নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে নতুন করে আরও এক বছরের সেশনজটে পড়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লাখ লাখ শিক্ষার্থী। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করে নতুন সেশনে ভর্তির কার্যক্রম প্রায় শেষ হয়ে যায়। শুরু হয় শিক্ষাকার্যক্রম। কিন্তু এ বছর এইচএসসির ফল প্রকাশের পর থেকেই দেশজুড়ে ছিল রাজনৈতিক সহিংসতা। হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি থাকায় বার বার দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পেছাতে হয়েছে ভর্তি পরীক্ষা। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো স্থগিত হয়ে আছে পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম। জানা গেছে, গত বছরের ৩ আগস্ট এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ৮টি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডে সব মিলে পাস করেছে ৭ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৮ হাজার ১৯৭ জন। পরীক্ষার পাসের পর তীব্র প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিতে কোচিং করেন অনেকে। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের প্রায় ৬ মাস হতে চললেও ভর্তি পরীক্ষাই শেষ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে লাগবে আরও ছয় মাস। টানা হরতাল-অবরোধের কারণে ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা, সাক্ষাৎকার ও ভর্তি কার্যক্রম এলোমেলো হয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ও ঝুঁকি নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে গেছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ক্যাম্পাসে পেঁৗছালেও পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার কারণে ফিরে আসতে হয়েছে। নতুন করে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার অপেক্ষায় অনেকে। অনেকে আবার সিদ্ধান্ত বদলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ২০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত অবস্থায় আছে। এর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা তিনবার পিছিয়ে শেষ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টেঙ্টাইল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া বিভিন্ন মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে তারা এখনো ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি। আর ভর্তি কার্যক্রম শেষ করেও ক্লাস শুরু করতে পারেনি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইউনিটের সাক্ষাৎকার এখনো স্থগিত অবস্থায় আছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওরিয়েন্টেশন ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও হরতালের কারণে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে পেঁৗছতে না পারায় তা পেছানো হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় এখন সেশনজটের কবলে। যে কারণে নতুন ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী জানান, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এখন পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারেনি তাদের দ্রুত পরীক্ষা নিতে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।