হাতে একটা তুলি নিলেন। আজকে ল্যান্ডস্কেপ আঁকবেন। তাঁর আকা ছবিতে এক একটি বৈশিষ্ট থাকে। যেমন ল্যান্ডস্কেপের বৈশিষ্ট হচ্ছে যে দিনটি যেরকম, হুবহু তেমনই হয়ে উঠবে ছবিটি। আঁকতে আঁকতে যদি মেঘ ঘনিয়ে আসে, তাহলে তা নেমে আসে প্রশান্তর ক্যানভাসেও।
সামনে আজ ক্যানভাসের বদলে একটি কাগজ, জলে ভিজিয়ে পেষ্ট করা রয়েছে বোর্ডের ওপর। অয়েলে তো যে কেউ কাজ করতেই পারে, জলরঙেই তো শিল্পীর আসল কৃতিত্ত্ব। কাগজটি শুকিয়ে গেছে ইতিমধ্যে। এখন জলরঙ খুব ভাল ধরবে, না হলে মাঝে মাঝে কলিফ্লাওয়ার এফেক্ট দেখা যায়। স্টুডিওর একটা বড় অংশ কাচের।
নতুন ধরনের এবং বেশ আধুনিক। শিল্পী রঙ করা শুরু করলেন। কাগজের কোন থেকে নয়, তবে আকাশের মাঝামাঝি তুলি স্পর্শ করল তুলিটি। হালকা মেঘ আছে আকাশে।
স্টুডিওয় বসে আঁকা বেশির ভাগ ছবিই শহুরে।
আজকেও তার ব্যতিক্রম হল না। তুলির আঁচড়ে রঙ নামতে থাকল একটু একটু করে। একজন পথচারী ঘরবাড়ির ফাঁক দিয়ে আকাশ দেখার চেষ্টা করছেন। আজকে কি মেঘ আরো ঘনিয়ে আসবে? তুলি সবে একটু ক্রোম ইয়েলো আর ব্রান্ট আম্বার মিশ্রন মুখের এককোনে চড়িয়ে জলের রেখা টেনে আনছিল। এমন সময় শিল্পী খেয়াল করলেন আকাশে একটু একটু করে মেঘ কেটে যেতে শুরু করেছে।
একফালি সূর্যের রশ্মি সোজা নেমে এল ঘরের মেঝেয়। লুটিয়ে পড়ল পায়ের কাছে। এই রোদের ঝলক তো ঐ পথচারীর মুখেও পড়া উচিত। কি করবেন এখন? কিছুক্ষন ভাবার পর ছবির দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে গাঢ় রঙ পথচারীর মুখে ধরেনি। আশ্চর্য, এমন তো হওয়ার কথা নয়।
অনেকক্ষন পর বুঝতে পারলেন কোনভাবে নিজের অজান্তেই কাগজের ওপরে মাস্কিং লিকুইডটা দুফোঁটা পড়ে গেছে। তাই আর রঙ ধরছে না ঐ অংশে। অদ্ভুতভাবে মুখের ওপর ঝলমলাচ্ছে রোদ।
খুবই খুশি হলেন শিল্পী। তিনি নিজেও কখনই খেয়াল করেন না যে অনিচ্ছাকৃত ভুলগুলি তাঁর শিল্পীমন জেনে বুঝেই করে।
কাচের দেওয়ালের বাইরে যে আকাশ তিনি দেখেন সেটা যে তাঁর কল্পনার আকাশ তা তিনি অনেক সময়েই ভুলে যান। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।