আমি পথহারা পথিক...পথে পথে ঘুরে বেড়াই, পথের নেশায়....লোকের কথা শুনি, কখনো কখনো বলার চেষ্টাও করি। আমার কথা সবার ভাল লাগবে এমনটা আশা করি না। আমি বিশ্বাস করি, যে পথের নেশায় পথে পথে ঘুরে বেড়াই, সেই পথের দেখা আমি পাবই........ আমরা এমন একটা সময় পার করছি যখন ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপূরক হিসাবে ধরা হচ্ছে যথাক্রমে জামাত ও আওয়ামী লীগকে, অথছ তারা কেও ইসলাম বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একক ধারক বাহক নয়। জামাতের সকল কাজ যেমন ইসলামী নয় তেমনি আওয়ামী লীগের সকল চেতনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নয়। জামাত ধর্মকে পূজি করে তাদের স্বার্থ হাসিল করছে এবং একই সাথে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পূজি করে তাদের স্বার্থ হাসিল করছে ।
ধর্মের নামে নামে জামাত যা করছে সেটা যেমন প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে, তেমনি স্বাধীনতার চেতনার নামে আওয়ামী লীগ যা করছে, সেটাও প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। এদের কর্মকান্ড দেখে মনের প্রশ্ন জাগে আওয়ামী লীগ কিভাবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বা জামাত কিভাবে ইসলামী দল ? নিষ্চয় কোথাও সমস্যা আছে। সমস্যাটা কি হতে পারে? আসুন আমরা আলোচনা করি।
আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছিল একটা উত্তাল সময়ে, গন-মানুষের অধীকার আদায়ের লক্ষে। এই সংগ্রামী রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে।
পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ খ্রীস্টাব্দ থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ বিশ্বে পরিচিত। ১৯৭১ খ্রীস্টাব্দে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এই সংগঠনটির নামাকরণ করা হয় 'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ'। কিন্তু ৭১ এর পর থেকেই শুরু হয় পচন।
এই পচনের শুরু করেছিলেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আর তাকে এই কাজে প্রোরোচিত করেছে বাম নেতারা যারা একাত্তরের মুক্তি যুদ্ধকে দুই কুকুরের কামড়া-কামড়ি বলেছিল। আসলে বামরা চেয়েছিল সেভিয়েত স্টাইলে সমাজ তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে কিন্তু ১৫-ই আগষ্টের দুঃখজনক ঘটনা ঘটার পর বামরা আওয়ামী লীগ ছারতে শুরু করে এবং প্রকাশ্যে আনন্দ উৎসব করে। এই যে আজকের মতিয়া চৌধুরী যিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর তার ছবি জুতা দিয়ে মারিয়ে ছিলেন তিনিই আজ আওয়ামী লীগের ত্রান কর্তী। আরও আছে, যেমন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের,মাল আবদুল মুহিত,দিলীপ বড়ুয়া,এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) এ কে খন্দকার,নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সহ আরও অনেকই আছেন যারা জীবনে কোন দিন আওয়ামী রাজনীতি করেননি। আপনি একটু হিসাব করে দখুন আওয়ামী লীগের বর্তমান মন্ত্রীসভায় ঠিক কত জন বাম বা আন্য দল থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে।
আমার হিসাবে প্রায় মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় অর্ধেকেরও বেশি মন্ত্রী অতীতে কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না। অতছ তারা আজ আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকের ভুমিকায় রয়েছে। এই বামদের কারনেই আজ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এর কাজে জরিত সকল ব্যাক্তিরা কেও পরিক্ষীত আওয়ামী লীগ নয় বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী নয়। আইন মন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রী ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগ থেকে আসেননি, আবার প্রসিকিউটরদের নেতা যিনি জাসদ থেকে এসেছেন।
অতছ এদের চেয়েও অনেক বিজ্ঞ আওয়ামী উকিল আছে তাদের কে ট্রাইবুনালে যুক্ত করা হয়নি, তাদের সাথে আলোচনা পর্যন্ত করা হয়নি। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আজকের আওয়ামী লীগ বামদের দারা ছিনতাইকৃত আওয়ামী লীগ বামদের ইশারা তে চলছে। ইতিমধ্যেই যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল নিয়ে সরকার বিপদে আছ তার উপর আওয়ামী লীগ যদি বামদের থেকে সাবধান না হয় তাহলে আওয়ামী লীগ আবার ও অস্তিত্বের সংকটে পরতে পারে । শুধু এই বামদের কারনেই আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হুমকির মুখে। আওয়ামী লীগ যেন রাজনৈতিক ভাগারে পরিনত হয়েছে, বিভিন্ন দল থেকে আসছে, অপকর্ম করছে আবার বহাল তবিয়তে আওয়ামী খুসবু লাগিয়ে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেরাচ্ছে।
কেন্দীয় আওয়ামী লীগ যদি অন্যদের দ্বারা দখলকৃত হয়ে চলতে পারে তাহলে তো ছাত্রলীগে নাহিদরা আসতেই পারে,বিম্বজিৎদের খুন করতেই পারে। সাজেদা চৌধুরী, আবুল মাল মুহিত বা সুরন্জিৎ বাবুরা যেখান থেকেই আসুক এদের দায় কিন্তু আওয়ামীলীগ কেই নিতে হবে। তবে বিএনপির জামাত মুক্তি আর আওয়ামীলীগের বাম মুক্তি যত তারাতারি হয় ততই জনগনের কল্যান....।
ধন্যবাদ
পথহারা সৈকত
গাজিপুর,বাংলাদেশ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।