গার্মেন্ট শিল্পের জন্য ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি এ শিল্পের জন্য কতটা বিপজ্জনক তা অনুমান করার জন্য খুব বেশি গবেষণার প্রয়োজন নেই। হরতাল, অবরোধ ও রাজপথের সহিংসতায় রপ্তানিপণ্য সঠিক সময়ে জাহাজে উঠানো সত্যিকার অর্থেই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর পাশাপাশি এ শিল্পের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে মালিকপক্ষের অনুদার মনোভাব। গার্মেন্ট শ্রমিকদের যে মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে তা মেনে নিতে মালিকপক্ষের সময়ক্ষেপণ এ শিল্পকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে কিনা সে প্রশ্নও এখন দানা বেঁধে উঠছে। আজকের এ সময়ে ৫ হাজার ৩০০ টাকা সর্বনিম্ন মজুরি কাঠামো সত্যিকার অর্থেই কোনো মজুরি নয়। এ অর্থ দিয়ে এক ব্যক্তির তিন বেলা মানসম্মত খাবার খাওয়া যেমন সম্ভব নয়, তেমন গার্মেন্ট শিল্প এলাকায় মানসম্মত এক রুমের একটি ঘর পাওয়াও দুষ্কর। তারপরও মালিকপক্ষ মজুরি কাঠামোকে তাদের সাধ্যাতীত বলে দাবি করছে এবং তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এ অস্বীকৃতি মজুরি কাঠামো সম্পর্কে শ্রমিকদের এক বড় অংশের মধ্যে যে অসন্তুষ্টি কাজ করছে তাকে প্রকারান্তরে উসকে দিচ্ছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। শ্রমিকরা তাদের নূ্যনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছিলেন এবং বেশ কিছু শ্রমিক সংগঠন এ দাবিতে এখনো অটল। সরকার ঘোষিত মজুরি কাঠামো সাধারণভাবে শ্রমিকদের বড় অংশ মন্দের ভালো হিসেবে মেনে নিলেও মালিকপক্ষের অস্বীকৃতি তাদের মধ্যেও ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। সময়ক্ষেপণ না করে ঘোষিত মজুরি কাঠামো মেনে নেওয়া না হলে এবং তারা আন্দোলনে নামলে সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার এই দুঃসময়ে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামলে কি নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটবে তা মালিকপক্ষ কেন বুঝছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি, সরকারের সঙ্গে দরকষাকষির জন্য মালিকপক্ষ অস্বীকৃতির যে নাটক করছে তা থেকে এখনই সরে আসা উচিত। গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো মেনে নিয়ে প্রয়োজনে সরকারের সঙ্গে দরকষাকষিতে নামলে সেটিই হবে উত্তম পথ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।