ জেলার ১১৭ উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২ ফেব্রুয়ারি। যাচাই-বাছাই ৪ ফেব্রুয়ারি ও প্রত্যাহারের শেষ দিন ১১ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে প্রথম ধাপে ৪০ জেলার ৯৮টি উপজেলায় ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। এদিকে উপজেলা নির্বাচনেও মাঠে থাকছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। উপজেলা সদরে অবস্থান করবেন তারা। তবে উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার কোনো আশঙ্কা করছে না গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। ইসির কর্মকর্তারা জানান, ইসির চাহিদা অনুযায়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে। ভোটগ্রহণের আগে ও পরে পাঁচ দিনের জন্য (যাতায়াত সময় ছাড়া) সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা ও নৌ) সদস্য মোতায়েন করা হতে পারে। তবে ইসির পরবর্তী বৈঠকে অবস্থানের সময়সীমা চূড়ান্ত করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় উপজেলা পর্যায়ে অবস্থান করে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি, কোস্টগার্ড, র্যাব ও পুলিশ সদস্য মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘটে যাওয়া ব্যাপক সহিংসতা ও সংঘাতের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে কমিশন। নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে একযোগে সব উপজেলায় নির্বাচন হয়েছিল। এবার ছয় ধাপে ৪৮৭ উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে মোতায়েন করা হবে অতিরিক্ত পুলিশ, অঙ্গীভূত আনসার ও গ্রাম পুলিশ। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৪ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়াও উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে এবং বিশেষ এলাকাগুলোতে (পার্বত্য এলাকা, দ্বীপাঞ্চল ও হাওর) সাধারণ কেন্দ্রে পুলিশ, অঙ্গীভূত আনসার ও চৌকিদার-দফাদারসহ ১৭ জন ফোর্স দায়িত্ব পালন করবেন।

দ্বিতীয় ধাপের ভোট কেন্দ্র চূড়ান্ত : চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ৫২ জেলার ১১৭টি উপজেলার ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপের ধারাবাহিকতায় এ তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী এ তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। তালিকা অনুযায়ী ১১৭ উপজেলায় ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা আট হাজার ১৪৫টি। ভোট কক্ষ সংখ্যা ৫১ হাজার ৫৮৭টি। ভোটার তালিকা অনুযায়ী ১১৭টি উপজেলায় ভোটার সংখ্যা এক কোটি ৯৮ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৭ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯০৫ জন। মহিলা ভোটার ৯৯ লাখ ১৪ হাজার ১৯২ জন।

২৩ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে ২৭ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই ৪ ফেব্রুয়ারি এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১১ ফেব্রুয়ারি। প্রসঙ্গত, প্রথম ধাপে ৯৮টি উপজেলার মধ্যে ১৯ ফেব্রুয়ারি ৯৭টি উপজেলায় এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

৬ ফেব্রুয়ারি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ইসির বৈঠক : উপজেলা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বেলা ১১টায় এ বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্র মতে, উপজেলা নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করা এবং ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করবে নির্বাচন কমিশন। সেই অনুযায়ী কমিশন থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে কমিশন। গতকাল এ চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যান্য নির্বাচনের প্রস্তুতির ন্যায় জেলা প্রশাসক (সকল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার, ডিজিএফআই, এনএসআই, কোস্টগার্ডের প্রতিনিধি ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.