যা পাবেন সবই ঋণাত্মক , এটা শুধু ঝটকা দেবে বিবর্তনবাদ-মানব তথা প্রাণীজগতের উদ্ভবের নতুনতত্ত্ব। যা গড়ে ওঠে মূলতঃ ধর্মের বিরুদ্ধ কিছু মতবাদ নিয়েই। হিফেসটাস, সিসেরা, প্লুটার্ক, কোপার্নিকাস, জি ব্রুনো, গ্যালিলিও প্রভৃতিরা সূচনা করেন সূর্য ও পৃথিবী কেন্দ্রীক বিরোধিতা, যা বাইবেলকে সরাসরি বিরোধিতা করে। ফলে পরবর্তীতে ডারউইন যখন তার বিবর্তনবাদ তত্ত্ব প্রকাশ করেন, তা স্বভাবতই ধর্মগ্রন্থের বর্ণনার বিরোধী দিক হিসেবে গৃহীত হয় ১৯৫৯ সালে তার Origin of species by means of Natural selection এবং ১৮৭১ সালে Decent of man বই দ্বারা তার তত্বটিকে তিনি স্পষ্ট করেন। যদিও তখন থেকেই তা ধর্মের বিরুদ্ধে ছাড়িয়ে যায় প্রধানত ১৮৬০ সালের ৩০ জন ডারুইনবাদ নিয়ে প্রকাশ্য বিতর্কের জন্য যার আয়োজন করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের Association for the Advancement of science পক্ষে বিবর্তনবাদী T.H. Haxli বিপক্ষে বিশপ Wilberforce ১৯২৭ সালের জানুয়ারীতে মামলা হয়, যা নিষ্পত্তি হয় ৬০ এর দশকে যেখানে বিবর্তনবাদ পড়ানোর পাশাপাশি বাইবেলীয় সৃষ্টিতত্ত্ব পড়ানোর ও সিদ্ধান্ত হয়।
তবে প্রকৃত সেতুবন্ধনটি কেউ খোঁজার চেষ্টাও করেনি। তুলনামূলক ভাবে দেখা যায় যে বিবর্তনবাদ অনুসারে প্রথমে জলজ জীব হিসেবে ছোট কনিকা বা জেলির ন্যায় কোষের উদ্ভব হয়। এর কিছু কিছু সাগরের নীচে মৃত বা জীবিত জমে শ্যাওলা জাতীয় উদ্ভিদের জন্ম দেয়, যা দেখে সমুদ্রের নীচের বৃক্ষরাজির উদ্ভব। ক্রমান্বয়ে ম্যানগ্রোভ জাতীয় বৃক্ষ এবং স'লজ বৃক্ষ। আবার ঐ জেলী গুলোই ক্রমান্বয়ে মৎস্যজাতীয় প্রাণীতে পরিনত হয়।
ছোট মাছ থেকে বড় মাছ। মৎস্য জাতীয় জলজ প্রাণী থেকে উভচর প্রাণীর উদ্ভব যেমনঃ ব্যাঙ, কচ্ছপ। তার থেকে উদ্ভব সরীসৃপ প্রাণীর যেমনঃ সাপ, টিকটিকি ডাইনোসোর বা কিংবা পেঙ্গুইন, এমু, উটপাখি প্রভৃতি পাখির, যা পরবর্তীতে পূর্ণ পাখিতে রুপান-রিত হয়। আবার, সরীসৃপ থেকে স-ন্যপায়ী বৃহদাকার প্রানীর উদ্ভব হয় শূকর, বাঘ, হাতি, তৃণভোজী বৃহদাকার বিলুপ্ত প্রাণী সমূহের এরই একটা অংশ এ্যাপ জাতীয় উপধারা যেখানে গরিল, বানর শিম্পাজী প্রভৃতি অন-ভূক্ত। এরই ধারায় আদিম মানুষ ক্রমান্বয়ে সভ্য মানুষ।
পক্ষান-রে সনাতন ধর্মের বা আর্য্যমতের শাস্ত্র শতপথও তৈত্তিরীয় সংহিতা কিংবা বায়ু পুরাণ বা সৌরপুরাণও তাই বলে। মুলতঃ আর্যশাস্ত্র সমূহ বিবর্তনবাদের সমর্থন বা ইঙ্গিত পূর্বেই দিয়েছিল।
পূর্বোক্ত বিবর্তনবাদের ধারা বিবরণীতে ৫টি ধরণ দেখতে পাই যার সাথে শাস্ত্র সমুহের অবতারের সামঞ্জস্য মেলে। যেমন:
১.জলজ প্রাণী (মৎস্য জাতীয়)--------মৎস্য অবতার (মাছ)
২.উভচর প্রাণী (কচ্ছপ, ব্যাঙ, প্রভৃতি)-কূর্ম অবতার (কচ্ছপ)
৩.স্থলজ প্রাণী (শূকর, গরু, সিংহ প্রভৃতি)-----বরাহ অবতার (শূকর)
৪.এ্যাপজাতীয় প্রাণী (শিম্পাজী বা বন্যদশার মানুষ)--------- নৃসিংহ অবতার(কল্পিত রুপ)
৫.মানবজাতি (বর্বরদশা) ------------------ বামন অবতার
৬.মানবজাতি (সভ্যতা)-------রাম অবতার ও তৎপরবর্তীগণ
