গাজীপুরে এক দিনে সাত খুনের ঘটনা এবং আরও দুটি লাশ উদ্ধার জেলার আইনশৃঙ্খলার জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি করেছে। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাত খুনসহ দুটি লাশ উদ্ধারের ঘটনা রাজধানী সংলগ্ন এ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নেতিবাচক চিত্রই তুলে ধরেছে। যে সাতটি খুনের ঘটনা ঘটেছে ওই ২৪ ঘণ্টায় তার মধ্যে আছে জমি নিয়ে বিরোধে বাবা ও দুই ছেলেসহ তিনজনের প্রাণহানি, নেশার টাকা না পেয়ে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা, এক পোশাক শ্রমিক ও অন্য এক নারীর হত্যাকাণ্ড এবং স্কুলছাত্রকে জবাই করে হত্যার ঘটনা। জমিজমা নিয়ে বিরোধ দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে শত বছর কিংবা তারও বেশি দিন ধরে। দেশে যত হত্যাকাণ্ড ঘটে তার এক বড় অংশের পেছনে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ জড়িত। আদালতে জমিজমা সংক্রান্ত মামলা সামাজিক ক্ষেত্রে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি জিইয়ে রাখছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি জমিজমার মালিকানা নির্ধারণে জোর যার মুুল্লুক তার নীতি অনুসৃত হয় এ দেশে। দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করলেও স্বাধীনতার আগে যেমন এ বিষয়টির প্রতি নজর দেওয়া হয়নি, স্বাধীনতার পরও না। মাদকের আগ্রাসন জনজীবনে কি ট্র্যাজেডির জন্ম দিচ্ছে সন্তানের হাতে মা-বাবা খুনসহ অসংখ্য খুন-খারাবির ঘটনা তারই প্রমাণ। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি মাদক আগ্রাসন সামাজিক অস্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি সৃষ্টি করলেও তা রোধের উদ্যোগও সীমাবদ্ধ। মাদক দমনের দায়িত্বে যারা নিয়োজিত তাদের অনেকেই মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বখরা পায় এটি এক ওপেন সিক্রেট। গাজীপুরে ২৪ ঘণ্টায় ৭টি খুনের ঘটনা ও দুই নারীর লাশ উদ্ধারকে জেলা বিশেষের ঘটনা ভাবলে ভুল করা হবে। এটিকে দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতিশীল অবস্থার চালচিত্র বললেও খুব একটা ভুল হবে না। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শুধু গাজীপুর নয়, দেশের যে কোনো প্রান্তের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকে সরকারের প্রাধান্য দেওয়া উচিত। নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া উচিত নয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।