খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ছয় থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কর্তৃপক্ষ। গতকাল বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির গণশুনানির প্রথম দিনে বিইআরসির এক সদস্য সাংবাদিকদের এ ইঙ্গিত দেন। আর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামী ১০ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির তিন দিনব্যাপী গণশুনানির প্রথম দিনে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৫.৫০ শতাংশ হারে বৃদ্ধির প্রস্তাব করলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) টেকনিক্যাল কমিটি ৬.৬৬ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে। অন্যদিকে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিইআরসির টেকনিক্যাল কমিটি সাত দশমিক ৫১ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সুপারিশ করে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনে বিইআরসি কার্যালয়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির গণশুনানিতে এ সুপারিশ করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিইআরসির এক সদস্য সাংবাদিকদের জানান, বিইআরসি দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করবে না। সে ক্ষেত্রে চলতি মাসেই এক কোটি ৪২ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুতের জন্য বাড়তি দাম দিতে হতে পারে। এ জন্য ১০ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। তবে এবার গড়ে ছয় থেকে ১০ শতাংশ দাম বাড়তে পারে। এর আগে বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে গতকাল শুরু হয় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির গণশুনানি। সকাল সাড়ে ১১টায় টিসিবি ভবনের সামনে 'গণসংহতি আন্দোলন' নামে বাম সংগঠনের সদস্যরা শুনানি চলাকালে 'গণ অবস্থান' কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তারা 'বিদ্যুতের দাম বাড়ানো চলবে না', 'জনগণের পকেট কেটে কুইক রেন্টালে ভর্তুকি দেওয়া চলবে না' ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড হাতে কারওয়ান বাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। এ ছাড়া শুনানিতে অংশ নেওয়া ভোক্তা অধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ওপর গণশুনানি গ্রহণ করেছেন বিইআরসি চেয়ারম্যান এ আর খান, সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন ও মাকুসুদুল হক। শুনানি শেষে এ আর খান বলেন, দেশবাসীকে উৎকণ্ঠায় রাখতে চাই না। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। এদিকে, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ শুরু হওয়ার পর থেকে সিপিবি, বাসদ ও গণসংহতি আন্দোলন প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। তাদের অভিযোগ রাষ্ট্রীয় খাতের বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ কারখানা মেরামত, নবায়ন ও সম্প্রসারণ না করে তেলভিত্তিক কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে বিদ্যুৎ খাতে ব্যয় বেড়েছে। আর এ ব্যয়ের বোঝা এখন চাপানো হচ্ছে জনগণের ওপর। আজ ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষ (ডেসকো) এবং ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) প্রস্তাবিত দামের ওপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল শেষ দিনে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) প্রস্তাবের ওপর শুনানি হবে। দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় মহাজোট সরকার। এর আগে গত মেয়াদে ৬ দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০১২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।