অর্থাৎ জলজ প্রাণীদেরকে সঠিক পথের নির্দেশনা দিতে পরমপিতাকে বা ভগবানকে মৎস্যজাতীয় প্রাণী হয়েই জন্মাতে হয়েছে। কারণ মানুষের কথা তো আর মাছে বোঝে না।
এভাবেই উভচর প্রাণীর উদ্ভব হলে তিনি কচছপ জাতীয় প্রাণী হয়েই জন্মগ্রহন করেন। এক্ষেত্রে মূল বিষয় হল তিনি উভচর প্রাণীদের জন্য আসেন। পরে স্থলজ প্রাণী সমূহের উদ্ভব হলে তিনি তাদেরকে ও উদ্ধার করতে অবতীর্ণ হন শূকররুপী স্থলজ জীববেশে। পরবর্তীতে যখন স্তন্যপায়ী বা এ্যাপজাতীয় প্রানীর উদ্ভব হয়, তখন থেকে বনমানুষ পর্যন্ত তাদেরকে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে দেখা হয় না। অর্থাৎ দেখতে ক্রমান্বয়ে মানুষের মত হলেও পশুপ্রবৃত্তি বিদ্যমান ছিল তাদের খাদ্যাভ্যাস বাসস্থান, যৌনক্রিয়া প্রভৃতিতে।
ঠিক এরই স্বয়ম্ভু যেন অর্ধেক নর(মানুষ)+ অর্ধেক সিংহ(পশু)=নৃসিংহরূপ। পরবর্তীতে সভ্য মানুষের মধ্যে বিভিন্ন অবতারের আর্বিভাব।
যাহোক, এখানে দুটি বিতর্ক আসতে পারে।
১। এগুলো কাল্পনিকও তো হতে পারে!
২।
আর সত্য হলেও ভগবান কেন শুধু মাছ, কচ্ছপ ও শূকর হয়ে জন্মাবেন, অন্য কোন জলজ, উভচর বা স্থলজ প্রানী কেন হলেন না।
প্রথমত, কাল্পনিকতার প্রশ্নটি আসবে বিবর্তনবাদীদের পক্ষ থেকে। কিন্ত ভেবেছেন কি, একটা সূত্র ধরে জেলী থেকে সভ্য মানুষ পর্যন্ত যে ক্রম তা কি নিছকই কল্পনা নয়। আর দ্বিতীয়ত এখানে জলজ প্রাণীগুলোর অধিপতি হিসেবে মৎস্য অবতারকে, উভচর প্রাণীর অধিপতি হিসেবে কূর্ম অবতারকে এবং স্থলজ প্রাণীর অধিপতি হিসেবে শূকরকে দেখানো হয়েছে। তৎপর মানুষের পূর্বরূপ বা এ্যাপজাতীয় রূপের কল্পনায় নৃসিংহ অবতার।
যার অবয়ব মানুষের মত হলেও সিংহের মত হিংস্র পশুবৃত্তি সম্পন্ন রূপের প্রকাশ। তাহলে কি পাখি, সাপ, ডাইনোসর, প্রভৃতির ভিতর অবতারের আবশ্যকতা ছিল না। অবশ্যই ছিল। গীতা অনুসারে পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ আরও বৈজ্ঞানিকভাবে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে যখন যখন ধর্মের গ্লানি হবে তখন তখনই তিনি আসতে পারেন, অর্থাৎ তার সংখ্যা অর্নিণেয়।
আবার উল্লেখ করেছেন, যে যেভাবে তার ভজনা করেন, সেইভাবে তিনি তা গ্রহন করেন। অর্থাৎ তা শুধু মানুষ নয়, পাখি, মাছ, পশু সহ সমগ্র প্রাণীজগতের জন্য প্রযোজ্য। সব চেয়ে বড় প্রশ্ন তাহলে পৃথিবীর আদি মাতা-পিতা মনু বা শতরুপার স্থান কোথায়? ধর্ম তো বলে তারাই আদি পিতা এবং আদি মাতা। মিথ্যা নয়। আমরা মনুর পুত্র বলেই মনু+ষ্ণ = মানব জাতি বলে অভিহিত।
নৃ-তাত্ত্বিক গবেষণা বলে প্রত্যেক নৃ-তাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী যা একই গোষ্ঠীর ধারাকে বজায় রেখে চলে বা এখনও চলেছে তাদের মধ্যে Headman বা গোষ্ঠী প্রধান বলে একজন থাকেন যিনি সব নিয়ন্ত্রন করেন। অনেক ক্ষেত্রে কোন কোন গোষ্ঠী প্রধানকে নিয়ে বা তার প্রভাবকে নিয়ে বহুদিন মুখে মুখে গল্প প্রচলিত থাকে। তৈরী হয় মিথ। যাকে তারা তাদের গোষ্ঠীর উৎপত্তির নেতা স্বরপ ধরে নেয় এবং তাকে তদ্রুপ সম্মানও করে। ঠিক তেমনিই ভারতীয় আর্য্যসমাজের প্রথম রূপকার ভগবান মনু।
