আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীনতার গানঃ যেসকল গান চেতনা জাগায় এখনও!

অদ্ভূত বিষয়গুলোতে বিস্ময়াভূত হওয়া একটি চমকপ্রদ ব্যাপার!! সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলে “সাংস্কৃতিক ও ক্রিড়া প্রতিযোগীতার পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান” এ একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে অংশ নিয়েছিলাম । সাধারণত হল গুলোর অনুষ্ঠান বেশ জমজামাট হয়। দেশি-বিদেশি সকল গানেরই সমন্বয়ে তৈরি হয় অনুষ্ঠান। সবাই বেশ উপভোগও করে থাকে। উক্ত অনুষ্ঠানটি ছিল আমাদের এই বিজয়ের মাসেই।

তাই সমগ্র অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে দেশাত্মকবোধক গান, নাচ ও অভিনয়ের সমন্বয়ে। অনুষ্ঠানের প্রথমেই ছিল বাংলার প্রকৃতি ও প্রথার সমন্বয়ে তৈরি, যেখানে হঠাৎ করে পাক হানাদাররা আঘাত হানে। ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেয় বাংলাকে। তবে বাংলার মানুষেরা পিছু হটে নি। নয় মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে ঠিকই বিজয় ছিনিয়ে আনে।

অত্যন্ত সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা একনজরে আমাদের বাংলাদেশকে দেখে সত্যিই মন ভরে গেছে। তারপরপরই হল দেশাত্মকবোধক গান “সব ক’টা জানালা খুলে দাও না...”। হলের প্রতিভাবানদের কন্ঠে দেশের গান/স্বাধীনতার গান শুনে এক মুহুর্ত যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম একাত্তরে। গানের সাথে কন্ঠ মিলাচ্ছিলাম বসে বসে। কিন্তু সবটা ঠিক মত হয়ে উঠছিল না, পারছিলামও না।

আর তখনি ঠিক করলাম, একাত্তরের গান গুলোর লিরিক্স সব একসাথে করব। আর সেই চেতনা থেকেই বিভিন্ন অনলাইন সাইট ঘেটে একত্র করলাম আমার বিজয়ের গান, স্বাধীনতার গান, আমার এই দেশের গান, স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষের গান। সবকটা জানালা খুলে দাও না শিল্পীঃ সাবিনা ইয়াসমিন সুরকারঃ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবল গীতিকারঃ নজরুল ইসলাম বাবু সবকটা জানালা খুলে দাওনা আমি গাইব গাইব বিজয়েরই গান ওরা আসবে চুপি চুপি যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ। । চোখ থেকে মুছে ফেল অশ্রুটুকু এমন খুশির দিনে কাঁদতে নেই হারানো স্মৃতি বেদনাতে একাকার করে মন ডাক দিলে ওরা আসবে চুপি চুপি যারা এই দেশটাকে কেউ যেন ভুল করে গেয়নাক মন ভাঙা গান।

। আজ আমি সারানিশি থাকব জেগে ঘরের আলো সব আঁধার করে। তৈরি রাখব আতর গোলাপ এদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে ওরা আসবে চুপি চুপি যারা এই দেশটাকে কেউ যেন ভুল করে গেয়নাক মন ভাঙা গান। । ...................................................................................................... আমার সোনার বাংলা গীতিকারঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুরকারঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি।

চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি। । ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে- ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি। । কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো- কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।

মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো, মরি হায়, হায় রে- মা, তোর বদনখানি মলিন হলে ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি। । ...................................................................................................... সেই রেললাইনের ধারে মেঠো পথটার পাড়ে শিল্পীঃ সাবিনা ইয়াসমিন সেই রেললাইনের ধারে মেঠো পথটার পাড়ে দাঁড়িয়ে এক মধ্যবয়সী নারী এখনও রয়েছে হাত বাড়িয়ে। খোকা ফিরবে ঘরে ফিরবে কবে ফিরবে নাকি ফিরবে না….. দৃষ্টি থেকে তার বৃষ্টি গেছে কবে শুকিয়ে সে তো অশ্রু মুছে আর গোপনে আচলে মুখ লুকিয়ে। শুধু শূন্যে চেয়ে থাকে যেন আকাশের সীমা ছাড়িয়ে খোকা ফিরবে ঘরে ফিরবে কবে ফিরবে নাকি ফিরবে না….. দশ্যি ছেলে সে যুদ্ধে গেল ফিরলো না আর আজো শূন্য হৃদয়ে তার গুমরে গুমরে যায় হাহাকার।

