অভিজাত এলাকা গুলশান শুটিং ক্লাবের সামনের সড়ক দিয়ে পথচারীদের হাঁটতে হয় নাকে রুমাল চেপে। ময়লার উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে আছে পুরো এলাকায়। মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের দক্ষিণ পাশের আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের দিন শুরু হয় ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে। শান্তিনগর কাঁচাবাজারের প্রবেশপথ এবং প্রগতি সরণির নর্দা লিংক রোডের পাশেও একই অবস্থা। মালিবাগ মোড়ের কারিতাস গেটের সামনে পড়ে আছে বিশালাকৃতির খোলা বর্জ্য কন্টেইনার।
উপচে পড়া ময়লা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সংলগ্ন রাস্তায়। মধ্যবাড্ডার প্রগতি সরণির হল্যান্ড সেন্টার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে দীর্ঘদিন পড়ে আছে ময়লার দুটি বড় কন্টেইনার। দুর্গন্ধে সে জায়গাটা হেঁটে পেরোনো কঠিন। নাকে রুমাল চেপে পথ চলতে বাধ্য হচ্ছেন নিরুপায় পথচারীরা। কারণ, ডাস্টবিনের ময়লা সময় মতো পরিষ্কার করে না সিটি করপোরেশন।
এভাবে রাজধানীর প্রায় সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে অর্ধশত খোলা দুর্গন্ধময় বর্জ্যে ভরা কন্টেইনার। গতকাল সরেজমিন মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মালিবাগ মোড় থেকে শাহজাহানপুর মোড় পর্যন্ত রয়েছে চারটি ময়লা উপচানো কন্টেইনার। আরও আছে মিরপুর মাজার রোডের শাহআলী কাঁচাবাজারের সামনে, মিরপুর ১ নম্বর আনসার ক্যাম্প সরকারি স্টাফ কোয়ার্টার সংলগ্ন সড়ক, তালতলা বাসস্ট্যান্ডে, মতিঝিলের এজিবি কলোনি গেটের মুখে, ফকিরাপুল বাজার সংলগ্ন রাস্তায়, চাঁনখারপুল মোড়ে, ধোলাইখালের রাস্তার ওপর, সূত্রাপুরের পুল মোড়ে, সদরঘাট ওভারব্রিজের মোড়ে এবং আরও অনেক জায়গায়। এসব ডাস্টবিন সময় মতো পরিষ্কার না করায় ভয়াবহ ভোগান্তিতে আছেন নগরবাসী। রাজারবাগ সংলগ্ন শহীদবাগের বাসিন্দা জসিম উদ্দীন বলেন, নাকে রুমাল না চেপে মালিবাগ মোড় পার হওয়া অসম্ভব।
বমি আসতে পারে। দিনের পর দিন এ অবস্থা চলছে। কোনো প্রতিকার নেই। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। কোনো প্রতিকার হয়নি।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মিলিয়ে পুরো ৩৬০ বর্গকিলোমিটারের সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন প্রায় চার হাজার টন গৃহস্থালি বর্জ্য উৎপন্ন হয়। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকায় দিনে সব মিলিয়ে সাত হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য অপসারণে হিমশিম খাচ্ছে দুই ডিসিসি। বর্জ্যে ভরা কন্টেইনার পরিষ্কারের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকবল নেই ডিসিসির। দুই সিটি করপোরেশন মিলিয়ে মোট পরিচ্ছন্নকর্মী আছে ৭ হাজার ৫০০ জন।
এ হিসাবে নগরীতে বসবাসকারী প্রায় এক হাজার মানুষের জন্য পরিচ্ছন্নকর্মী রয়েছে একজন। নগর কর্তৃপক্ষের ময়লা সংগ্রহের সময়সূচিতেও বর্তমানে গরমিল দেখা দিয়েছে। সাধারণত রাতে কন্টেইনারে ভরা ময়লা সংগ্রহের কথা থাকলেও এখন সারাদিনই বিভিন্ন এলাকায় পরিচ্ছন্নকর্মীদের কন্টেইনার পরিষ্কার করতে দেখা যায়। এ ছাড়া নগরীর ময়লা সরাতে ব্যবহৃত হয় ৩২০টি ট্রাক ও ডিমাউন্টেবল কন্টেইনার। এগুলোর ব্যবস্থাপনাতেও রয়েছে সমন্বয়হীনতা।
ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে বর্তমানে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। জনবল সংকট থাকায় কিছুটা সমস্যা আছে। শীঘ্রই সমস্যা কেটে যাবে। ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা জাভেদ ইকবাল বলেন, সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকেন নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে। এ কাজে সংশ্লিষ্ট কারও কোনো গাফিলতি নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।