এর অর্থ এই নয় যে, তার কোন পিতা-মাতা ছিল না। আবার তার যোগ্য সহধর্মিনী ছিলেন মা শতরূপা। তাই মনু রচিত মনুসংহিতা আজও আর্য সংস্কার সমুহের প্রধান নিদের্শক গ্রন্থ । এখন কথা হচ্ছে, আধুনিক ‘ব’ কলম শিক্ষিতরা যেটা হরহামেশাই বলে থাকেন যে, হয়তো দশাবতারের কল্পনা বিবর্তনবাদ তত্ত্বকে অনুসরণ করেই করা হয়েছে। অর্থাৎ তত্ত্ব আগে, শাস্ত্র পরে তৈরী হয়েছে ।
কিন্ত না, বিবর্তনবাদ তত্ত্ব শুরুই হয় মাত্র ১৫১ বছর পূর্বে। মূলত তার কয়েক হাজার পূর্বেই বিবর্তনবাদের অস্তিত্ব বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন আর্য্যঋষিরা, কিন্ত আধ্যাত্মিক চিন্তার প্রাধান্যের কারণে এর রূপটি ছিল অন্যরকম। পদ্মপুরানের বর্ননায় এসব প্রাণীর সংখ্যাও
নির্দিষ্ট। যুগে যুগে বিভিন্ন অবতার ভগবান বা পুরুষোত্তমেরা এসবের যুগোপযোগী বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন। সর্বশেষ পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল-"Theory of evolution কি ?" ঠাকুর বললেন-"From the fine to the gross and from the gross to the fine. এই যে being এর ক্রমবিবর্তন একেই evolution বলে।
অর্থাৎ Being এর external becoming কে evolution বলে । এই evolution চলছে beyond and environment যে Stimulus দিচ্ছে being এর উপর তার দরুন জীব তার evolution কে Control, Manipulate, profitably manage করতে চেষ্টা করছে সৃষ্টির আদি থেকে। কারন এই পরিবেশে তাকে দিচেছ পদে-পদে আঘাত। এর ফলে হচ্ছে জীবের further progress towards struggle করার জন্য তাদের শরীর ও মনের একটা পরিবর্তন আসছে, যার ফলে বেঁচে থাকতে থাকতেই তাদের Appearance এর একটা palpable পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এ পরিবর্তন পরিস্কার হয়ে ফুটে উঠেছে তাদের Descendants দের ভিতর দিয়ে।
কোন particular environment কে manage করতে হলে শারীরিক বিধানের ভিতর যে যে পরিবর্তন দরকার সেখানে তেমন পরিবর্তন সবটাই দেখা দিয়েছে এবং মনের পরিবর্তন এসেছে ঐ অনুপাতে। পূবর্তন যারা
struggle করে করে মারা গেল হয়তো তাদের জীবন environment কে control করতে তেমনভাবে সক্ষম হলো না। তারা তাদের ঐ মনের অবস্থা নিয়ে জন্মান Descendants হয়ে। Science ঐ আগের টুকু স্বীকার করে। কিন্ত বর্ণাশ্রমধর্মী আর্যেরা জন্মান্তরবাদ স্বীকার করে ঐ জিনিষটাকে আরও ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন।
এই ক্রমপরিবর্তনের ধারা চলতে চলতে এক স্তরে এ্যাপমেন এ পৌঁছেছে। এরপর থেকেই মানুষের সৃষ্টি। এমনকি এখনও অনেক অনেক এ্যাপমেন এর মত মুখ দেখা যায় । গায়ে লোমও ঠিক পশুর মতন। সৃষ্টি একই সময় হয়নি বলে এবং এখনও সমানভাবে চলছে বলে জীবের মধ্যে কতগুলো মানুষ অবস্থায় এসে পৌছে গেছে, কতক মানুষ অবস্থার দিকে চলছে, কতক Embryonic stage-এ এখনও আছে।