সে তো ভাবছে খোকা ফিরবে লাখ মরণের বাধা মারিয়ে খোকা আসবে ঘরে আসবে কবে আসবে নাকি আসবে না…..। । ...................................................................................................... আমায় গেঁথে দাওনা মাগো শিল্পীঃ রুনা লায়লা সুরকারঃ আলাউদ্দিন আলী গীতিকারঃ নজরুল ইসলাম বাবু আমায় গেঁথে দাওনা মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা আমি জনম জনম রাখব ধরে ভাই হারানোর জ্বালা আসি বলে আমায় ফেলে সেই যে গেল ভাই তিন ভুবনের কোথায় গেলে ভাইয়ের দেখা পাই দেবো তারই সমাধিতে আমি তোমরা হাতের মালা ভাই হারানোর জ্বালা তারই শোকে কোকিল ডাকে ফোটে বনের ফুল ফুল পাবনের মধুর তিথী কেঁদে হয় আকুল আজও তারই স্মরন করে সবাই সাজাই ফুলের ডালা ভাই হারানোর জ্বালা আমায় গেঁথে দাওনা মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা আমি জনম জনম রাখব ধরে ভাই হারানোর জ্বালা ...................................................................................................... এক সাগর রক্তের বিনিময়ে শিল্পীঃ স্বপ্না রায় গীতিকারঃ গোবিন্দ হালদার সুরঃ আপেল মাহমুদ এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলব না। দুঃসহ এ বেদনার কণ্টক পথ বেয়ে শোষণের নাগপাশ ছিঁড়লে যারা আমরা তোমাদের ভুলব না। যুগের নিষ্ঠুর বন্ধন হতে মুক্তির এ বারতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলব না।

কৃষাণ-কৃষাণীর গানে গানে পদ্মা-মেঘনার কলতানে বাউলের একতারাতে আনন্দ ঝংকারে তোমাদের নাম ঝংকৃত হবে। নতুন স্বদেশ গড়ার পথে তোমরা চিরদিন দিশারী রবে। আমরা তোমাদের ভুলব না। । ...................................................................................................... ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা শিল্পীঃ সমবেত কন্ঠে সুরকারঃ দ্বিজেন্দ্র লাল রায় গীতিকারঃ দ্বিজেন্দ্র লাল রায় ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা সে যে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি।

। চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা কোথায় উজল এমন ধারা কোথায় এমন খেলে তড়িৎ এমন কালো মেঘে ও তার পাখির ডাকে ঘুমিয়ে পড়ি পাখির ডাকে জেগে এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি। । এত স্নিগ্ধ নদী কাহার কোথায় এমন ধুম্র পাহাড় কোথায় এমন হরিৎ ক্ষেত্র আকাশ তলে মেশে এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায় বাতাস কাহার দেশে এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি। ।

ধনধান্যে …………………………………জন্মুভূমি পুষ্পে পুষ্পে ভরা শাখি কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি গুঞ্জরিয়া আসে অলি পুঞ্জে পুঞ্জে ধেয়ে তারা ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ফুলের মধু খেয়ে। । এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি। । ভায়ের মায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ ওমা তোমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি।

। এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি। । ...................................................................................................... তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর শিল্পীঃ সমবেত সংগীত (মূল সংগীত- আপেল মাহমুদ) গীতিকারঃ আপেল মাহমুদ সুরকারঃ আপেল মাহমুদ তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে(২) আমরা ক’জন নবীন মাঝি হাল ধরেছি শক্ত করে রে তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে জীবন কাটে যুদ্ধ করে প্রাণের মায়া সাঙ্গ করে জীবনের স্বাদ নাহি পাই ও ও ও ও ও ও ও ও ও ও ও ও জীবন কাটে যুদ্ধ করে প্রাণের মায়া সাঙ্গ করে জীবনের স্বাদ নাহি পাই ঘর-বাড়ির ঠিকানা নাই দিন-রাত্রি জানা নাই চলার সীমানা সঠিক নাই জানি শুধু চলতে হবে এ তরী বাইতে হবে আমি যে সাগর-মাঝি রে তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে জীবনের রঙে মনকে টানে না ফুলের ঐ গন্ধ কেমন জানি না জানি না জোছনার দৃশ্য চোখে পড়ে না না না না না না না তারাও তো ভুলে কভু ডাকে না জীবনের রঙে মনকে টানে না বৈশাখের ওই রুদ্র ঝড়ে আকাশ যখন ভেঙে পড়ে ছেঁড়া পাল আরও ছিঁড়ে যায় ও ও ও ও ও ও ও ও ও ও ও ও বৈশাখের ওই রুদ্র ঝড়ে আকাশ যখন ভেঙে পড়ে ছেঁড়া পাল আরও ছিঁড়ে যায় হাতছানি দেয় বিদ্যুত্‌ আমায় হঠাৎ কে যে শঙ্খ শোনায় দেখি ঐ ভোরের পাখি গায় তবু তরী বাইতে হবে খেয়া পারে নিতে হবে যতই ঝড় উঠুক সাগরে তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে(২) আমরা ক’জন নবীন মাঝি হাল ধরেছি শক্ত করে রে তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে……… ...................................................................................................... সুন্দর সুবর্ণ তারুন্য লাবন্য শিল্পীঃ সাবিনা ইয়াসমিন সুরকারঃ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল গীতিকারঃ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল সুন্দর সুবর্ণ তারুন্য লাবন্য অপূর্ব রূপসী রূপেতে অনন্য। আমার দু’চোখ ভরা স্বপ্ন ও দেশ তোমারই জন্য।

। থাকবে নাতো দুঃখ দারিদ্র বিভেদ-বেদনা-ক্রন্দন। । প্রতিটি ঘরে একই প্রশান্তি একই সুখের স্পন্দন। ।

তোমার জন্য হবো দুরন্ত তোমার জন্য শান্ত প্রহরী হয়ে দেব পাহারা যেথায় তোমার সীমান্ত। । ...................................................................................................... পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে কথাঃ গোবিন্দ হালদার সুরঃ সমর দাস পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল জোয়ার এসেছে জনসমুদ্রে রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। । বাঁধন ছেঁড়ার হয়েছে কাল, হয়েছে কাল, হয়েছে কাল, হয়েছে কাল।

। শোষণের দিন শেষ হয়ে আসে অত্যাচারীরা কাঁপে আজ ত্রাসে। । রক্তে আগুন প্রতিরোধ গড়ে রক্তে আগুন প্রতিরোধ গড়ে নয়া বাংলার নয়া সকাল, নয়া সকাল, নয়া সকাল। আর দেরি নয় উড়াও নিশান রক্তে বাজুক প্রলয় বিষাণ।

