" আর সে হচ্ছে কেয়ামতের একটি নিদর্শন " ( সূরা যুখরুফঃ ৬১)
আহলে সুন্নাতের নিকট সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য হাদিস সঙ্কলন ৬ টি যা " সিহাহ সিত্তাহ " নামে পরিচিত । হাদিসের প্রামান্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করার জন্য আহলে সুন্নাতের হাদিস সংকলকগণ যে সব মূলনীতি প্রনয়ন করেছেন এ ৬ টি সংকলন সে সব মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত ।
৬ টি গ্রন্থঃ
১ সহীহ আল বুখারী
২ সহীহ আল মুসলিম
৩ সহীহ আত তিরমিযী
৪ সুনানে ইবনে মাজাহ
৫ সুনানে আবু দাউদ
৬ সহীহ আন নাসাঈ
ইমাম মাহদী (আঃ) সম্পর্কে সিহাহ সিত্তাহ ও আহলে সুন্নাতের অন্যান্য সূত্রে অসংখ্য হাদিস রয়েছে । নিম্নে উদ্ধৃত হাদিস ও বর্ণনাগুলো এমন যেগুলোর সত্যতা ও প্রমান্যতার ব্যাপারে আহলে সুন্নাতের হাদিস বিশারদগণ একমত ।
১ মহানবী (সঃ) বলেছেন , এমনকি সমগ্র বিশ্বের আয়ু যদি শেষ হয়ে গিয়ে থাকে এবং কেয়ামত হতে ১ দিনও অবশিষ্ট থাকে তাহলেও মহান আল্লাহ ঐ দিবসকে এতটা দীর্ঘায়িত করবেন যাতে তিনি ঐ দিবসেই আমার আহলে বাইতের মধ্য থেকে এক ব্যক্তির শাসন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করে দিতে পারেন যাকে আমার নামেই ডাকা হবে ।
পৃথিবী অন্যায় অত্যাচারে ভরে যাওয়ার পর সে শান্তি ও ন্যায়ে পূর্ণ করে দেবে । ( তিরমিযী ২য় খণ্ড , পৃষ্ঠা ৮৬ , ৯ম খণ্ড , পৃষ্ঠা ৭৪-৭৫; আবু দাউদ , ২য় খণ্ড পৃ ৭; মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল , ১ম খণ্ড পৃ ৩৭৬,৩য় খণ্ড পৃ ৬৩; মুস্তাদরাকুস সাহীহাইন (হাকেম),৪থ খণ্ড পৃ ৫৫৭; আল মাজমা (তাবরানী), পৃ ২১৭; তাহযীবুস সাবিত ( ইবনে হাজার আসকালানী ), ৯ম খণ্ড পৃ ১৪৪ ; আস সাওয়ায়িকুল মুহরিকাহ ( ইবনে হাজার হাইসামী ) ,১১ শ অধ্যায় , উপাধ্যায় ১, পৃ ২৪৯; কানযুল উম্মাল , ৭ম খণ্ড, পৃ ১৮৬; ইকদুদ দুরার ফী আখবারিল মাহদী আল মুনতাযার, ১২শ খণ্ড , ১ম অধ্যায় ; আল বায়ান ফী আখবারি সাহিবিয যামান ( গাঞ্জি শাফিয়ী ) ১২ শ অধ্যায় ; ফাতহুল বারী ( ইবনে হাজার আসকালীন ) ৭ম খণ্ড,পৃ ৩০৫; আল তায কিরাহ ( কুরতুবী) , পৃ ৬১৭; আল হাভী (সুয়ুতি), ২য় খণ্ড পৃ ১৬৫-১৬৬; শারহুল মাওয়াহিবুল লাদুন্নীয়াহ (যুরকানী ),৫ম খণ্ড , পৃ ৩৪৮; ফাতহুল মুগীস ( সাখাভী), ৩য় খণ্ড , পৃ ৪১; আরজাহুল মাতালিব ( উবায়দুল্লাহ হিন্দী ),পৃ ৩৮০; আল মুকাদ্দিমাহ (ইবনে খালদুন), পৃ২৬৬; জামিউস সাগীর (সুয়ুতী) ,পৃ ১৬০; আল উরফুল ওয়ারদী ( সুয়ুতী), পৃ ২ ।
