সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ৩৮ মাস আটক সাত বাংলাদেশি নাবিককে আগামী এক মাসের মধ্যে মুক্তিপণের বিনিময়ে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাষ্ট্র বা সরকারের পক্ষ থেকে মুক্তিপণ দেওয়া নিঃসন্দেহে কাম্য বিষয় নয়। তবে দেশের সাত নাগরিকের প্রাণ রক্ষার বিষয়টিও এর সঙ্গে জড়িত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেষ পর্যন্ত মানবিকতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জলদস্যুদের হাতে বন্দী সাত বাংলাদেশি নাবিককে দেশে ফিরিয়ে আনার বিকল্প আর কোনো উপায় না থাকায় তাদের উদ্ধারে মুক্তিপণের ব্যবস্থা করেছে সরকার। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলদস্যুদের দাবি করা ছয় লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ রাষ্ট্রের তিনটি তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে বন্দী নাবিকদের উদ্ধারের প্রস্তাবে অনুমোদনও দিয়েছেন। মুক্তিপণের টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত না হওয়ায় ভিন্ন চ্যানেলে পাঠানো হবে। এ ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিকভাবে সহায়তা করছে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক অফিস ইউএনওডিসি এবং লন্ডনভিত্তিক মেরিটাইম পাইরেসি অ্যান্ড হিউমেনিটারিয়ান রেসপন্স প্রোগ্রাম (এমপিএইচআরপি)। এর আগে ২০১২ সালে জাহান মণি নামের বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজ মুক্তিপণ দিয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। সেই মুক্তিপণের টাকা জোগান দিয়েছিল জাহাজের মালিকপক্ষ। সরকারের প্রত্যক্ষ চাপ ও সহযোগিতার কারণেই জাহান মণির নাবিকদের উদ্ধারে মালিকপক্ষ এগিয়ে আসে। জলদস্যুদের দাবিকৃত ছয় লাখ মার্কিন ডলার প্রধানমন্ত্রীর জাকাত তহবিল, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার ফান্ড, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের ঋণ স্কিম ও সমুদ্রগামী জাহাজ মালিক সমিতির তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হচ্ছে। বন্দী নাবিকদের উদ্ধারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে পরবর্তী কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ২৬ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আলবেদো থেকে অন্য দেশের নাগরিকসহ সাত বাংলাদেশি নাবিককে অপহরণ করা হয়। সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে বন্দী বাংলাদেশী নাগরিকদের উদ্ধারে সরকার মানবিকতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা প্রশংসাযোগ্য। দেশের নাগরিকদের জানমালের হেফাজত যে কোনো সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়াই উচিত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।