[পূর্ব প্রকাশের পর]
ভাবসম্প্র্রসারণ : ১০ নম্বর
১. প্রদত্ত পদ্যাংশ বা গদ্যাংশটুকু ভালোভাবে পাঠ করতে হবে। পাঠ করার সঙ্গে সঙ্গেই লেখা আরম্ভ না করে উদ্ধৃতির অন্তর্নিহিত ভাবটি বুঝে নিতে হবে।
২.কাব্যাংশের ক্ষেত্রে উদ্ধৃতিতে ব্যবহৃত শব্দসমূহের প্রকৃত অর্থ, প্রতীকী অর্থ এবং এর প্রয়োগ কৌশল অনুধাবন করতে হবে।
৩.কোনো উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা ব্যবহৃত হলে মূল ভাবটি প্রচ্ছন্ন হয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে এসবের মর্ম উদ্ধার করে মূল ভাবটি বিশেষণ করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। দুই-চার লাইনের মধ্যে মূল ভাবটি শেষ করলে ভালো হয়।
৪.মূল ভাবসত্যের বিশেষণ বিস্তৃতভাবে করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভাবের বিন্দুকে সিন্ধুতে পরিণত করতে হবে।
৫.একটি আকর্ষণীয় কিছু শুদ্ধ, সংহত কিন্তু ক্রিয়াপদ বর্জিত বাক্য দিয়ে ভাবসম্প্রসারণটি আরম্ভ করতে হবে।
৬. মূল ভাবসম্প্রসারণের সময় এবং তা সর্বজনীনরূপে উল্লেখকালে প্রয়োজনানুসারে ঐতিহাসিক, পৌরাণিক ও বৈজ্ঞানিক তথ্য-সমাবেশ করতে হবে। দরকার মতো মূল বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উপমা বা উদ্ধৃতির ব্যবহার করা যেতে পারে; তবে অন্য কোনো ভাষায় উদ্ধৃতি দিতে চাইলে তা বাংলায় অনুবাদ করতে হবে।
৭. ভাবসম্প্রসারণে প্রয়োজন অনুসারে এবং প্রাসঙ্গিকভাবে মহৎ আদর্শ, অনুসরণীয় বৈশিষ্ট্য, মানবতা, বিশ্বশান্তি ও যুদ্ধ বিরোধিতা, ধর্মীয় ও আত্দিক প্রশান্তি ইত্যাদি থাকতে হবে। শুধু মনীষীদের নাম উল্লেখ না করে তাদের জীবনের প্রায়োগিক দিক তুলে ধরতে হবে।
৮. তিনটি/চারটি অনুচ্ছেদ বা প্যারাতে ভাবসম্প্রসারণ করা উত্তম। এর মধ্যে সর্বশেষ অনুচ্ছেদটি হবে সংক্ষিপ্ত ও উপসংহারসূচক। মন্তব্যে নিজস্ব মতামত থাকতে হবে।
যা করা যাবে না :
১. উদ্ধৃতাংশের লেখকের নাম জানা থাকলেও তা উল্লেখ করা যাবে না।
২. ব্যাখ্যা লেখার মতো কবি বলেছেন বা 'লেখক বলেছেন' বা এই 'বাক্যে বলা হয়েছে_ ' ইত্যাদি নির্দিষ্টসূচক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না।
৩.কোনো বিশেষ শব্দের পৃথক টীকা-টিপ্পনী বা ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
৪. ভাবসম্প্রসারণকে সারাংশের মতো আয়তনে ছোট এবং প্রবন্ধের মতো অতি দীর্ঘ করা যাবে না।
৫. ভাবসম্প্রসারণের কৃত অনুচ্ছেদগুলোর ঝঁন-যবধফরহম বা উপ-শিরোনাম (মূলভাব, সম্প্রসারিত ভাব, মন্তব্য) দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