মানুষ আমরা আস্তে আস্তে এই evolution এর ফলে superior man এ পরিবর্তিত হচ্ছি। " এত সহজে, ধারাবাহিকভাবে এবং সংক্ষিপ্ত পরিসরে Theory of evolution ডারুইনের বইতে বটেই, নৃবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে কোন পাঠ্যবইয়ে বা নৃবৈজ্ঞানিক বইয়ে আমি পাইনি। সবচেয়ে বিস্ময়কর কথা হচ্ছে ঠাকুর তিনটি ধাপ স্পষ্ট করেছেন। Apeman>>>Man>>>Superior Man যার শেষ স্তরটি বিবর্তনবাদীদের ধারনায় এখনও এসেছে কিনা সন্দেহ। কাল্পনিক Super man বা Alien কে যদিও কেউ কেউ কল্পনা করে থাকেন।
তবে যেহেতু পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, আচরণগত প্রভৃতি বিভিন্ন পরিবর্তন দ্বারা বিবর্তনের ধারা ক্রমবহমান। তাই Super man এর পরিপূর্ণ রূপ পাওয়া যায় না। অর্থাৎ খাদ্যভ্যাসে কি পরিবর্তন আসবে? পরিবেশে কি পরিবর্তন আসবে? কিংবা পোশাক বা আচরণে কি পরিবর্তন আসবে? ঠাকুর কিন্ত Super man হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকগুলো সূচক স্পষ্ট করেই গেছেন। যেমন খাদ্যের দিক থেকে যদি দেখা হয়, তবে একটি পর্যায় লক্ষ্যনীয় ঃ কাঁচা মাছ-মাংস আহার >>> সিদ্ধ মাছ-মাংস আহার>>>রান্না মাছ-মাংস আহার>>>নিরামিষ আহার। বর্তমানে যা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খাদ্যমান ও পুষ্টিগুনের কারণে, ধর্মীয় কারণ তো আছেই।
আবার এই বিবর্তনের ধারাকেও ঠাকুর সর্বদা চলমান বলেছেন, যা বিবর্তনবাদের মূলকথা। কিন্ত বিবর্তনবাদ নিজেই জেলী থেমে মানুষে যেন থেমে গেছে। অর্থাৎ ধর্মীয় ব্যাখ্যায় যেমন মানুষকেই সর্বশ্রেষ্ঠ বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, বিবর্তনবাদীরাও তার বাইরের বিবর্তন যেন ব্যাখ্যা করতে অসমর্থ। ঠাকুর প্রথম নৃবিজ্ঞানী যিনি মানুষের পরেও বিবর্তন সম্ভব এবং তা কিভাবে তার ব্যাখ্যা করে গেছেন। ঠাকুরের মতে, বিবর্তন সর্বদা উন্নতিমূখী হবে।
তার মতে, "Revolution এর মধ্যে evolution নাও
থাকতে পারে। হয়তো প্লাবিত করে দিল কিন্ত কেন্দ্রে আকৃষ্ট করল না। কিন্ত বিবর্তিত হতে গেলে সুকেন্দ্রিক হওয়াই চাই। " অর্থাৎ পূর্বে থেকে Headman কে মেনে যেমন গোষ্ঠীগুলো টিকে ছিল, সেখানে Headman গোষ্ঠীর সবকিছুর নিয়ন্তা ছিলেন। সেখানে বর্তমানে আধুনিক তথা অত্যাধুনিক যুগে গোষ্ঠীর সংকীর্ণতা পেরিয়ে মানুষ বহুজাতিক সংমিশ্রনে কিংবা বিশ্বায়নের একজন সদস্য।
তাই তার বিবর্তনের জন্য তেমনই একজন Headman প্রয়োজন যার মধ্যে আছে দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র, ব্যবসায় শিক্ষা, অর্থনীতি, কৃষি-শিল্প, যৌন শাস্ত্র, স্বাস্থ্য ও সদাচার সূত্র তথা জীবনের বাঁচা-বাড়ার লওয়াজিমার সকল দিক। এমন ব্যক্তিই হতে পারে বর্তমান বিশ্বায়িত সমাজের মানুষের জন্য যোগ্যতম আদর্শ বা Headman। আর এভাবেই তো গড়ে উঠে সমাজ ক্রমবিবর্তনের পথে। তাই যুগাবতার পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র এসব অবতারবাদকে বিবর্তনবাদের উদাহরণ হিসেবেই দেখেছেনএবং সুন্দরভাবে সমাজের বিবর্তনের সংজ্ঞায়ন করেছেন,“ এক আদেশে চলে যারা, তাদের নিয়ে সমাজ গড়া। ”বিবর্তনবাদ-মানব তথা প্রাণীজগতের উদ্ভবের নতুনতত্ত্ব।