। বিদ্যুৎ গতি হউক অভিযান ছিঁড়ে ফেলো সব শত্রু জাল, শত্রু জাল, শত্রু জাল। ...................................................................................................... জয় বাংলা বাংলার জয় শিল্পীঃ শাহনাজ রহমাতুল্লাহ গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার সুরকার: আনোয়ার পারভেজ জয় বাংলা বাংলার জয় জয় বাংলা বাংলার জয় হবে হবে হবে হবে নিশ্চয় কোটি প্রাণ এক সাথে জেগেছে অন্ধ রাতে নতুন সূর্য ওঠার এই তো সময় জয় বাংলা বাংলার জয় জয় বাংলা বাংলার জয় বাংলার প্রতি ঘর ভরে দিতে চাই মোরা অন্নে আমাদের রক্ত টগবগ দুলছে মুক্তির দীপ্ত তারুণ্যে নেই ভয় হয় হোক রক্তের প্রচ্ছদপট তবু করি না করি না করি না ভয় জয় বাংলা বাংলার জয় জয় বাংলা বাংলার জয় অশথের ছায়ে যেন রাখালের বাঁশরি হয়ে গেছে একেবারে স্তব্ধ চারিদিকে শুনি আজ নিদারুণ হাহাকার আর ওই কান্নার শব্দ শাসনের নামে চলে শোষণের সুকঠিন যন্ত্র বজ্রের হুংকারে শৃঙ্খল ভাঙতে সংগ্রামী জনতা অতন্দ্র আর নয় তিলে তিলে বাঙালির এই পরাজয় আমি করি না করি না করি না ভয় জয় বাংলা বাংলার জয় জয় বাংলা বাংলার জয় ভুখা আর বেকারের মিছিলটা যেন ওই দিন দিন শুধু বেড়ে যাচ্ছে রোদে পুড়ে জলে ভিজে অসহায় হয়ে আজ ফুটপাতে তারা ঠাঁই পাচ্ছে বার বার ঘুঘু এসে খেয়ে যেতে দেবো নাকো আর ধান বাংলার দুশমন তোষামোদী-চাটুকার সাবধান সাবধান সাবধান এই দিন সৃষ্টির উল্লাসে হবে রঙিন আর মানি না মানি না কোনও সংশয় জয় বাংলা বাংলার জয় জয় বাংলা বাংলার জয় মায়েদের বুকে আজ শিশুদের দুধ নেই অনাহারে তাই শিশু কাঁদছে গরীবের পেটে আজ ভাত নেই ভাত নেই দ্বারে দ্বারে তাই ছুটে যাচ্ছে। মা-বোনেরা পরণে কাপড়ের লেশ নেই লজ্জায় কেঁদে কেঁদে ফিরছে ওষুধের অভাবে প্রতিটি ঘরে ঘরে, রোগে শোকে ধুকে ধুকে মরছে অন্ন চাই, বস্ত্র চাই, বাঁচার মত বাঁচতে চাই অত্যাচারী শোষকদের আজ মুক্তি নাই, মুক্তি নাই , মুক্তি নাই। ...................................................................................................... সূর্যোদয়ে তুমি শিল্পীঃ আব্দুল হাদী গীতিকারঃ মনিরুজ্জামান মনির সুরকারঃ আলাউদ্দিন আলী সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ, প্রিয় জন্মভূমি।

জলসিঁড়ি নদীতীরে তোর খুশির কাঁপন যেন বাজে ও কাশবনে ফুলে ফুলে তোর মধুর বাসর বুঝি সাজে তোর একতারা হায় করে বাউল আমায় সুরে সুরে। সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ, প্রিয় জন্মভূমি। আঁকা-বাঁকা মেঠো পথে তোর রাখাল হৃদয় জানি হাসে ও….পদ্মকাঁপা দিঘী-ঝিলে তোর সোনার স্বপন খেয়া ভাসে তোর এই আঙ্গিনায় ধরে রাখিস আমায় চিরতরে। সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ, প্রিয় জন্মভূমি। ...................................................................................................... সালাম সালাম হাজার সালাম শিল্পীঃ মোহাম্মদ আবদুল জব্বার গীতিকারঃ ফজল-এ-খোদা সুরকারঃ মোহাম্মদ আবদুল জব্বার সালাম সালাম হাজার সালাম সকল শহীদ স্মরণে, আমার হৃদয় রেখে যেতে চাই তাদের স্মৃতির চরণে।

। মায়ের ভাষায় কথা বলাতে স্বাধীন আশায় পথ চলাতে হাসিমুখে যারা দিয়ে গেল প্রাণ সেই স্মৃতি নিয়ে গেয়ে যাই গান তাদের বিজয় মরণে, আমার হৃদয় রেখে যেতে চাই তাদের স্মৃতির চরণে। । ভাইয়ের বুকের রক্তে আজি রক্ত মশাল জ্বলে দিকে দিকে সংগ্রামী আজ মহাজনতা কন্ঠে তাদের নব বারতা শহীদ ভাইয়ের স্মরণে, আমার হৃদয় রেখে যেতে চাই তাদের স্মৃতির চরণে। ।

