বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে বরাদ্দের টাকা দিয়ে সড়ক সংস্কারের কাজ করছে সরকার। অলস পড়ে থাকায় এই টাকা আপাতত সড়ক সংস্কারে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই রাজধানীসহ সারা দেশের রাস্তাঘাট সংস্কার করতে চায় সরকার। এ জন্য কাজ শুরু করেছে সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া চলতি বাজেটের এডিপিতে পদ্মা সেতুতে বরাদ্দের বাকি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহার্ঘ্য ভাতায়।
সূত্র জানায়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সেতু বিভাগকে গত ৬ মার্চ পাঠানো এক চাহিদাপত্রের (ডিও লেটার) পরিপ্রেক্ষিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ৫১০ কোটি টাকা বরাদ্দ কমাতে বলা হয়। পরে সেতু বিভাগ থেকে বিষয়টি পরিকল্পনা কমিশনকে জানালে পদ্মা সেতুর বরাদ্দের অর্থ কাটছাঁটের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সেই অনুযায়ী সংশোধিত বাজেটে পদ্মা সেতুর জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ৫১০ কোটি টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শীঘ্রই সংশোধিত এডিপির অনুমোদন দেবে সরকার। চলতি বাজেটের মূল এডিপিতে পদ্মা সেতুর জন্য ছয় হাজার ৮৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পাঁচ হাজার ২৫ কোটি টাকা সংস্থানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বাকি অর্থ প্রকল্প সাহায্যের। তবে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাইকা পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ানোয় প্রকল্প-সাহায্য আদৌ পাওয়া যাবে কিনা, এ বিষয়ে নিশ্চিত নয় সরকার। সূত্র আরও জানায়, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সরকারের রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়েছে। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব খাতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। ফলে বিভিন্ন প্রকল্প ব্যয়ের অর্থ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। অন্যদিকে, বিভিন্ন জটিলতায় পদ্মা সেতুর কাজ আটকে যাওয়ায় এ প্রকল্পে বরাদ্দের অর্থও অলস পড়ে আছে সেতু বিভাগের কাছে। ফলে সেই টাকা দিয়ে সড়ক সংস্কারের ব্যয় মেটাচ্ছে সরকার। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বলছে, নদী ভাঙন ও নদী শাসনের জন্য আরও সময় প্রয়োজন। এ জন্য আগামী শুষ্ক মৌসুমের আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল কাজ শুরু করা যাবে না। তবে জুনের মধ্যেই দরপত্র পক্রিয়া শেষ করতে চায় সরকার। এদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রতিবছরের বাজেটেই অর্থ বরাদ্দ থাকবে। সেতু নির্মাণের স্বার্থে এ অর্থ ডলারে রূপান্তর করে নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, চলতি অর্থবছরের বাজেটে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি একটি ব্যয় পরিকল্পনাও রয়েছে।
জানতে চাইলে সড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন ছিদ্দিক গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'সড়ক সংস্কারের জন্য আমাদের অর্থের প্রয়োজন। সেটি জানিয়ে আমরা পরিকল্পনা কমিশনকে চিঠি দিয়েছি।' এর বেশি আর কিছু বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।