নামের সাথে কামের কিছু মিলতো থাকবোই [লেখার অনেক অংশই ব্লগ,ওয়েবসাইট পত্রিকা থেকে সংগৃহিত। আলাদাভাবে কারো নাম উল্লেখ করলাম না। ]
জামায়াতে ইসলামী : ইসলামী আইন
স্বাধিনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সম্ভবত ৪ বার নির্বাচনে জয়ী হয়ে জামায়াতের এমপিগন সংসদে গিয়েছেন। তাদের দাবী অনুযায়ী তারা দেশে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠা করতে চান।
আমার প্রশ্ন হলো বিগত এই চারটি সংসদে তারা
কোন কোন ইসলামী আইন পাশ করিয়েছেন??
অথবা
পাশ করার জন্য উপস্থাপন করেছেন???
অথবা
উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে???
করে থাকলে কোন কোন আইন???
না করে করে থাকলে কেন করেনি???
পৃথিবীতে যে সকল দেশে পতিতাবৃত্তি অনুমোদিত তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
অথচ পার্শ্ববর্তীদেশ ভারতে তা আইন সিদ্ধ নয়। স্বাধিনতার পর থেকে জামায়াত এতোগুলো এমপি হলো, মন্ত্রী হলো কিন্তু এতোবড় একটি বিষয় তারা চোখেই দেখলো না??? তাহলে কিভাবে তারা ইসলামী আইন বাস্তবায়ন করবে??? তারা যদি একবারও সংসদে বিষয়টি তুলতো তাহলেও তাদের আন্তরিকতা বুঝা যেতো। জামায়াতের অন্যতম নেতা আলী আহসান মুজাহিদ ছিলেন সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের। তিনি কি করেছেন এ বিষয়ে?
জামায়াতে ইসলামী : নারী নেতৃত্ব
খুব ছোটবেলা থেকেই বিভিন্নজনের কাছে বিশেষকরে জামায়াতের লোকের কাছে বা সাঈদীর ওয়াজে শুনেছি ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম। সাম্প্রতি এ বিষয়ে শিবিরের একজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি উল্টো আমার কাছে জানতে চান কোরআনে বা হাদীসের কোথায় আছে ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম??
নেট ঘেটে আর সামুর কিছু পোষ্ট থেকে এ সম্পর্কিত কিছু তথ্য নীচে তুলে দিলাম:
"যখন রাসুল (সাঃ) এর কাছে খবর পৌছাল যে পারসিয়ান রা খচরুর মেয়েকে তাদের রুলার হিসাবে নির্বাচিত করেছে তখন তিনি (রাসুল (সাঃ)) বলেছিলেন যে জাতি তাদের রাষ্ট্রের কতৃত্ব একজন মহিলার হাতে দেয় তারা কখন উন্নতি করতে পারে না"।
(বুখারী)
ইসলামিক স্কলাররা কেন একে হারাম ফতোয়া দিয়েছে ? কারনগুলো ,
ক)"ইসলামে নারী নেত্রীত্ব হারাম। " ঢালাও ভাবে এই কথা ঠিক না। আসলে, ইসলামিক রাষ্ট্রে কোন নারী রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবে না। যেকোন দল, সংগঠনের প্রধান হতে কোন বাধা নেই কিন্তু উক্ত সংগঠনটি অবশ্যই ইসলামিক রীতির ভিতরে হতে হবে। এই ব্যাপারে উম্মে আয়েশা (রাঃ) দৃষ্টান্ত দেখতে পারেন।
খ) নারী রাষ্ট্রপ্রধান হলে তা ইসলামের পর্দা প্রথার ফান্ডামেন্টালের সাথে কনফ্লিক্ট করবে।
গ) ইসলামের বিধান মতে রাষ্ট্রপ্রধান ইসলামিক রাষ্ট্রের জামাতের নামাজে ইমামতি করবে আবার নারী জামাতের নামাজে ইমামতি করতে পারবে না। নারী জামাতের নামাজে ইমামতি করতে পারবে শুধুমাত্র নারীদের জামাত যদি হয়।
উপরের কথার সাথে আমি নিজের কিছু মতামত বলতে চাই-
ইসলামে কোরআনে সরাসরি ছেলেদের সোনা-রেশম ব্যবহার নিষেধ নেই কিন্তু হাদিসে রয়েছে এবং তার উপর ভিত্তি করে ইসরামী স্কলারগন ছেলেদের জন্য সোনা-রেশম ব্যবহার হারাম বলে থাকেন।
কোরআনে কোথাও নারী নেতৃত্বের বিপক্ষে বলা নেই কিন্তু পক্ষেও নেই এবং কোরআনে বলাই হয়েছে পুরুষেরা নারীর উপর কর্তৃত্বশীল।
নারীদেরদেরকে অপ্রয়োজনে বাড়ীর বাহিরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সেখানে সংসারের পাশাপাশি শরীয়তের সীমার মধ্যে একটি দল বা দেশ চালানো কতটুকু সম্ভব?
