বিপ্লবী কবিতা লিখে যারা গণ মানুষের হৃদয় জয় করেছেন নাজিম হিকমত(১৯০২-১৯৬৩) তাদেরই একজন। সারা জীবন তিনি সাধারণ মানুষের জন্য লড়েছেন; কবিতা লিখেছেন, আন্দোলন করেছেন। মানুষের অধিকার আদায় আর শ্রেণী বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে জীবনের বেশিরভাগ সময়ে তাকে কাটাতে হয়েছে জেলে। তাঁর সমগ্র জীবনের সাজা যোগ করলে দাঁড়ায় ৫৬বছর।
তুরষ্কের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে নাজিম হিকমতের জন্ম।
শিশুকালেই কবিতার প্রতি ঝুকেঁ পড়েন তিনি। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তার লেখা কবিতা প্রকাশিত হয়। ১৭ বছর বয়সে হিকমত নৌবাহিনীতে অফিসার পদে যোগ দেন। নৌ-বিদ্রহে যোগ দেয়ায় চাকরি এবঙ দেশ দুটোই ছাড়তে হয়। সোভিয়েত ইউসনয়নে আত্নগোপন করেন।
এ সময় রুশ কবি ভ্লাদিমির মায়াকোভস্কির সাতে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। হিকমত কমিউনিষ্ট পার্টির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। তখন তাঁর কবিতা আরও প্রতিবাদী ও জোরালো হয়ে উঠে। ১৯৩৭ সালে তিনি আবার গ্রেফতার হন। দীর্ঘ ১৩ বছর জেল খাটার পর জনমতের চাপে ১৯৫০ সালে মুক্তি পান।
ছাড়া পাবার পর আবার গ্রেফতার হন। এরপর ছাড়া পেয়ে তিনি পালিয়ে গিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে আশ্রয় নেন। এবং স্থায়ীভাবে সেখানে বাস করতে থাকেন। ১৯৬৩ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। হিকমত শুধু তুরষ্কের কবি নন।
তিনি পৃথিবীর কবি। তাঁর কবিতা অনূদিত হয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায়। বাংলাদেশেও হিকমতের অনেক পাঠক রয়েছে। তাঁর ‘জেলখানার চিঠি’ কবিতাটি পাঠকের মনে আলোড়ন তোলে। ‘জেলখানার চিঠি’ কবিতাটির কয়েকটি পংক্তি এরূপ-
তুমি বেঁচে থাকবে
প্রিয়তমা বধূ আমার
আমার স্মৃতি কালো ধোঁয়ার মতো মিলিয়ে যাবে।
বিংশ শতাব্দীতে
খুব বেশি হলে
মানুষের শোকের আয়ু
এক বছর।
বিংশ শতাব্দীতে মানুষের মন যে দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে তার চমৎকারভাবে আলোচ্য কবিতার মাধ্যমে তিনি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।