বাংলাদেশের লাখো বাঙালি জয়ের নেশায় আনে ফুলের ডালি আলোর দেয়ালি ঘরে ঘরে জ্বালি ঘুচিয়ে মনের আঁধার কালি। শহীদ স্মৃতি বরণে, আমার হৃদয় রেখে যেতে চাই তাদের স্মৃতির চরণে। । ...................................................................................................... এক নদী রক্ত পেরিয়ে কথা ও সুরঃ খান আতাউর রহমান শিল্পীঃ শাহনাজ রহমতউল্লাহ এক নদী রক্ত পেরিয়ে বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা, তোমাদের এই ঋণ কোন দিন শোধ হবে না। না না না শোধ হবে না।

মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সাত কোটি মানুষের জীবনের সন্ধান আনলে যারা, সে দানের মহিমা কোন দিন ম্লান হবে না না না না ম্লান হবে না। । হয়ত বা ইতিহাসে তোমাদের নাম লেখা রবে না, বড় বড় লোকেদের ভীড়ে জ্ঞানী আর গুনীদের আসরে তোমাদের কথা কেউ কবে না। তবু হে বিজয়ী বীর মুক্তিসেনা, তোমাদের এই ঋণ কোন দিন শোধ হবে না। না না না শোধ হবে না।

। থাক ওরা পড়ে থাক ইতিহাস নিয়ে জীবনের দীনতা হীনতা নিয়ে। তোমাদের কথা রবে সাধারণ মানুষের ভীড়ে মাঠে মাঠে কিষাণের মুখে, ঘরে ঘরে কিষাণী বুকে স্মৃতি বেদনার আঁখি নীড়ে। তবু হে বিজয়ী বীর মুক্তিসেনা তোমাদের এই ঋণ কোন দিন শোধ হবে না। ।

...................................................................................................... জন্ম আমার ধন্য হলো শিল্পীঃ সাবিনা ইয়াসমীন গীতিকারঃ নঈম গওহর সুরকারঃ আজাদ রহমান জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো, এমন করে আকুল হয়ে আমায় তুমি ডাক। । তোমার কথায় হাসতে পারি, তোমার কথায় কাঁদতে পারি, মরতে পারি তোমার বুকে বুকে যদি রাখো আমায়- বুকে যদি রাখো মাগো। । তোমার কথায় কথা বলি পাখীর গানের মত, তোমার দেখায় বিশ্ব দেখি বর্ণ কত শত, তুমি আমার, তুমি আমার খেলার পুতুল, আমার পাশে থাকো মাগো।

তোমার প্রেমে তোমার গন্ধে পরান ভরে রাখি এই তো আমার জীবন মরণ এমনি যেন থাকি বুকে তোমার, বুকে তোমার ঘুমিয়ে গেলে জাগিয়ে দিও নাকো আমায় জাগিয়ে দিও নাকো মাগো। । ...................................................................................................... সোনা সোনা সোনা লোকে বলে সোনা কন্ঠ: শাহনাজ রহমাতুল্লাহ কথা: আব্দুল লতিফ সুর: আব্দুল লতিফ সোনা সোনা সোনা লোকে বলে সোনা সোনা নয় ততো খাঁটি বলো যতো খাঁটি তার চেয়ে খাঁটি বাংলাদেশের মাটি রে আমার বাংলাদেশের মাটি আমার জন্মভূমির মাটি জন-ধন বলো, যতো ধন দুনিয়াতে হয় কি তুলনা বাংলার কারও সাথে কতো মা’র ধন মানিক-রতন কতো জ্ঞানী-গুণী কতো মহাজন এনেছে আলোর সূর্য এখানে আঁধারের পথ কাটি রে আমার বাংলাদেশের মাটি আমার জন্মভূমির মাটি এই মাটি তলে ঘুমাইছে অবিরাম রফিক-শফিক-বরকত কতো নাম কতো তিতুমির কতো ঈশা খান দিয়েছে জীবন দেয়নি কো মান রক্তশয্যা পাতিয়া এখানে ঘুমাইছে পরিপাটি রে আমার বাংলাদেশের মাটি আমার জন্মভূমির মাটি। । ...................................................................................................... মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে গীতিকার - গোবিন্দ হালদার সুরকার এবং গায়ক - আপেল মাহমুদ মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি মোরা একটি সুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি।

