আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাজেটে ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে অর্থ 

সরকারের রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি পড়ায় বাজেট ঘাটতি হু হু করে বাড়ছে। অর্থবছর শেষে এ ঘাটতি ৬৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সরকার। সেই সঙ্গে বৈদেশিক সহায়তা ও ঋণের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ঘাটতির এ চাপকে আরও উসকে দিচ্ছে। ফলে বাজেটের চাহিদা মেটাতে অস্বস্তিতে পড়েছে সরকারের অর্থবিভাগ। নতুন নতুন পরিকল্পনা সেট করেও রাজস্ব আদায় বাড়াতে ব্যর্থ হচ্ছে এনবিআর। এদিকে সরকারও বার বার তাগিদ দিচ্ছে রাজস্ব আয় বাড়াতে। ফলে স্বস্তিতে নেই রাজস্ব বিভাগও। এ আশঙ্কার কথা মাথায় নিয়ে নতুন বাজেটের কাজ শুরু করেছে এনবিআর, অর্থবিভাগ ও পরিকল্পনা কমিশন। এ জন্য আজ অর্থসচিব ফজলে কবীরের সভাপতিত্বে নতুন বাজেটের ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, অর্থ বিভাগের পাঠানো পৃথক চিঠির মাধ্যমে এনবিআরের রাজস্ব বাড়ানো এবং মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সরকারের রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। যা এ যাবৎকালের রেকর্ড ঘাটতি। ফলে বাজেট বাস্তবায়নে বাধার মুখে পড়েছে মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলো। চলতি বাজেট উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, বাজেট ঘাটতি মোট জিডিপির সাড়ে ৪ শতাংশের মধ্যে রাখা হবে। কিন্তু অর্থবছর শেষে তা ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে বাজেটের অর্থায়ন স্বাভাবিক রাখতে বন্ডের বিনিময়ে ব্যাংকগুলো থেকে অর্থ নেওয়ার চিন্তা করছে সরকার। এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অপর এক সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের ২০১৪-১৫ বাজেটের সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) নির্ধারণ করা হচ্ছে ৬৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। এই ঘাটতির মধ্যে ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা মেটানো হবে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের মাধ্যমে এবং বাকি ৪৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ ঋণের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক ঋণ ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা। চলতি অর্থবছরে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে অনুদান ব্যতীত সামগ্রিক ঘাটতি রয়েছে ৫৫ হাজার ৩২ কোটি টাকা, যা জিডিপির চার দশমিক ৬ শতাংশ। এতে এক বছরের ব্যবধানে সরকারের বাজেট ঘাটতি বাড়ছে ১২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিলুপ্ত হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বাজেট ঘাটতি থাকবেই। কিন্তু সেটা হতে হবে সহনীয়। সরকারের আয়-ব্যয়ে সঙ্গতি মেলাতে হলে আয় বাড়াতে হবে। কিন্তু সীমিত সম্পদ ও সীমাহীন চাহিদার কারণে তা হয় না। ফলে বাজেট ঘাটতি বাড়ে। কিন্তু রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে সরকারের বৈদেশিক সহায়তা ও রাজস্ব আদায় পরিকল্পনা উভয় ক্ষেত্রেই ছেদ পড়েছে। ফলে বাজেট ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতির উত্তরণে রাজস্ব আদায় বাড়ানো আর অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.