বাংলা মা’র খাটি সন্তান কখনই তাদের ৫২’কে ভূলতে পারবে না। অস্বীকার করতে পারবে না ৭১’কে। ৩০ লক্ষ শহীদ’দের প্রতি কখনই অসম্মান প্রদর্শন করতে পারে না, অশ্রদ্ধা জানাতে পারে না ২ লক্ষেরও বেশী নারী মুক্তিযোদ্ধাদের।
বাঙালী জাতির সেই সন্তান হবে গর্বিত, যার অঙ্কুর ধন ধান্যে পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা হতে পাওয়া। সেই সন্তান হবে বীরের মত, যার জন্ম ৭১ এ স্বাধীনতাকামী এক যোদ্ধার রক্ত বিন্দু হতে।
লাল-সবুজ’র পতায় পাল উড়িয়ে বিশ্বকে জয় করবে। নিজের শিল্প-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য-ইতিহাস যা কিছু অর্জন তা-ই আপন আলোয় আলোকিত করবে, এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
নতুন প্রজন্মের নতুন যোদ্ধাদের প্রতি, বাঙালী জাতির স্বাধীনতাকামী মানুষ তাকিয়ে আছে। আশার মশাল হাতে নিয়ে প্রহর গুনছে, কখন ভোর হবে (?) যে ভোরের রক্তিম সূর্য নতুন আলোয় আলোকিত করবে ঘোটা জাতিকে, মানবতাকে, মানুষকে। কারণ, প্রজন্মের এই যোদ্ধাদের মস্কিকে আছে ৫২, ধমনিতে আছে ৭১ আর স্বপ্নে আছে সোনার বাংলা বির্নিমাণ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া যেহেতু ৭১’কে কল্পনা করা যায় না, কল্পনা করা যায় না মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে। ঠিক তার-ই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা কে ছাড়া বর্তমান ইতিহাসও কল্পনা করা যায় না।
শেখ হাসিনা ১ম বার ক্ষমতায় এসে আইসিসি, ওয়ানডে ও টেষ্ট স্ট্যাটাস অর্জন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে এক অনন্য জায়গায় নিয়ে গেছেন। সেই সাথে বাঙালী জাতিকে আরেকবার বিশ্ব দরবারে নতুন করে উপস্থান করার গৌরব অর্জন করেন।
২য় বার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে উচ্চ মাত্রায় পৌছানোর সকল ব্যবস্থা করেন।
যার ফলে গত এশিয়া কাপ জিততে জিততে হেরে যাওয়া। আমাদের খেলোয়ার’রা আজ বিশ্বে বড় বড় ক্লাবে বড় বড় টাকার চেক নিয়ে টি-২০ খেলছে। বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারও আমাদের বাংলাদেশের। ২০১১ সালের আইসিসি বিশ্ব কাপ খেলার মূল আয়োজক ভারত আর শ্রীলঙ্কার সাথে বাংলাদেশ নিজেদের শিল্প, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস বিশ্ববাসীকে জানাতে সক্ষম হয়। বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা সমুদ্র সৈকত বিশ্ববাসীকে জানাতে, দেখাতে কক্সবাজার নতুন ষ্টেডিয়াম তৈরি করেছে, পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য এ এক অতুলনীয় পদক্ষ্যেপ বলে আমি মনেকরি।
চারপাশে যেখানে স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের দোসর’রা একের পর এক বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, যেখানে দেশী-বিদেশী লবিষ্ট নিয়োগ করে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, যুদ্ধাপরাধীর বিচার বির্তকিত করার অপচেষ্ঠা করছে। যেখানে নারী কে দাসী হিসেবে ঘরবন্ধি করার ষড়যন্ত্র, শহীদ মিনার ভাংচুর, লাল-সবুজের পতাকায় অগ্নীসংযোগ, আস্তিক-নাস্তিক বলে নতুন প্রজন্মকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে দেশি-বিদেশী সকল ষড়যন্ত্র অত্যান্ত ধৈর্য্য সহকারে মোকাবেলা করে আজ দেশে একটি বিশ্বমানের আয়োজন করেছেন।
আইসিসি টি-২০ বিশ্ব কাপ এর আগে কোনো দেশ একক ভাবে আয়োজক হতে পারেনি। মানুষকে পুড়িয়ে মারা, গরুকে পুড়িয়ে মারা, রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে কাটিয়ে ওঠে বাঙালী জাতিকে আরেক উপহার দেয়া, এটি একটি সত্যিই প্রশংসার ইতিহাস।
২০১১ সালে মূল আয়োজক বাংলাদেশ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলো।
