উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে ধারাবাহিক ভালো করার প্রবণতায় ছন্দপতন ঘটেছে। চলতি বছর পাসের হার ৭৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। গত বছর ছিল ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৮ হাজার ১৯৭ জন। গতবার এ কৃতিত্বের অধিকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬১ হাজার ১৬২ জন। চলতি বছর একাধিক কারণে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ বছর হরতালের রাজনীতির নির্দয় শিকারে পরিণত হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। একের পর এক হরতালে তাদের পরীক্ষার কর্মসূচি পাল্টে যায়। প্রস্তুতি নিয়েও পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় মানসিক চাপের মুখে পড়েছে তারা। স্মর্তব্য, এবারের এইচএসসিতে ৪১টি বিষয়ে পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। একদিকে পরীক্ষা চলছে অন্যদিকে বোমা ফুটছে এমন অবস্থার মধ্যেও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। ফলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হয়েছে পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার ফলাফলে তার প্রভাব পড়েছে। এর পাশাপাশি সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতির আওতা বৃদ্ধি ফলাফল বিপর্যয়ে কম-বেশি ভূমিকা রেখেছে। গত বছর যেখানে একটি বিষয়ে সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে সেখানে এবার করা হয়েছে ৭টি বিষয়ে। সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার মান বৃদ্ধির নানামুখী প্রয়াস চালানো সত্ত্বেও চলতি বছর ৭ হাজার ৬৫৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টিতে কেউ পাস করেনি। নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলেও সেগুলোতে আদৌ পড়াশোনা হয় কিনা সংশয় রয়েছে। তবে পড়াশোনা না হলেও শিক্ষকদের বেতন বাবদ সরকারি অর্থের অপচয় ঠিকই হচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস, পাস না করা ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু নয়, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাসের হার শতকরা ৫০ ভাগের কম সেগুলোর দিকেও সরকারের নজর রাখা উচিত। এ ধরনের মানহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি অর্থ ব্যয়ের যৌক্তিকতা সম্পর্কে ভেবে দেখা উচিত। চলতি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় এক-চতুর্থাংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়া সত্যিকার অর্থেই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। মাধ্যমিক পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছিল তারা কেন উচ্চ মাধ্যমিকে সে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি সে বিষয়টি বিবেচনায় আসা উচিত। এ ব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো গাফিলতি আছে কিনা তাও মূল্যায়নের দাবি রাখে। শিক্ষা জাতীয় অগ্রগতির চাবিকাঠি। আজকের দুনিয়ায় এগিয়ে যেতে হলে আমাদের অবশ্যই সুশিক্ষিত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলা থাকা উচিত নয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।