। যে মাটির চির মমতা আমার অঙ্গে মাখা যার নদী জলে ফুলে ফুলে মোর স্বপ্ন আঁকা। যে নদীর নীল অম্বরে মোর মেলছে পাখা সারাটি জীবন সে মাটির গানে অস্ত্র ধরি। । নতুন একটি কবিতা লিখতে যুদ্ধ করি― মোরা নতুন একটি গানের জন্য যুদ্ধ করি মোরা একখানা ভালো ছবির জন্য যুদ্ধ করি মোরা সারা বিশ্বের শান্তি বাঁচাতে আজকে লড়ি।

। যে নারীর মধু প্রেমেতে আমার রক্ত দোলে যে শিশুর কান্না হাসিতে আমার বিশ্ব ভোলে যে গৃহ কপোত সুখ স্বর্গের দুয়ার খুঁজে সেই শান্তির শিবির বাঁচাতে শপথ করি। । মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি মোরা একটি সুখের হাসির জন্য আজি অস্ত্র ধরি। ।

...................................................................................................... একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার শিল্পীঃ সাবিনা ইয়াসমিন সুরকারঃ অজিত রায় গীতিকারঃ নাইম গওহর একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার। তোমার স্বাধীনতা গৌরব সৌরভে এনেছে আমার প্রানের সূর্যে রৌদ্রেরও সজীবতা দিয়েছে সোনালী সুখী জীবনের দৃপ্ত অঙ্গীকার। সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার। তোমার ছায়া ঢাকা রৌদ্রেরেরও প্রান্তরে রেখেছি অতল অমর বর্নে মুক্তির স্নেহ মাখা জেনেছি তুমি জীবন মরণে বিমুগ্ধ চেতনার। সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার।

। ...................................................................................................... শোনো, একটি মুজিবরের থেকে গীতিকার- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার শিল্পী- আংশুমান রায় শোনো, একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কন্ঠস্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি আকাশে বাতাসে ওঠে রণি। বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ। । সেই সবুজের বুক চেরা মেঠো পথে, আবার এসে ফিরে যাবো আমার হারানো বাংলাকে আবার তো ফিরে পাবো।

শিল্পে কাব্যে কোথায় আছে হায় রে এমন সোনার দেশ। বিশ্বকবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা রূপের যে তার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ। ‘জয় বাংলা’ বলতে মনরে আমার এখন কেন ভাবো, আমার হারানো বাংলাকে আবার তো ফিরে পাবো, অন্ধকারে পুবাকাশে উঠবে আবার দিনমণি। । ...................................................................................................... জনতার সংগ্রাম চলবেই গীতিকার- সিকান্দার আবু জাফর জনতার সংগ্রাম চলবেই আমাদের সংগ্রাম চলবেই জনতার সংগ্রাম চলবেই।

। হতমানে অপমানে নয়, সুকগ সম্মানে বাঁচবার অধিকার কাড়তে দাস্যের নির্মোক কাড়তে অগিণিত মানুষের প্রাণপণ যুদ্ধ চলবেই চলবেই, জনতার সংগ্রাম চলবেই। । প্রতারণা প্রলোভন প্রলেপে হোক না আঁধার নিশ্চিদ্র আমরা তো সময়ের সারথী নিশিদিন কাটাবো বিনিদ্র। দিয়েছি তো শাস্তি আরও দেবো স্বস্তি দিয়েছি তো সম্ভ্রম আরো দেবো অস্থি প্রয়োজন হলে দেবো এক নদী রক্ত।