আশ শাফিয়ী ( ওফাত ৩৬৩/৯৭৪) বলেছেন যে , এ হাদিস বিপুল সংখ্যক সূত্রে বর্ণিত এবং বহু বর্ণনাকারী কর্তৃক তা মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র বর্ণিত ও প্রচারিত হয়েছে । এছাড়া হাদিসটি ইবনে হিব্বান ,আবু নাঈম , ইবনে আসাকির প্রমুখ কর্তৃক লিখিত গ্রন্থাদিতেও উদ্ধৃত হয়েছে ।
২ মহানবী (স ) বলেছেন, মাহদী আমাদের অর্থাৎ আহলে বাইতের সদস্যদের একজন ।
"( ইবনে মাজাহ , ২য় খণ্ড , হাদিস নং ৪০৮৫ )
হাদিসে যেমন আমরা দেখতে পাই , ইমাম মাহদী (আঃ) মহানবী (সঃ) - এর আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত ।
তাই তিনি হযরত ঈসা (আঃ) হতে পারেনা । ঈসা (আঃ) ও মাহদি (আ) ভিন্ন ২ ব্যাক্তি , তবে তাঁরা দুজন একই সময়ে আগমন করবেন । নিম্নোক্ত হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে , ইমাম মাহদি হযরত মুহম্মদ (সঃ) এর বংশধর ।
৩ রাসুলুল্লাহ (সঃ) , মাহদি ফাতিমার বংশধর ।
( ইবনে মাজাহ , ২য় খণ্ড , হাদিস নং ৪০৮৬ ; নাসাঈ ; বাইহাকী ; আস সাওয়ায়িকুল মুহরিকাহ , অধ্যায় ১১ , উপ অধ্যায় ১, পৃ ২৪৯ -এর বর্ণনা অনুসারে অন্যান্য হাদিস সংকলকগণ ।
৪ মহানবী (সঃ) , আমরা আবদুল মুত্তালিবের বংশধরগন বেহেস্তবাসিদের নেতা , স্বয়ং আমি , হামযাহ , আলী , জাফর , হাসান , হুসাইন ও মাহদী । ' ( ইবনে মাজাহ , ২য় খণ্ড , হাদিস নং ৪০৮৭ ; মুস্তাদরাকে হাকেম ( আনাস ইবনে মালিক- এর সূত্রে বর্ণিত ); দাইলামী ; আস সাওয়ায়ীকুল মুহরিকাহ ,অধ্যায় ১১, উপ অধ্যায় ১ , পৃ ২৪৫ )
৫ মহানবী (সঃ) , মাহদি আমার উম্মাহর মাঝে আবির্ভূত হবে । সর্ব নম্ন ৭ বছর ও সর্বোচ্চ ৯ বছরের জন্য আবির্ভূত হবে । এ সময় আমার উম্মাহ অফুরন্ত আশীর্বাদ ও অনুগ্রহ প্রাপ্ত হবে যা তাঁরা আগে কখনো প্রত্যক্ষ করেনি ।
উম্মাহ তখন বিপুল পরিমাণ খাদ্যের অধিকারী হবে যার ফলে তাদের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখার প্রয়োজন হবেনা । ( ইবনে মাজাহ , ২য় খণ্ড হাদিস নং ৫০৮৩)
এখানে আহলে সুন্নাতের হাদিস ও সহীহ সিত্তাহ ও সুন্নি মনীষীদের যৎ কিঞ্চিত প্রকাশ করা হল । এর পরেও যদি আরও হাদিস ও প্রমানাদির প্রয়োজন কেউ বোধ করেন , আমি আমার যথা সাধ্য চেষ্টা করবো । আপনাদের সেবা প্রদানের জন্য । ধন্যবাদ ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।