আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সনাতন ধর্ম (হিন্দু ) ও ইসলাম এর মধ্যে যোগ সম্পর্ক-৭ (নূহ (আঃ))

"A little knowledge of science makes man an atheist, but an in-depth study of science makes him a believer in God." Francis Bacon.
'যখনই কল্যাণকর কাজ ও সদগুণাবলী কম হয়ে যায় এবং পাপাচারের প্রসার ঘটে, তখন অবশ্যই সকল দেবতাদের বড় দেবতা পথ প্রদর্শনের জন্য একজন অবতার প্রেরণ বা একজন কৃতি পুরুষকে সৃষ্টি করেন । ' (শ্রীমত ভগবত পুরাণঃ ৯-২৪-৫৬) এই ছিল দুনিয়াতে রাসূল প্রেরণর মূল উদ্দেশ্য । এখন নূহ (আঃ) এবং তার সময়ে সংঘটিত মহাপ্লাবনের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত হিন্দুদের ধর্মগ্রন্হসমূহ থেকে উদ্ধৃতি ও প্রমাণ পেশ করছি । সাধারণভাবে এটা সকল বিদগ্ধ হিন্দু জানে যে, অতীতে এক বিশাল ব্যক্তিত্ব, পবিত্র জীবন ও বিখ্যাত ব্যক্তি অতীত হয়েছেন যাকে মানুষ মহানুভূ বলে স্বরণ করে । তার সময়ে আগত মহাপ্লবনের ধ্বংস থেকে বেচে যাওয়া একটি নৌযানের আরোহিদের মধ্যে ছিল সাত জন বিখ্যাত ঋষি ।

মহানুভু দুটি শব্দ দ্বারা গঠিতঃ মহা+নুভূ । মহা অর্থ বড় আর নুভূ-র অর্থ নিঃসন্দেহে নূহ (আঃ) । (Dubois in Hindu Manners, Customs & Ceremonies, p-48) 'নূহ (আঃ) এর সময় সংঘটিত মহপ্লাবণের অব্যবহিত পরেই হিন্দুস্হান (বা ভারতবর্ষ) আবাদ হয়ে যায় । (প্রাগুপ্ত, পৃ.১০০) ' এ সময় ভগবান মনুকে এইভাবে বললেনঃ ঠিক আছে, তুমি আমাকে ভাল করে চিনে ফেলেছ । হে পৃথিবীর রক্ষাকর্তা পরিচালক ! কিছুক্ষণের মধ্যেই পাহাড় পর্বত ও সকল খনিসহ পৃথিবী পানিতে ডুবে যাবে ।

সুতরাং, হে পৃথিবীর নেতা, সকল জীব-জন্তু ও মানবকুলের পরিচালক ! মানবকূল সহ সকল জীবজন্তু ও কীটপতঙ্গকে বাচিয়ে রাখার জন্য সকল দেবতাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এই মহা নৈাযানটিকে তৈরী করা হয়েছে । হে বিশ্বস্ত প্রতিনিধি , যত প্রকার জীব-জন্তু আছে, সেসব অসহায় প্রাণীকে এই জাহাজে আরোহণ করিয়ে তুমি তাদেরকে রক্ষা করো । ' (মৎস্য পুরাণঃ২৫-৩৫) 'অতঃপর সাতটি সমুদ্র সম্মিলিতভাবে একটির সাথে অপরটির মিলিত হয়ে যাবে এবং পুরো তিনটি দুনিয়া একত্রিত হয়ে যাবে । হে বিশ্বস্ত দূত আমার! ঐ প্রলংকর প্লাবন যখন শুরু হয়ে যাবে তখন ঐ বেদরূপী মহা নৈাযানে তুলে নিয়ো সকল জীবজন্তু, সকল প্রকারের খাদ্য খাবারের বীজগুলি এবং নিষ্পাপ মানব সন্তানদেরকে । ' (প্রাগুপ্ত শ্লোকঃ ১০-১১) 'হে অগ্নি ! নূহ আপনার রিসালাতের সত্যতা ঘোষণা করছেন ।

" (ঋকবেদঃ ৪-১৩-১) উপরোক্ত মন্ত্রের আলোকে বেদ গ্রন্হসমূহের তর্জমাকারী গ্রীফিত তার ইংরেজী অনুবাদে একটি টীকা লিখেছেন । বলছেন, নূহ এক বিস্ময়কর ব্যাক্তিত্ব এবং গোটা মানবমন্ডলীর প্রতিনিধি ছিলেন । তিনি মানবজাতির পিতা (অর্থাৎ মহাবিপ্লবের পরে তাকে দ্বিতীয় আদম এবং প্রথম আইন কানুন পরিচালনাকারী )। 'হে অগ্নি ! আমি আপনাকে নূহ এর মতই ধর্মীয় নেতা, দায়ী (ধর্ম প্রচারক), ধর্ম শিক্ষক এবং প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি মনে করি । ' ( ঋকবেদঃ১১-৪৪-১) 'হে অগ্নি ! নূহ আপনার জ্যোতি সমগ্র মানবগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন ।

" (প্রাগুপ্তঃ১৯-৩৬-১) চারটি বেদের মধ্যে এই ভাবে ৭৫টি স্হানে নূহ (আঃ) এর নাম উচ্চারিত হয়েছে । ঋকবেদ এ ৫১ টি স্হলে, যর্জুবেদে -এ দু্ই জায়গায়, ১৪ জায়গায় অথর্ব বেদে এবং ৮ জায়গায় সাম বেদে হযরত নূহ (আঃ) এর নাম স্বরণ করা হয়েছে । বিদ্রিঃ নূহ (আঃ) এবং উনার কিস্তির সন্ধান লাভ সম্পর্কিত আমার এই পোষ্টটি পড়ে দেখতে পারেন । ঘৃণার আচ্ছাদন তুলে নাও পুনরায় পরষ্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে যারা মিলিয়ে দাও তাদের হে মহান ! বিচ্ছিন্ন ও বিভক্তির চিত্রটিকে মুছে দাও কালের পর্দা থেকে । .................-ড.ইকবাল ।

--চলবে... সূত্র-- --জগদগুরু মুহাম্মদ (সাঃ) , শায়খুল উবুদিয়া ইমাম সাইয়েদ মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ ইবনে আবদুহু আল-হোসাইনী । রেনেসাঁ পাবলিকেশন্স ।
 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.