ঝালকাঠির রাজাপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক হিন্দুবাড়িতে হামলা-লুটপাট, মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে এক যুবলীগ নেতা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। গতকাল সকাল ১১টার দিকে উপজেলার শুক্তাগড় গ্রামের বিশ্বাসবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নারী-শিশুসহ চারজন আহত হয়। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত শুক্তাগড় ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি সিদ্দিক মিয়া (৪৫) ও বরিশালের দক্ষিণ আলেকান্দার লাভলু খানের ছেলে লিমন হোসেন (২৫) নামে দুজনকে আটক করেছে। আহতরা হলেন- গোপাল বিশ্বাসের ছেলে সাগর বিশ্বাস (২০), তার স্ত্রী মঞ্জু রানি (৪০), সুবাস চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস (৩০), নয়নের শিশু মেয়ে সুপ্রিয়া (৮)। আহত নয়ন বিশ্বাস জানান, তার কাকা অমূল্য বিশ্বাস স্থানীয় যুবলীগ নেতা সিদ্দিক মিয়ার পিতা খালেক মিয়ার কাছে ২৪ কাঠা জমি বিক্রি করে তা বুঝিয়ে দেন। কিন্তু বাড়ি ও মন্দিরের মধ্যে তাদের জমি রয়েছে দাবি করে সকালে সিদ্দিক মিয়া তার ৫০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে হামলা চালিয়ে সবকিছু তছনছ করে দেয়। নয়ন বিশ্বাস জানান, তারা হামলা চালিয়ে মন্দিরের কালী, মনষাসহ ৫টি প্রতিমা ভাঙচুর ও গোয়াল ঘর পুড়িয়ে দেয় এবং ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ ৮০ হাজার টাকা, সোনার চেইন ও আংটিসহ মালপত্র লুটপাট করে এবং আমাদের মারধর করে। তাদের হাত থেকে আমার ছোট শিশু সন্তান সুপ্রিয়াও রক্ষা পায়নি। সিদ্দিকের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা বাড়িঘরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করে। তবে সিদ্দিক মিয়া দাবি করেন, মন্দির নির্মাণ করে তার জমি দখল করলে তিনি লোকজন নিয়ে ওই জমি দখল নিতে গেলে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সিদ্দিকসহ দুজনকে আটক করেছে। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. সাখাওয়াত হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিদুল ইসলামসহ ঊধর্্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা পিয়ার আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রভাষক গোলক চন্দ্র দাসের বাড়ির সীমানা প্রাচীর রাতের অাঁধারে ভাঙচুর করেছে সশস্ত্র মুখোশ পরা একদল দুর্বৃত্ত। সোমবার রাত আড়াইটায় কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামে কলেজ সংলগ্ন প্রভাষকের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রভাষক গোলক চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের নামে শ্রীপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। গোলক চন্দ্র দাস জানান, রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে হঠাৎ দেয়াল ভাঙচুরের শব্দ পাই। ঘটনার সময় দুর্বৃত্তরা দরজায় বাহির থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। জানালা খুলে দেখি ২৫-৩০ জনের মুখোশ পরা একদল দুর্বৃত্ত বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর করছে। নিষেধ করলে তারা খুন করার হুমকি দেয় এবং বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, প্রভাষক রাস্তা নির্মাণের জন্য জায়গা ছাড়ার পরও সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে স্থানীয় প্রভাবশালী মোস্তফা, কালাম ও মানিকদের লোকজন আবারও রাস্তার জায়গা ছাড়ার চাপ দিয়ে আসছে। পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুস ছালাম মোল্লা জানান, মূলত সেখানে রাস্তা দেওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। এর পরও জায়গা দেওয়া হয়েছে। পরিবারটি সংখ্যালঘু হওয়ায় হামলাকারীরা অযৌক্তিক দাবি করে আসছে। শ্রীপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সানোয়ার হোসেন ও রুহুল আমীন জানান, রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেয়াল ভাঙচুরের সত্যতা পাওয়া গছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা বলা যাবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।