নারী নেতৃত্বের বিষয়ে জামায়াতের বর্তমান অবস্থান কি শরীয়তের অনুশাসনকে নতুন করে অনুধাবন করে তারা মনে করছে নারী নেতৃত্ব জায়েজ নাকি নিজেদের প্রয়োজনে শরীয়তের ব্যাখ্যাকে নিজেদের মতো করে নিচ্ছে??
অন্যদিকে, জামায়াত একদা নারী নেতৃত্বের বিরোধিতায় সরব ছিল। বিশেষ করে ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত জামায়াত নেতা সাঈদীর ওয়াজ মাহফিলের ক্যাসেটগুলো শুনলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটে যোগদান ও পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রী সভায় জামায়াতের দুই নেতার মন্ত্রীত্ব গ্রহণের পর সাঈদী সাহেব উক্ত বিষয়ে চুপ হয়ে যান। তখন জামায়াতের কোন নেতাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা বলত এটি হুদায়বিয়ার সন্ধির অনুরূপ।
মহানবী (স.) যেমন হুদায়বিদাতে ’কাফেরদের’ সাথে চুক্তি করছিলেন। ইসলামের স্বার্থে তেমনি জামায়াত বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে গমন ও মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করেছে।
আমার বিশ্বাস বিএনপির সাথে কোয়ালিশন ভেঙে গেলে জামায়াত আবারও এমন আওয়াজ তুলবে যে, ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম। তাই আসুন ইসলাম রক্ষার্থে আপনারা জামায়াতকে ভোট দিন।
জামায়াতে ইসলামী : মুক্তিযুদ্ধ
জামায়াতে ইসলামী সাধারন জনগনের কাছে যে প্রশ্নের সম্মুখিন সবচেয়ে বেশি হয় এবং যে উত্তর দিতে তাদেরকে বেশি বেগ পেতে হয় তা হলো মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবস্থান।
কোথায় পড়েছি ঠিক মনে নেই তবে একজন জাময়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ৭১ এ জামায়াতের অবস্থান এভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে যে বঙ্গবন্ধুর বাকশাল কায়েম যেমন বঙ্গবন্ধুর একটি রাজনৈতিক ভুল তেমনি ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান জামায়াতের একটি রাজনৈতিক ভুল, যদিও তারা মনে করে তাদের এ অবস্থানের পেছনে যৌক্তিক কারন ছিলো।
এ সম্পর্কে আমার অবস্থান-
জামায়াতের একটি ধারনা বা আশংকা ছিলো যে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে গেলে বাংলাদেশ ফুটন্ত তেলের কড়াই থেকে বাচার জন্য লাফিয়ে জ্বলন্ত চুলায় পড়বে। কথাটি অনেকাংশেই ঠিক, যা বর্তমান ভারতের কার্যক্রমে আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু এটিও ঠিক বাঘের লেজ হওয়া অপেক্ষা বিড়ালের মাথা হওয়া ভালো। একটি বৃহত দেশের লেজ হিসেবে থাকার চেয়ে ক্ষুদ্র একটি স্বাধিন দেশ হাজার গুনে ভালো।
যেখানে দেশের সিংহভাগ জনগন দেশের স্বাধিনতার জন্য লড়ে যাচ্ছে সেখানে জামায়াত তার অবস্থান বিপরতিমুখি করে মুলত এই সিংহভাগ জনগনকেই অবজ্ঞা করেছে। আর স্বাধিনতা পরবর্তী সময়ে পূর্বের অবস্থান ব্যাখ্যা না করা বা ক্ষমা না চাওয়া তাদের মুর্খতা এবং গোড়ামী বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে। বিষয়টি এমন আমরা যা করেছি ঠিক করেছি।
৭১ এর যদ্ধকে ঠিক যুদ্ধ না বলে হত্যাযজ্ঞ বলাই সমীচীন। যুদ্ধ হয় প্রতিপক্ষের সাথে কিন্তু লুংগি পরা সাধারন কৃষকের সাথে যুদ্ধ হয়না।
এমন হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জামায়াত আজ পর্যন্ত করেছে বলে শুণিনি।
জামায়াতে ইসলামী : মিডিয়া
৭১ পরে জামায়াতের সবচেয়ে বড় অর্জন হলোঅর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী হওয়া। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা দেশে মোটামুটি সুনামের সাথে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জামায়াত প্রতিনিয়তই যে অভিযোগ করে তার মধ্যে অন্যতম হলো তারা মিডিয়া সন্ত্রাসের শিকার। হয়তো এ কারনেই জোট সরকারের সময় তারা "নয়া দিগন্ত" নামে দৈনিক পত্রিকা এবং "দিগন্ত" নামে টেলিভিশন চ্যানেল চালু করে।
জামায়াতের প্রধান টার্গেট বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও পত্রিকা এবং চ্যানেলে তার সামান্যতম প্রতিফলনও দেখা যায় না। পত্রিকাতেও প্রথমআলোর নকশার মতো অর্ধনগ্ন নারীদের দেখা যায়। আর চ্যানেলে শুধুমাত্র সংবাদ পাঠিকারা হিজাব পরে সংবাদ পাঠ করেন। সংবাদ পাঠের জন্য মহিলাদেরই কেন আসতে হবে সে প্রশ্ন না হয় করলামই না। প্রতিদিন রাত ১০টার পরে ব্যান্ড সংগীত বা অনুরোধের আসর টাইপের অনুষ্ঠান প্রচারিত হয় যেখানে দেশের স্বনামধণ্য শিল্পিগন গান পরিবেশন করে থাকেন।
তারা প্রতিনিয়তই সাধারন লোকের কাছে বলে যাচ্ছে বাজনা সহ গান হারাম, অথচ তাদেরই চ্যানেলে সেটাই প্রচার করছে। পত্রিকায় ফ্যাশন বা বিভিন্ন উপলক্ষে অর্ধনগ্ন নারীদের ছবি প্রকাশ করছে। এগুলি কতটুকু ইসলাম সম্মত?? নাকি তারা নিজেদেরকে মডারেট মুসলিম নামে নবধারার মুসলিম হিসেবে পরিচিত করতে চাচ্ছে???
