আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম, ধর্মচিন্তা বা ধর্মবাদ.............

ধর্ম কিংবা ধর্মবাদীদের কাছে একজন ব্যক্তির চিন্তার স্বাধীনতা, কর্মের স্বাধীনতার মূল্য অত্যন্ত গৌণ; গুরুতর গর্হিত কাজ! গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চা তো ধর্মবাদীদের কাছে ঈশ্বরদ্রোহের সমতুল্য। আজকের যুগেও স্বাধীনতার সংজ্ঞা এখানে নির্ধারিত হয়, নিয়ন্ত্রিত হয় কতিপয় প্রাগৈতিহাসিককালের ধ্যান-ধারণাকে অবলম্বন করে বসে থাকা অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত মোল্লা-পুরোহিত দ্বারা। ধর্মীয় পাণ্ডারা একজন সাধারণ ব্যক্তির নিজস্ব বোধ-অনুভূতি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে প্রতিনিয়ত, চাপিয়ে দিতে চায় নিজেদের মত। কোনো ব্যক্তির জন্মের পর থেকে কি নাম হবে, নামের শেষে পদবী কি হবে, কি কাপড় পড়বে, কাপড় কতটুকু লম্বা হবে, গোড়ালির উপর উঠবে কি উঠবে না, মাথায় তকি না টিকি দিবে, সে কি খাবে, গরু বা শূকরের মাংস খাবে কি-না, সে কাকে বিয়ে করবে, কিভাবে করবে, কোন্ জাত-গোত্র-বর্ণের সাথে আত্মীয়তা হবে, তার সন্তানকে মসজিদ না মন্দিরে পাঠাবে, মারা গেলে সৎকার কিভাবে হবে, কবর না আগুনে পোড়ানো হবে ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ে ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত নির্দেশই ধর্মবাদীদের কাছে একমাত্র অনুসরণ ও অনুকরণের বিষয়; এর বাইরে কোনো ভিনড়বমত কোনোভাবেই বরদাশ্ত যোগ্য নয়।
আসলে প্রতিটি ধর্মই কর্তৃত্ববাদ বা প্রভুত্ববাদ (Authoritarianism)-এর পরিচায়ক; এখানে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চার কোনো সুযোগ নেই, বিশ্বাসের কোনো স্বাধীনতা নেই।

কিন্তু ব্যবহারিক দিক থেকে এক ধর্মের সাথে আরেক ধর্মের রয়েছে প্রচণ্ড মতভেদ-বিভেদ-বিদ্বেষ; এগুলোকে মনীষী রাহুল সাংকৃত্যায়ণ চিহ্নিত করেছেন এভাবে৩ : “একজন যদি পুবমুখো হয়ে পূজার বিধান দেয় তো অন্যজন পশ্চিমে। একজন মাথার চুল বড়ো রাখতে বলে তো আর-একজন দাড়ি। একজন গোঁফ রাখার পক্ষে তো অন্যজন বিপক্ষে। একজন পশুর কণ্ঠনালী কাটার নিয়মের কথা বলে তো অন্যজন মুণ্ডচ্ছেদ করতে বলে। একজন জামার গলা ডানদিকে রাখে তো অন্যজন বাঁ-দিকে।

একজনের যদি এঁটোকাঁটার বাছ বিচার না থাকে তো অন্য জনের নিজের জাতের মধ্যেও তেরো হাড়ি। একজন পৃথিবীতে শুধু খোদার নাম ছাড়া আর কিছু থাকতে দিতে রাজি নয় তো আর-একজনের দেবতার সংখ্যা অগণিত। একজন গো-রক্ষার জন্য জান দিতে রাজি তো অন্য জনের কাছে গো কোরবানি অত্যন্ত পুণ্যের কাজ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.