দেশের উত্তরাঞ্চলের জয়পুরহাট ও কুড়িগ্রামে নারী নির্যাতনের দুটি ঘটনা সহযোগী একটি দৈনিকে প্রকাশ হয়েছে। জয়পুরহাটে শুক্রবার সাদ্দাম নামের এক পাষণ্ড স্বামী টাকা চুরির সন্দেহে স্ত্রীর শরীরে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়। তাতেও স্বীকারোক্তি আদায় করতে না পেরে তার হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেরেক ঠুকার বর্বরতাও দেখায়। এ নির্মম নির্যাতনে গৃহবধূ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে এলে তার দুই হাতের তালু ব্লেড দিয়ে কেটে মরিচ ও লবণ ছিটিয়ে দেওয়া হয়। গৃহবধূর আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করলেও পাষণ্ড স্বামী ও দেবর তাকে হাসপাতালে নিতে দেয়নি। রবিবার স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাদ্দামের বাড়িতে এসে সালিশের নামে গৃহবধূর কাছ থেকে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। পরে আত্দীয়স্বজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং গৃহবধূর মা পাষণ্ড স্বামী, দেবর এবং শ্বশুরসহ নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ নির্যাতিত গৃহবধূর শ্বশুরকে গ্রেফতার করলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। যৌতুকের আরেকটি ঘটনা উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামে। যৌতুক না পেয়ে আবদুল খালেক নামের এক পাষণ্ড স্বামী স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে পেট্রল ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। শ্বশুর-শাশুড়ি এই অপকর্মে সহায়তা করে। গৃহবধূর আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার ও কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। দেশে প্রতিদিনই নারী নির্যাতনের যে অসংখ্য ঘটনা ঘটছে তার একটি ক্ষুদ্র অংশ মামলা পর্যন্ত গড়ায় এবং পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পায়। জয়পুরহাট ও কুড়িগ্রামের নারী নির্যাতনের দুটি ঘটনা প্রমাণ করেছে সরকারপ্রধান, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতাসহ বেশ কিছু উচ্চপদে নারীরা অধিষ্ঠিত থাকা সত্ত্বেও এ দেশের নারীরা আজও নিরাপত্তাহীনতার শিকার। পশ্চাৎপদ উত্তর জনপদে নারী নির্যাতনের ঘটনা কিছুতেই কমছে না। তথাকথিত জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা আশা করব, জয়পুরহাট ও কুড়িগ্রামের নারী নির্যাতনের ঘটনাকে পুলিশ প্রশাসন গুরুত্বের সঙ্গে নেবে। অপরাধীদের আটক ও বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে তারা সম্ভাব্য সব কিছুই করবে। নারী নির্যাতনে কেউ যাতে সাহস না পায় সে জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।