অনেকের মতে, বিশ্বের কোনো ক্রিয়ানুষ্ঠানে এত সুন্দর উদ্বোধন হয়নি। আবার অনুষ্ঠিত ম্যাচগুলোর নিরাপত্তা বা শৃঙ্খলা দেখেও বাংলাদেশ নিয়ে প্রসংশা করেছে বিশ্ববাসী।
আইসিসির টি-২০ বিশ্ব কাপ ক্রিকেট ‘বিসিবি সেলিব্রেশন কনসার্ট’ শুরু হয় বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে। সঞ্চালক মুনমুন অনুষ্ঠান সূচনার ঘোষনার পরপরই মঞ্চে অর্ণব তিনটি গান পরিবেশন করেন। এরপর সোলস, এলআরবি গান পরিবেশন করেন।
অর্ণব, আইয়ূব বাচ্চু, পার্থ বড়–য়ার গান পরিবেশনের পর মাগরিবের নামাজের জন্য ১০ মিনিট বিরতি।
নামাজের পর ছায়ানট শিল্পীগোষ্ঠী লাল-সবুজের শাড়ি পড়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। পুরো ষ্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে সমসুরে সমকন্ঠে গাইতে থাকে, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি...’। স্বাধীনতার এই মাসে হাজার হাজার কন্ঠে বাঙালী জাতি জাতীয় সংগীত গাইছে, ভাবতে সত্যিই শরীর জুড়ে কাঁটা উকি দেয়।
৭টা ২৬ মিনিটে মঞ্চে উঠেন বিশ্ববিখ্যাত সুরকার, ২টি অস্কার, ২টি গ্রামি অ্যাওয়ার্ড, ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড এবং ১৫টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড জয়ী এ আর রহমান।
২৮টি গানের জন্য তিনি মঞ্চে অবস্থান করেন প্রায় পৌনে তিন ঘন্টা। শুরু করেন যুবা সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘ফানা’ আর শেষ করেন ‘জয় হো’ গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
পরে উপস্থিত হয় সময়ের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী সেনেগালিজ-আমেরিকা ‘হিপ-হপ’ শিল্পী অ্যাকন। মঞ্চে উঠেই মাতিয়ে তুলেন গান আর নাচের এক অপরূপ পরিবেশনায়। পশ্চিমা মিউজিকের সাথে বাঙালীকে নতুন করে পরিচিত অর্জন করেন অ্যাকন।
বাঙালীর গর্ব শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও রুনা লায়লার পাশাপাশি মমতাজ ও কুমার বিশ্বজিৎ সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষের দিকে গড়াতে থাকে।
কোথায় বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাসকে খাটো করা হয়েছে, তা আমার বোধগম্য নয়। যারা এ আর রহমানের আলহামদুল্লিাহ, সুবাহান আল্লাহ, জিয়া-রে জিয়া নিয়ে নানান মন্তব্যের ফুলঝুড়ি করছেন, গন্ধ খুজে বেড়াচ্ছেন দেশপ্রেমের, তারা কি আসলেই দেশপ্রেমিক..? এখানেও জামায়াত ইসলাম আর বিএনপি’কে টেনে নিয়ে আসা হচ্ছে। অনেকে আবার ‘বিসিবি’ (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) কে ‘ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড’ বলে ভার্চুয়াল জগতে স্ট্যাটাস, মন্তব্য করেছেন।
আমরা জানি ধর্মান্ধ একটি ব্যাধি, ভাইরাস।
অন্ধের মত মন্তব্য, একঘেয়েমি জীবন যাপন। আমরা বিশ্বাস করি, ধর্মান্ধ মানুষ বরাবরই মুর্খ এবং হিংস্র থাকে। গতিশীল শিক্ষা হতে তারা বঞ্চিত। তাদের থাকে না তর্ক, যুক্তি, তথ্য-উপাত্ত আর বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা।
আমরা যারা দেশাত্ববোধ নিয়ে গর্ব করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে সমাজ সংসার সাজাতে স্বপ্ন দেখি, অসাম্প্রদায়িক সমাজ রাষ্ট্র গঠন করার আন্দোলন করি, মানবতার মুক্তি চাই বলে শ্লোগান ধরি তাদের অনেক’কেই দেখি ধর্মান্ধ’র মত দেশপ্রেম নিয়ে এগুতে থাকে।
ধর্মান্ধ’র মত দেশপ্রেম নয়। সুস্থ্য দেশপ্রেমকে অসুস্থ্য ধর্মান্ধ’র সাথে মিলানো থেকে বিরত থাকাই দেশপ্রেমিকের সুস্থ্যতার পরিচয়। মা’ই সন্তানকে বেশী বুঝে, ভালোবাসে; মাসী নয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।