দূরত্ব কমে আসছে সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের মধ্যে। প্রথমবারের মতো একসঙ্গে তারা বক্তব্য রাখার পরও কতিপয় নেতা চান নিজেদের স্বার্থে দলের এ বিরোধ জিইয়ে রাখতে। তবে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই স্পষ্ট ও সতর্ক রয়েছেন। তিনি মিডিয়াকে বলছেন, আমার জন্য রওশন এরশাদ সব সময় ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাকে নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ নেই।
অন্যদিকে রওশনও দীর্ঘমেয়াদি বিরোধে আগ্রহী নন। তার সর্বশেষ অবস্থানে তিনি তা ব্যক্ত করেছেন। তারপরও অতি উৎসাহী পার্টি নেতাদের তৎপরতা থেমে নেই। তারা এরশাদের বিকল্প হিসেবে রওশনকে দাঁড় করাতে চান।
জানা গেছে, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদ গত ৩ ডিসেম্বর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে দলের অনেক নেতা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
এ সময় 'রাজনৈতিক অসুখে' এরশাদ ভর্তি হন সিএমএইচে। তার অবর্তমানে দলের দায়িত্ব নেন রওশন এরশাদ। সেই দুঃসময়ে তিনি নির্বাচন পরিচালনা এবং সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া করে দলকে সংসদের বিরোধী দলের আসনে বসান। শুধু তা-ই নয়, একই সঙ্গে মন্ত্রিসভাতেও ঠাঁই দেন কয়েকজন নেতাকে। এ সময় এরশাদ চেয়েছিলেন জাতীয় পার্টি শুধু বিরোধী দলের আসনে থাকুক।
মন্ত্রিসভাতে যোগ না দিক। এ নিয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝিও তৈরি হয় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ ও তার স্ত্রী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদের মধ্যে। এরপরের দূরত্ব দেখা দেয় মহিলা এমপি নিয়ে। দুটি তালিকা তৈরি হয় জাতীয় পার্টিতে। একটি তৈরি করেন পার্টি চেয়ারম্যান, আরেকটি সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী।
এ নিয়েও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করার চেষ্টা করেন পার্টির কিছু নেতা। এরশাদ কোনো কিছুকে গুরুত্ব দেননি। বরং নিজের মতো করে জাতীয় পার্টিতে কাজ করে চলছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ। এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, জাতীয় পার্টি মানে এরশাদ। এরশাদ মানে জাতীয় পার্টি।
দুটি আলাদা করার সুযোগ নেই। এরশাদের অবর্তমানে জাতীয় পার্টির নেত্রী রওশন এরশাদ। এ দুজনের অবর্তমানে এরশাদ তার উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেছেন, জি এম কাদেরকে। তাই সাংগঠনিক জটিলতা তৈরির সুযোগ জাতীয় পার্টিতে নেই। এখন যা হচ্ছে তা সাময়িক ভুল বোঝাবুঝি।
নেতা-কর্মীরা এরশাদের সঙ্গে রয়েছেন। সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে এমপিরা রওশনকে সম্মান দিচ্ছেন। আর কিছু নয়। এ প্রসঙ্গে পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বেগম রওশন এরশাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। গত বৃহস্পতিবার ছাত্রসমাজের কাউন্সিলে তারা একসঙ্গে ছিলেন।
সহসাই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। তবে জাতীয় পার্টির অন্য একটি সূত্র জানায়, কতিপয় নেতা সরকারকে বেশি খুশি করতে চান। এ গ্রুপটি বিরোধ জিইয়ে রাখতে চায় জাতীয় পার্টিতে। এ বিরোধের জের কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ক্রমান্বয়ে তা বুঝতে পারছে।
কারণ নিজেদের বিরোধের কারণেই জাতীয় পার্টি উপজেলায় ভালো করতে পারেনি। এমনকি সরকারের আস্থাভাজন জাতীয় পার্টির মন্ত্রী ও এমপিদের এলাকায়ও জাতীয় পার্টির জয় আসেনি। কর্মীরা মনে করেন, এরশাদ আবার মাঠ চষে বেড়ালে এ স্থবিরতা কেটে যাবে। জাতীয় পার্টি আবার সুসংহত করতে পারবে তাদের অবস্থান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।