যা গড়ে ওঠে মূলতঃ ধর্মের বিরুদ্ধ কিছু মতবাদ নিয়েই। হিফেসটাস, সিসেরা, প্লুটার্ক, কোপার্নিকাস, জি ব্রুনো, গ্যালিলিও প্রভৃতিরা সূচনা করেন সূর্য ও পৃথিবী কেন্দ্রীক বিরোধিতা, যা বাইবেলকে সরাসরি বিরোধিতা করে। ফলে পরবর্তীতে ডারউইন যখন তার বিবর্তনবাদ তত্ত্ব প্রকাশ করেন, তা স্বভাবতই ধর্মগ্রন্থের বর্ণনার বিরোধী দিক হিসেবে গৃহীত হয় ১৯৫৯ সালে তার Origin of species by means of Natural selection এবং ১৮৭১ সালে Decent of man বই দ্বারা তার তত্বটিকে তিনি স্পষ্ট করেন। যদিও তখন থেকেই তা ধর্মের বিরুদ্ধে ছাড়িয়ে যায় প্রধানত ১৮৬০ সালের ৩০ জন ডারুইনবাদ নিয়ে প্রকাশ্য বিতর্কের জন্য যার আয়োজন করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের Association for the Advancement of science পক্ষে বিবর্তনবাদী T.H. Haxli বিপক্ষে বিশপ Wilberforce ১৯২৭ সালের জানুয়ারীতে মামলা হয়, যা নিষ্পত্তি হয় ৬০ এর দশকে যেখানে বিবর্তনবাদ পড়ানোর পাশাপাশি বাইবেলীয় সৃষ্টিতত্ত্ব পড়ানোর ও সিদ্ধান্ত হয়। তবে প্রকৃত সেতুবন্ধনটি কেউ খোঁজার চেষ্টাও করেনি।
তুলনামূলক ভাবে দেখা যায় যে বিবর্তনবাদ অনুসারে প্রথমে জলজ জীব হিসেবে ছোট কনিকা বা জেলির ন্যায় কোষের উদ্ভব হয়। এর কিছু কিছু সাগরের নীচে মৃত বা জীবিত জমে শ্যাওলা জাতীয় উদ্ভিদের জন্ম দেয়, যা দেখে সমুদ্রের নীচের বৃক্ষরাজির উদ্ভব। ক্রমান্বয়ে ম্যানগ্রোভ জাতীয় বৃক্ষ এবং স'লজ বৃক্ষ। আবার ঐ জেলী গুলোই ক্রমান্বয়ে মৎস্যজাতীয় প্রাণীতে পরিনত হয়। ছোট মাছ থেকে বড় মাছ।
মৎস্য জাতীয় জলজ প্রাণী থেকে উভচর প্রাণীর উদ্ভব যেমনঃ ব্যাঙ, কচ্ছপ। তার থেকে উদ্ভব সরীসৃপ প্রাণীর যেমনঃ সাপ, টিকটিকি ডাইনোসোর বা কিংবা পেঙ্গুইন, এমু, উটপাখি প্রভৃতি পাখির, যা পরবর্তীতে পূর্ণ পাখিতে রুপান-রিত হয়। আবার, সরীসৃপ থেকে স-ন্যপায়ী বৃহদাকার প্রানীর উদ্ভব হয় শূকর, বাঘ, হাতি, তৃণভোজী বৃহদাকার বিলুপ্ত প্রাণী সমূহের এরই একটা অংশ এ্যাপ জাতীয় উপধারা যেখানে গরিল, বানর শিম্পাজী প্রভৃতি অন-ভূক্ত। এরই ধারায় আদিম মানুষ ক্রমান্বয়ে সভ্য মানুষ। পক্ষান-রে সনাতন ধর্মের বা আর্য্যমতের শাস্ত্র শতপথও তৈত্তিরীয় সংহিতা কিংবা বায়ু পুরাণ বা সৌরপুরাণও তাই বলে।
মুলতঃ আর্যশাস্ত্র সমূহ বিবর্তনবাদের সমর্থন বা ইঙ্গিত পূর্বেই দিয়েছিল।
পূর্বোক্ত বিবর্তনবাদের ধারা বিবরণীতে ৫টি ধরণ দেখতে পাই যার সাথে শাস্ত্র সমুহের অবতারের সামঞ্জস্য মেলে। যেমন:
১.জলজ প্রাণী (মৎস্য জাতীয়)--------মৎস্য অবতার (মাছ)
২.উভচর প্রাণী (কচ্ছপ, ব্যাঙ, প্রভৃতি)-কূর্ম অবতার (কচ্ছপ)
৩.স্থলজ প্রাণী (শূকর, গরু, সিংহ প্রভৃতি)-----বরাহ অবতার (শূকর)
৪.এ্যাপজাতীয় প্রাণী (শিম্পাজী বা বন্যদশার মানুষ)--------- নৃসিংহ অবতার(কল্পিত রুপ)
৫.মানবজাতি (বর্বরদশা) ------------------ বামন অবতার
৬.মানবজাতি (সভ্যতা)-------রাম অবতার ও তৎপরবর্তীগণ