৬. উদ্ধৃতাংশে যে ভাব-ভ্রুণ থাকবে তার বিরুদ্ধেও বলা যাবে না। যেমন : 'হে দারিদ্র, তুমি মোরে করেছ মহান/তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রিস্টের সম্মান।' এ কবিতাংশে দারিদ্র্যের গুণকীর্তন করা হয়েছে। বলা যাবে না, এখানে উল্লেখ করা হলেও আসলে দারিদ্র্য মানুষকে মহান করে না, মানসিকভাবে দুর্বল করে। মূলভাবে বিরোধী এমন বাক্য লিখলে ভাবসম্প্রসারণে কোনো নম্বর পাওয়া যাবে না।
৭. দীর্ঘ উদ্ধৃতি বা বহু উদ্ধৃতি উভয়ই পরিত্যাজ্য।
৮. প্রাসঙ্গিক কোনো লেখকের বা মনীষীর উদ্ধৃতি তুলে ধরতে চাইলে তাদের কথাগুলো ছাড়া ছাড়া করে নিজের ভাষায় লেখা যাবে না। অর্থাৎ উদ্ধৃতিতে যেসব বাক্য আছে তা হুবহু লিখতে হবে; অন্যথায় নম্বর কমে যাবে।
৯. কোনো বাক্যে বিরাম চিহ্ন ভুল লেখা যাবে না। যেমন : যেখানে দাঁড়ি (।) হবে সেখানে প্রশ্নবোধক (?) বা বিস্ময় সূচক (!) চিহ্ন দেওয়া যাবে না। উদ্ধৃতি তুলে ধরার সময় বাক্যের শুরু ও শেষে উদ্ধৃতি চিহ্ন "_") না দিলে উদ্ধৃতিই হবে না।
প্রবন্ধ রচনা : ২০ নম্বর
১. প্রবন্ধের বিষয় অনুযায়ী যুক্তি, মনন, তথ্য বা তত্ত্বের পরিমাণ নির্ণীত হয়। পরিমাণতিরিক্ত বাহুল্য উৎকৃষ্ট রচনার পরিপন্থী।
২. প্রবন্ধ লেখার দক্ষতা অর্জনের জন্যে প্রচুর প্রবন্ধ পড়তে হয়। এ জন্য পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ, সংবাদ, প্রতিবেদন, ভাষণ ইত্যাদি নিয়মিত পাঠ করলে নানা প্রসঙ্গে বিষয়গত ধারণা ও শব্দভাণ্ডার বাড়ে। ফলে সহজেই কোনো বিষয়ে প্রবন্ধ লেখা যায়। ৩. প্রবন্ধের বক্তব্য বাস্তব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এবং যৌক্তিক পরম্পরায় উপস্থাপিত ও সনি্নবেশিত হওয়া উচিত যেন তা স্পষ্ট সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ায় সহায়ক হয়।
৪. সাধু ও চলিতের মধ্যে যে কোনো একটি নির্বাচন করতে হয়। ভাষারীতি বিষয়ানুগ হওয়াই বাঞ্ছনীয়। আধুনিক বাংলায় যেহেতু চলিত রীতিরই জয়জয়কার, সে জন্য চলিত রীতি অবলম্বন করে প্রবন্ধ লেখার চর্চা করা ভালো। ৫. প্রবন্ধে যুক্তি প্রদর্শন কিংবা প্রমাণ প্রতিষ্ঠার জন্যে অন্য রচনা থেকে উদ্ধৃতির অবকাশ আছে। তবে সে ক্ষেত্রেও লক্ষ রাখতে হয় প্রয়োজনীয় পরিমাপের দিকে। ঘন ঘন ও বড় বড় উদ্ধৃতি প্রবন্ধের স্বাভাবিক প্রকাশকে ব্যাহত করে।
৬. প্রবন্ধ রচনায় বেশি নম্বর পেতে হলে প্রসঙ্গক্রমে বিভিন্ন কবিতার চরণ দিতে হবে এবং বিভিন্ন তথ্যসূত্র তারিখসহ সাল উল্লেখ করতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।