মানুষের দু’টা অংশ শরীর এবং মন। মন অনেক কষ্ট সহ্য করতে পারে। শরীর কেন পারে না? শরীরের বয়স বাড়ে। মনের বাড়ে না। জড়া শরীরকে গ্রাস করতে পারে।
মনকে পারে না। শরীরের মৃত্যু আছে, মনের কি অবস্থা? যে মন জড়াকে জয় করতে পারে সে নিশ্চয়ই মৃত্যুকেও জয় করতে পারে। এই জাতীয় দার্শনিক চিন্তা করতে করতে রাস্তায় হাঁটছি।
রাস্তায় প্রচুর মানুষ। তাদের ব্যস্ততাও দেখার মত।
রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে বসে যে চা খাচ্ছে সেও ব্যস্ত। স্থির হয়ে চা খাচ্ছে না, সারাক্ষন এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে। কেউই থেমে নেই। সবাই ব্যস্ত।
হাঁটতে হাঁটতে কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি ফুটপাতের সামনে রাস্তায় অনেক লোক ভিড় করে আছে।
এতো লোক যে তিন লেনের রাস্তার দুই লেনই দখল হয়ে আছে। একটি লেন ফাঁকা আছে তাতে রিক্সা-গাড়ি যাচ্ছে খুব কষ্ট করে।
কি হচ্ছে সেখানে? এতো লোক ভিড় করে দেখছে? নিশ্চয়ই জাদু বা সাপের খেলা দেখাচ্ছে অথবা ইন্টারেস্টিং কোন কিছু তো নিশ্চয়ই হবেই।
বাঙালী জাতি খুব কৌতূহলী জাতি। কেনও যেন এই জাতিটার ধৈর্যশক্তি ও কিছু জানার আগ্রহও ব্যাপক।
তবে সবার ভিতরে এইসব গুণ গুলো সমানভাবে আছে কিনা জানিনা। জন্মগত কারনে আমিও এই জাতির মধ্যেই পরে গেছি। তাই কিছুটা গুণ আমার মধ্যেও আছে। কৌতূহল ব্যাপারটাও আছে। তো এতো ভিড় কিজন্যে কৌতূহলবশত সেটা দেখার জন্য এগিয়ে গেলাম।
অসম্ভব রকমের ভিড় ঠেলে ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুর কাছাকাছি গিয়ে যা দেখলাম এতে আমার ভিতরে ‘কেউ আমারে মাইরালা’ টাইপের অনুভূতি নিয়ে ভিড় ঠেলে বের হয়ে আসলাম।
ঘটনা হল ওই রাস্তার ওই জায়গাটায় দু’দিন ধরে একটি ম্যানহোল ছিলনা। আজ ৩-৪ জন মিস্ত্রী নতুন একটি ম্যানহোল সেখানে লাগাচ্ছে। আর এই ম্যানহোল লাগানোর নিদারুণ শিল্পকর্ম মানুষ ধৈর্য সহকারে দাড়িয়ে দাড়িয়ে উপভোগ করছে। যার জন্য তিন লেনের রাস্তা সংকুচিত হয়ে এক লেনে রূপান্তরিত হয়েছে।
......
আমরা যেই সময়টা রাস্তায় ম্যানহোল লাগানো দেখতে দেই সেটা যদি আমরা একটা ভালো কাজে দিতে পারি তাইলে দেশটা অনেক এগিয়ে যেত।
আমি মনে করি আমাদের ব্যাক্তিগত উন্নয়নই দেশের উন্নয়ন করতে পারে। আমরা যদি ব্যাক্তিগতভাবে উন্নত হই তাহলে দেশটাকে আমরা উন্নতির দিকে এগিয়ে নিতে পারবো। আর যদি সেটা না হই তাহলে তো আমাদেরও কিছু হল না দেশেরও কিছু হল না। আজীবন অন্য দেশের দয়ার জন্য হাত পেতে বসে থাকতে হবে।
কে কবে অর্থ দান করবে আর তা দিয়ে একটা রাস্তা সংস্কার করা হবে, ব্রিজ তৈরি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আর তারা তো আর এমনি এমনি টাকা দেয়না, বিনিময়ে কিছু একটা তাদের দিতে হয়।
তবে এমন একটা দিন কবে আসবে যেদিন দেশের বেকারত্ব থাকবে না আর সবাই কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকবে সেটা একমাত্র আল্লাহ্ই জানেন। তবে আমাদেরও তো কিছু করতে হবে। আল্লাহ্ তো আর এমনি এমনি আমাদের দিন বদলে দিবে না, তার জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে।
ভালো কিছু করার চেষ্টা। বদলে যাবার মত কিছু করার চেষ্টা।
ফেসবুকে আমার পোস্ট পেতে ফলো করুন মাইদুল ইসলাম লিপু।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।