অর্থাৎ জলজ প্রাণীদেরকে সঠিক পথের নির্দেশনা দিতে পরমপিতাকে বা ভগবানকে মৎস্যজাতীয় প্রাণী হয়েই জন্মাতে হয়েছে। কারণ মানুষের কথা তো আর মাছে বোঝে না। এভাবেই উভচর প্রাণীর উদ্ভব হলে তিনি কচছপ জাতীয় প্রাণী হয়েই জন্মগ্রহন করেন।
এক্ষেত্রে মূল বিষয় হল তিনি উভচর প্রাণীদের জন্য আসেন। পরে স্থলজ প্রাণী সমূহের উদ্ভব হলে তিনি তাদেরকে ও উদ্ধার করতে অবতীর্ণ হন শূকররুপী স্থলজ জীববেশে। পরবর্তীতে যখন স্তন্যপায়ী বা এ্যাপজাতীয় প্রানীর উদ্ভব হয়, তখন থেকে বনমানুষ পর্যন্ত তাদেরকে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে দেখা হয় না। অর্থাৎ দেখতে ক্রমান্বয়ে মানুষের মত হলেও পশুপ্রবৃত্তি বিদ্যমান ছিল তাদের খাদ্যাভ্যাস বাসস্থান, যৌনক্রিয়া প্রভৃতিতে। ঠিক এরই স্বয়ম্ভু যেন অর্ধেক নর(মানুষ)+ অর্ধেক সিংহ(পশু)=নৃসিংহরূপ।
পরবর্তীতে সভ্য মানুষের মধ্যে বিভিন্ন অবতারের আর্বিভাব।
যাহোক, এখানে দুটি বিতর্ক আসতে পারে।
১। এগুলো কাল্পনিকও তো হতে পারে!
২। আর সত্য হলেও ভগবান কেন শুধু মাছ, কচ্ছপ ও শূকর হয়ে জন্মাবেন, অন্য কোন জলজ, উভচর বা স্থলজ প্রানী কেন হলেন না।
প্রথমত, কাল্পনিকতার প্রশ্নটি আসবে বিবর্তনবাদীদের পক্ষ থেকে। কিন্ত ভেবেছেন কি, একটা সূত্র ধরে জেলী থেকে সভ্য মানুষ পর্যন্ত যে ক্রম তা কি নিছকই কল্পনা নয়। আর দ্বিতীয়ত এখানে জলজ প্রাণীগুলোর অধিপতি হিসেবে মৎস্য অবতারকে, উভচর প্রাণীর অধিপতি হিসেবে কূর্ম অবতারকে এবং স্থলজ প্রাণীর অধিপতি হিসেবে শূকরকে দেখানো হয়েছে। তৎপর মানুষের পূর্বরূপ বা এ্যাপজাতীয় রূপের কল্পনায় নৃসিংহ অবতার। যার অবয়ব মানুষের মত হলেও সিংহের মত হিংস্র পশুবৃত্তি সম্পন্ন রূপের প্রকাশ।
তাহলে কি পাখি, সাপ, ডাইনোসর, প্রভৃতির ভিতর অবতারের আবশ্যকতা ছিল না। অবশ্যই ছিল। গীতা অনুসারে পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ আরও বৈজ্ঞানিকভাবে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে যখন যখন ধর্মের গ্লানি হবে তখন তখনই তিনি আসতে পারেন, অর্থাৎ তার সংখ্যা অর্নিণেয়। আবার উল্লেখ করেছেন, যে যেভাবে তার ভজনা করেন, সেইভাবে তিনি তা গ্রহন করেন।
অর্থাৎ তা শুধু মানুষ নয়, পাখি, মাছ, পশু সহ সমগ্র প্রাণীজগতের জন্য প্রযোজ্য। সব চেয়ে বড় প্রশ্ন তাহলে পৃথিবীর আদি মাতা-পিতা মনু বা শতরুপার স্থান কোথায়? ধর্ম তো বলে তারাই আদি পিতা এবং আদি মাতা। মিথ্যা নয়। আমরা মনুর পুত্র বলেই মনু+ষ্ণ = মানব জাতি বলে অভিহিত।
নৃ-তাত্ত্বিক গবেষণা বলে প্রত্যেক নৃ-তাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী যা একই গোষ্ঠীর ধারাকে বজায় রেখে চলে বা এখনও চলেছে তাদের মধ্যে Headman বা গোষ্ঠী প্রধান বলে একজন থাকেন যিনি সব নিয়ন্ত্রন করেন।
অনেক ক্ষেত্রে কোন কোন গোষ্ঠী প্রধানকে নিয়ে বা তার প্রভাবকে নিয়ে বহুদিন মুখে মুখে গল্প প্রচলিত থাকে। তৈরী হয় মিথ। যাকে তারা তাদের গোষ্ঠীর উৎপত্তির নেতা স্বরপ ধরে নেয় এবং তাকে তদ্রুপ সম্মানও করে। ঠিক তেমনিই ভারতীয় আর্য্যসমাজের প্রথম রূপকার ভগবান মনু। এর অর্থ এই নয় যে, তার কোন পিতা-মাতা ছিল না।
