আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার নামে প্রচারিত অডিও বার্তায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হয়ে যারা গণহত্যা, লুটপাট ও নারী ধর্ষণ চালিয়েছে তাদের বিচার সম্পর্কেও বিষোদগার করা হয়েছে জঙ্গিদের ওই ভিডিও বার্তায়। 'বাংলাদেশ : ম্যাসাকার বিহাইন্ড এ ওয়াল অব সাইলেন্স' শিরোনামের ২৮ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের দুটি অডিও বার্তায় গত বছরের ৫ মে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ এবং ওই দিন রাতে তাদের স্থান ত্যাগে বাধ্য করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচালিত অভিযানের কিছু আলোকচিত্র দেখানো হয়। অডিও বার্তায় বাংলাদেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে কথিত ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদাপ্রধান আইমান আল-জাওয়াহিরির নামে ইন্টারনেটে অডিও বার্তাটি প্রচারিত হলেও নিরপেক্ষ কোনো সূত্রে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি আসলেই এটি আল-কায়েদা পরিবেশিত কিনা? গত বছরের ৫ মে'র হেফাজতি কাণ্ডের সূত্র ধরে বাংলাদেশ সরকারকে ইসলামবিরোধী ও ধর্মনিরপেক্ষ বলে অভিহিত করে। জিহাদের ডাক দেওয়া হলেও হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আল-কায়েদা সংগঠনটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সৃষ্টি। তারা অডিও বার্তাকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন। অডিও বার্তায় মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘাতক-দালাল ও নারী ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তদের 'ইসলামিক স্কলার' বা আলেম বলে অভিহিত করে কার্যত ইসলামের ভাবমূর্তির প্রতিই আঘাত হানা হয়েছে। ইসলামে বিচারবহিভর্ূত হত্যাকে অনুমোদন করা হয় না। ব্যভিচারের বিরুদ্ধে ইসলামের আপসহীন অবস্থানও সুবিদিত। মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ইসলামিক স্কলার বলে অভিহিত করে ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টিতে মদদ জোগানো হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাদের বিচার হচ্ছে হক্কানি আলেমদের সিংহভাগ তাদের বিপথগামী বলে ভাবেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে প্রশ্ন সৃষ্টিকারী দুটি অডিও বার্তার সঙ্গে কারা জড়িত এ ব্যাপারে তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের সম্মুখীন করাও সরকারের দায়িত্ব বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। আমরা আশা করব আলেম সমাজ দেশপ্রেমসুলভ ইমানী দায়িত্ব পালনে অডিও বার্তার কুৎসিত বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান ও ধিক্কার জানাবেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।