সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আ ফ ম রুহুল হক দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের অনুসন্ধান দলকে বলেছেন, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় স্ত্রীর সম্পদের হিসাব 'অসাবধানতাবশত' ভুল দেওয়া হয়েছে। গতকাল জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদকে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। দুদকের অনুসন্ধান কর্মকতা ও উপপরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
ডা. রুহুল হক বলেন, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় হলফনামা পূরণের ক্ষেত্রে অসাবধানতাবশত এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে আমার স্ত্রীর সম্পদ ৪৫ লাখ ১৭ হাজার ৯৯২ টাকার স্থলে ৭ কোটি ৯৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা লেখা হয়েছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের মাধ্যমে জানিয়েছি।
তিনি বলেন, হলফনামায় অনিচ্ছাকৃত ও ভুলবশত এসব তথ্য দেওয়ার পর আমি জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে এফিডেভিটের মাধ্যমে সংশোধনীর আবেদন করি। নির্বাচন কমিশন আমার আবেদন গ্রহণ করেছে। হলফনামায় এত বড় ভুল কীভাবে হলো? পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদের মালিকই বা কীভাবে হলো তার পরিবার? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, আমি যা বলার দুদককের অনুসন্ধান দলের সদস্যদের কাছে বলেছি। আর বেশি কিছু বলতে পারব না।
দুদক সূত্র জানায়, ডা. রুহুল হক ও তার স্ত্রীর গাড়ি, বাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে সংস্থাটি।
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, আ ফ ম রুহুল হকের ব্যাংক হিসাব গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ১০ গুণ। ব্যাংক হিসাবের বেশির ভাগ তার স্ত্রী ইলা হকের নামে। পাঁচ বছর আগে নির্বাচনী মাঠে নামার সময় রুহুল হক এবং তার স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকা ছিল ৯২ লাখ ৩৬ হাজার ১০৮ টাকা। এখন তাদের ব্যাংক ব্যালেন্সের পরিমাণ ১০ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৩ টাকা। ২০০৮ সালে স্ত্রী ইলা হকের নামে ব্যাংক ব্যালেন্স ছিল মাত্র চার লাখ ৬৪ হাজার ৩০ টাকা।
এখন সাত কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা। এক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার প্রায় ১৬৫ গুণ। অন্যদিকে রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালেন্স ২০০৮ সালে ছিল প্রায় ৮৮ লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে প্রায় দুই কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামা অনুসারে, সামগ্রিকভাবে ২০০৮ সালের তুলনায় তার অস্থাবর সম্পদ ৪ গুণ বেড়েছে।
২০০৮ সালে তিনি এবং তার স্ত্রীর মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি টাকার কিছু বেশি। ২০১৩ সালে সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১০ কোটি টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে রাখা আছে। এককভাবে তার স্ত্রী ইলা হকের সম্পদের পরিমাণ বেড়ে গেছে ৮ গুণ। আগে তার নামে অস্থাবর সম্পত্তি ছিল মোট ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের।
এখন তা ৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।
বদির পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস : পরিবারসহ নিজের আয়ের উৎস ও সম্পদ বিবরণী জমা দিতে কঙ্বাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে নোটিস দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সাত কার্য দিবসের মধ্যে এ বিবরণী জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল দুদকের নিয়মিত বৈঠকে বদির বিরুদ্ধে নোটিস পাঠানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। গতকাল বিশেষ বাহক মারফত এই নোটিস তার নিজস্ব ঠিকানায় পাঠানো হয়।
এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া ও হলফনামায় প্রদত্ত সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল দুদক। তখন অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংসদ পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন এমপি বদি।
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া বদির হলফনামার তথ্য অনুসারে, জীবনে প্রথম সংসদ সদস্য হওয়ার পর পাঁচ বছরে তার আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ। আর নিট সম্পদ বেড়েছে ১৯ গুণেরও বেশি। হলফনামায় বদি শুধু আয়কর বিবরণীতে প্রদর্শিত অর্থ ও সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন।
হলফনামা অনুসারে এমপি বদির বার্ষিক আয় ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা। আর বার্ষিক ব্যয় ২ কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৮ টাকা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।