আবার তার যোগ্য সহধর্মিনী ছিলেন মা শতরূপা। তাই মনু রচিত মনুসংহিতা আজও আর্য সংস্কার সমুহের প্রধান নিদের্শক গ্রন্থ । এখন কথা হচ্ছে, আধুনিক ‘ব’ কলম শিক্ষিতরা যেটা হরহামেশাই বলে থাকেন যে, হয়তো দশাবতারের কল্পনা বিবর্তনবাদ তত্ত্বকে অনুসরণ করেই করা হয়েছে। অর্থাৎ তত্ত্ব আগে, শাস্ত্র পরে তৈরী হয়েছে । কিন্ত না, বিবর্তনবাদ তত্ত্ব শুরুই হয় মাত্র ১৫১ বছর পূর্বে।
মূলত তার কয়েক হাজার পূর্বেই বিবর্তনবাদের অস্তিত্ব বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন আর্য্যঋষিরা, কিন্ত আধ্যাত্মিক চিন্তার প্রাধান্যের কারণে এর রূপটি ছিল অন্যরকম। পদ্মপুরানের বর্ননায় এসব প্রাণীর সংখ্যাও
নির্দিষ্ট। যুগে যুগে বিভিন্ন অবতার ভগবান বা পুরুষোত্তমেরা এসবের যুগোপযোগী বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন। সর্বশেষ পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল-"Theory of evolution কি ?" ঠাকুর বললেন-"From the fine to the gross and from the gross to the fine. এই যে being এর ক্রমবিবর্তন একেই evolution বলে। অর্থাৎ Being এর external becoming কে evolution বলে ।
এই evolution চলছে beyond and environment যে Stimulus দিচ্ছে being এর উপর তার দরুন জীব তার evolution কে Control, Manipulate, profitably manage করতে চেষ্টা করছে সৃষ্টির আদি থেকে। কারন এই পরিবেশে তাকে দিচেছ পদে-পদে আঘাত। এর ফলে হচ্ছে জীবের further progress towards struggle করার জন্য তাদের শরীর ও মনের একটা পরিবর্তন আসছে, যার ফলে বেঁচে থাকতে থাকতেই তাদের Appearance এর একটা palpable পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এ পরিবর্তন পরিস্কার হয়ে ফুটে উঠেছে তাদের Descendants দের ভিতর দিয়ে। কোন particular environment কে manage করতে হলে শারীরিক বিধানের ভিতর যে যে পরিবর্তন দরকার সেখানে তেমন পরিবর্তন সবটাই দেখা দিয়েছে এবং মনের পরিবর্তন এসেছে ঐ অনুপাতে।
পূবর্তন যারা
struggle করে করে মারা গেল হয়তো তাদের জীবন environment কে control করতে তেমনভাবে সক্ষম হলো না। তারা তাদের ঐ মনের অবস্থা নিয়ে জন্মান Descendants হয়ে। Science ঐ আগের টুকু স্বীকার করে। কিন্ত বর্ণাশ্রমধর্মী আর্যেরা জন্মান্তরবাদ স্বীকার করে ঐ জিনিষটাকে আরও ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন। এই ক্রমপরিবর্তনের ধারা চলতে চলতে এক স্তরে এ্যাপমেন এ পৌঁছেছে।
এরপর থেকেই মানুষের সৃষ্টি। এমনকি এখনও অনেক অনেক এ্যাপমেন এর মত মুখ দেখা যায় । গায়ে লোমও ঠিক পশুর মতন। সৃষ্টি একই সময় হয়নি বলে এবং এখনও সমানভাবে চলছে বলে জীবের মধ্যে কতগুলো মানুষ অবস্থায় এসে পৌছে গেছে, কতক মানুষ অবস্থার দিকে চলছে, কতক Embryonic stage-এ এখনও আছে। মানুষ আমরা আস্তে আস্তে এই evolution এর ফলে superior man এ পরিবর্তিত হচ্ছি।