হোক না পথের বাধা প্রস্তর শক্ত অবিরাম যাত্রার চির সংঘর্ষে একদিন সে পাহাড় টলবেই চলবেই চলবেই জনতার সংগ্রাম চলবেই আমাদের সংগ্রাম চলবেই। । হতে পারি পথভ্রম আরও বিধ্বস্ত ধিকৃত নয় তবু চিত্তে আশায় তো সুস্থির লক্ষ্যের যাত্রী চলবার আবেগেই তৃপ্ত। আমাদের পথরেখা দুস্তর দুর্গম সাথে তবু অগণিত সঙ্গী বেদনার কোটি কোটি অংশী আমাদের চোখে চোখে লেলিহান অগ্নি সকল বিরোধ বিধ্বংসী। এই কালো রাত্রির সুকঠিন অর্গল কোনদিন আমরা যে ভাঙবোই মুক্ত প্রাণের সাড়া জানবোই।

আমাদের শপথের প্রদীপ্ত স্বাক্ষরে নুতন অগ্নিশিখা জ্বলবেই জনতার সংগ্রাম চলবেই আমাদের সংগ্রাম চলবেই। ...................................................................................................... মুক্তির মন্দির সোপানতলে গীতিকার- মোহিনী চৌধুরী সুর- কৃষ্ণ চন্দ্র দে মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হলো বলিদান, লেখা আছে অশ্রুজলে। । কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা, বন্দীশালার ওই শিকল ভাঙ্গা তাঁরা কি ফিরিবে আজ সুপ্রভাতে যত তরুণ অরুণ গেছে অস্তাচলে। ।

যাঁরা স্বর্গগত তাঁরা এখনও জানেন স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভূমি এসো স্বদেশ ব্রতের মহা দীক্ষা লভি সেই মৃত্যুঞ্জয়ীদের চরণ চুমি। যাঁরা জীর্ণ জাতির বুকে জাগালো আশা, মৌল মলিন মুখে জোগালো ভাষা আজি রক্ত কমলে গাঁথা মাল্যখানি বিজয় লক্ষ্মী দেবে তাঁদেরই গলে। । ...................................................................................................... রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি গীতিকার- আবুল কাশেম সন্দীপ সুর- সুজেয় শ্যাম রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি বাংলাদেশের নাম। মুক্তি ছাড়া তুচ্ছ মোদের এই জীবনের দাম।

। সংকটে আর সংঘাতে আমরা চলি সব একসাথে। জীবন মরণ করে সব লড়ছি অবিরাম। । রক্ত যখন দিয়েছি আরও রক্ত দেব, রক্তের প্রতিশোধ মোরা নেবই নেব, ঘরে ঘরে আজ দূর্গ গড়েছি বাংলার সন্তান, সইবো না মোরা, সইবো না আর জীবনের অপমান।

। জীবন জয়ের গৌরবে, নতুন দিনের সৌরভে মুক্ত স্বাধীন জীবন গড়া মোদের মনস্কাম। । ...................................................................................................... মা'গো ভাবনা কেন কথা: গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার সুর: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় মা গো ভাবনা কেন আমরা তোমার শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি আমরা হারবো না হারবো না তোমার মাটি একটি কণাও ছাড়বো না আমরা পাঁজর দিয়ে দুর্গ-ঘাঁটি গড়তে জানি তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি আমরা পরাজয় মানবো না দুর্বলতায় বাঁচতে শুধু জানবো না আমরা চিরদিনই হাসিমুখে মরতে জানি তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি আমরা অপমান সইবো না ভীরুর মতো ঘরের কোণে রইবো না আমরা আকাশ থেকে বজ্র হয় ঝরতে জানি তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি ...................................................................................................... যখন আমি ব্লগটা লিখছিলাম। আমার চারপাশে এসকল গান বাজছে।

আজ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকলে শহীদদের স্মরণ করছে। এই গান গুলো শুনে নিজের ভিতরেই এক ধরণের চেতনা কাজ করে। আমরা প্রার্থনা করি আমাদের মত সকল তরুণদের মাঝে এই চেতনা কাজ করুক সবসময়। পরবর্তী প্রজন্মও যেন মুক্তিযুদ্ধ বলতে আমাদের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে। তারা যেন মুক্তিযুদ্ধ বলতে শুধুমাত্র “কোটা” না বোঝে।

স্বাধীনতার সকল শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.