আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দীপু মনি ও আজাদের বিপর্যয় যে কারণে

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পরাজয় ও ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে ঢাকায় ফিরলেন আওয়ামী লীগের সাবেক দুই প্রভাবশালী মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও ডা. দীপু মনি। তাদের দুজনের দুই প্রার্থীই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে শোচনীয়ভাবে হেরে গেছেন। স্থানীয়ভাবে আলোচনা হচ্ছে, মন্ত্রীদের এলাকার ভোটাররা তাদের জনবিচ্ছিন্নতার জবাব দিয়েছেন ব্যালটের মাধ্যমে। সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির ব্যর্থতা ও জনবিচ্ছিন্নতার খেসারত দিতে হলো আওয়ামী লীগের স্থানীয় প্রার্থীদের। জামালপুরে আবুল কালাম আজাদের প্রতি মানুষের ক্ষোভের তীব্রতা এত বেশি যে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রীর নিজ কেন্দ্রেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু জাফর ফেল করেছেন, ভোট পেয়েছেন বিএনপি প্রার্থীর চেয়ে অনেক কম। অন্যদিকে চাঁদপুরে ডা. দীপু মনির বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ স্থানীয় ভোটারদের। বিগত পাঁচ বছর কাছে পায়নি তাকে। এমনকি তিনি নির্বাচনের আগেও এলাকায় তেমন একটা যাননি। ভোটের দিন সকালে ভোট দিয়েই ঢাকা চলে যান।

চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইউসুফ গাজী হারার পিছনে স্থানীয় এমপি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির ভূমিকাকে দায়ী করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সামছুল হক ভূইয়া এমপি। তিনি বলেন, প্রার্থীর সঙ্গে স্থানীয় এমপির সহযোগিতা না থাকা ও এমপির পালিত নেতা-কর্মীদের অসহযোগিতায় আমাদের প্রার্থী হেরে গেছেন। এমনকি জেলা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো ভেঙে দেওয়া, দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেছেন অনেকে। স্থানীয় এমপির নামধারী তথাকথিত নেতা-কর্মীদের অসহযোগিতাও এক্ষেত্রে দায়ী। কর্মীরা বলেছেন, ডা. দীপু মনি উপজেলা নির্বাচনের আগে এলাকায় উপস্থিত থাকেননি। দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কোনো সভাসমাবেশও করেননি। শুধু নির্বাচনের দিন এমপি তার নিজ এলাকা রামপুর ইউনিয়নের কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকালে ভোট দিয়ে ঢাকা চলে যান। মন্ত্রী থাকাকালে দলীয় নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে সুবিধাবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিভিন্ন কাজ করাটাও উপজেলায় হারার কারণ। জানা গেছে, ডা. দীপু মনি মন্ত্রী থাকাকালে যাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন, সেই সুবিধাভোগীদের উপজেলা নির্বাচনে কোনো ভূমিকা রাখতে দেখা যায়নি।

অন্যদিকে সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের উন্নয়ন ব্যর্থতার খেসারত দিতে হয়েছে জামালপুরের বকশীগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু জাফরের শোচনীয় পরাজয় হয়।

জানা গেছে, গত ৫ বছরে এই এলাকার এমপি সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের প্রতি মানুষের যে প্রত্যাশা ছিল তার কোনোটাই পূরণ হয়নি। দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দূরে ঠেলে দিয়ে ক্ষমতার ৫ বছরে তিনি তার নিজস্ব লোক দিয়ে করেছেন সব কাজ। টিআর, কাবিখাসহ এলাকায় যা কিছু হয়েছে সবই নিয়ন্ত্রণ করেছে এমপির রাজনৈতিক এপিএস ইসমাইল হোসেনের মাধ্যমে। মন্ত্রী থাকাকালে তার ধারে-কাছে ঘেঁষতে পারেননি দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। ফলে চাপা ক্ষোভ, হতাশা আর ভোটারদের কাছে জবাবদিহিতার ভয়ে উপজেলা নির্বাচনে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঠে নামাতে পারেননি। সাবেক এই মন্ত্রীর নিজস্ব লোকদের তদ্বির ও নিয়োগ বাণিজ্যে শুধু দলীয় নেতা-কর্মী নয় ক্ষুব্ধ হয়েছেন সাধারণ ভোটাররাও। অভিযোগ রয়েছে, টাকার বিনিময়ে মন্ত্রীর নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে বকশীগঞ্জ উপজেলায় ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দফতরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিএনপি-জামায়াত পন্থিদের। মন্ত্রীর কাছের লোকজনের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগও করেছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.