" এত সহজে, ধারাবাহিকভাবে এবং সংক্ষিপ্ত পরিসরে Theory of evolution ডারুইনের বইতে বটেই, নৃবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে কোন পাঠ্যবইয়ে বা নৃবৈজ্ঞানিক বইয়ে আমি পাইনি। সবচেয়ে বিস্ময়কর কথা হচ্ছে ঠাকুর তিনটি ধাপ স্পষ্ট করেছেন। Apeman>>>Man>>>Superior Man যার শেষ স্তরটি বিবর্তনবাদীদের ধারনায় এখনও এসেছে কিনা সন্দেহ। কাল্পনিক Super man বা Alien কে যদিও কেউ কেউ কল্পনা করে থাকেন। তবে যেহেতু পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, আচরণগত প্রভৃতি বিভিন্ন পরিবর্তন দ্বারা বিবর্তনের ধারা ক্রমবহমান।
তাই Super man এর পরিপূর্ণ রূপ পাওয়া যায় না। অর্থাৎ খাদ্যভ্যাসে কি পরিবর্তন আসবে? পরিবেশে কি পরিবর্তন আসবে? কিংবা পোশাক বা আচরণে কি পরিবর্তন আসবে? ঠাকুর কিন্ত Super man হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকগুলো সূচক স্পষ্ট করেই গেছেন। যেমন খাদ্যের দিক থেকে যদি দেখা হয়, তবে একটি পর্যায় লক্ষ্যনীয় ঃ কাঁচা মাছ-মাংস আহার >>> সিদ্ধ মাছ-মাংস আহার>>>রান্না মাছ-মাংস আহার>>>নিরামিষ আহার। বর্তমানে যা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খাদ্যমান ও পুষ্টিগুনের কারণে, ধর্মীয় কারণ তো আছেই। আবার এই বিবর্তনের ধারাকেও ঠাকুর সর্বদা চলমান বলেছেন, যা বিবর্তনবাদের মূলকথা।
কিন্ত বিবর্তনবাদ নিজেই জেলী থেমে মানুষে যেন থেমে গেছে। অর্থাৎ ধর্মীয় ব্যাখ্যায় যেমন মানুষকেই সর্বশ্রেষ্ঠ বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, বিবর্তনবাদীরাও তার বাইরের বিবর্তন যেন ব্যাখ্যা করতে অসমর্থ। ঠাকুর প্রথম নৃবিজ্ঞানী যিনি মানুষের পরেও বিবর্তন সম্ভব এবং তা কিভাবে তার ব্যাখ্যা করে গেছেন। ঠাকুরের মতে, বিবর্তন সর্বদা উন্নতিমূখী হবে। তার মতে, "Revolution এর মধ্যে evolution নাও
থাকতে পারে।
হয়তো প্লাবিত করে দিল কিন্ত কেন্দ্রে আকৃষ্ট করল না। কিন্ত বিবর্তিত হতে গেলে সুকেন্দ্রিক হওয়াই চাই। " অর্থাৎ পূর্বে থেকে Headman কে মেনে যেমন গোষ্ঠীগুলো টিকে ছিল, সেখানে Headman গোষ্ঠীর সবকিছুর নিয়ন্তা ছিলেন। সেখানে বর্তমানে আধুনিক তথা অত্যাধুনিক যুগে গোষ্ঠীর সংকীর্ণতা পেরিয়ে মানুষ বহুজাতিক সংমিশ্রনে কিংবা বিশ্বায়নের একজন সদস্য। তাই তার বিবর্তনের জন্য তেমনই একজন Headman প্রয়োজন যার মধ্যে আছে দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র, ব্যবসায় শিক্ষা, অর্থনীতি, কৃষি-শিল্প, যৌন শাস্ত্র, স্বাস্থ্য ও সদাচার সূত্র তথা জীবনের বাঁচা-বাড়ার লওয়াজিমার সকল দিক।
এমন ব্যক্তিই হতে পারে বর্তমান বিশ্বায়িত সমাজের মানুষের জন্য যোগ্যতম আদর্শ বা Headman। আর এভাবেই তো গড়ে উঠে সমাজ ক্রমবিবর্তনের পথে। তাই যুগাবতার পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র এসব অবতারবাদকে বিবর্তনবাদের উদাহরণ হিসেবেই দেখেছেনএবং সুন্দরভাবে সমাজের বিবর্তনের সংজ্ঞায়ন করেছেন,“ এক আদেশে চলে যারা, তাদের নিয়ে সমাজ গড়া। ” ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।