দিগন্ত টেলিভিশন বা নয়া দিগন্তকে আমি জামায়াতের মুখপাত্র হিসেবে নয় জামায়াতের অন্যতম ডিসিশান মেকার এবং অর্থজোগানদাতার প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি। জামায়াতের অন্যতম নেতার প্রতিষ্ঠান যদি এমন বেহাল দশা হয় শরীয়তের দিক দিয়ে তাহলে ক্ষমতায় গেলে জামায়াত কোন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবে??
এর জন্য জামায়াত না মীর কাশেম আলীকে জবাবদিহী করতে বাধ্য করেছে আর না শীর্ষপদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। বরং ঠিকই তার থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামী : জোটের রাজনীতি
আমার দেখায় জামায়াতের জোট বদ্ধ আন্দোলনের শুরু হয় এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময়। তাকে ঠিক জোট না বলে বলা যেতে পারে পারস্পরিক বোঝাপোড়ার আন্দোলন। যে যার মতো এরশাদ বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে গেছে।
সে সময় জোট বা মহিলা নেতৃত্বের ইস্যুতে যে বক্তব্যগুলো তাদের থেকে শুনেছি তার অন্যতম কথা হচ্ছে বৃহত স্বার্থে ক্ষুদ্র ত্যাগ।
সরকার গঠনে একবার বিএনপিকে সমর্থন আবার পরে আওয়ামীলীগকে সমর্থন জামায়াতের নেতারা দেখেছে অন্য দলের কাছে তাদের গুরুত্ব হিসেবে।
তারা অনেকটা গর্ব করেই বলতেন তাদের ছাড়া বাংলাদেশের কেউ ক্ষমতায় যেতে পারে না। কিন্তু সাধারন জনগন এটাকে একটু কটাক্ষ করেই বলতো একবার এর আচলের তলে, আরেকবার আরেকজনের আচলের তলে আশ্রয় নেয়া দল হলো জামায়াতে ইসলামী। সবচেয়ে বেশি বিব্রত হতে হতো সাধারন মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের। নেতৃবৃন্দের শেখানো বুলি বললেও মনে শান্তি পাওয়া কঠিন কারন কিছুদিন আগে তারাই সবাইকে বলে এসেছে নারী নেতৃত্ব হারাম।
আওয়ামী সরকারের প্রথম টার্মে ক্ষমতায় আসার কিছু পরেই সম্ভবত জামায়াতের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় এবং জামায়াত বিএনপির সাথে গিয়ে জোট তৈরী করে।
অর্থাত প্রায় ১২-১৩ বছর ধরে জামায়াত-বিএনপি জোট বেধে আছে। শুধু তাই নয় বিগত সরকারের সময় তারা জোটবদ্ধ অবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। বলতে গেলে জামায়াত-বিএনপি একাকার অবস্থা।
জোট করতে গিয়ে যে কাজগুলো জামায়াতকে করতে হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো নারী নেতৃত্ব হালাল করা। শুধু তাই নয় বিভিন্ন সভা সমাবেশে খালেদা জিয়ার আশে পাশেই তাদের অবস্থান ছিলো।
আমি ঠিক জানিনা এটি কতটুকু শরীয়তের মধ্যে ছিলো?
জোটের রাজনীতিতে জামায়াতের নেতাদের কি লাভ হয়েছে, কতটুকু ক্ষমতার স্বাদ উপভোগ করেছে সে বিষয়ে না যাই কিন্তু ঝামেলা পোহাতে হয়েছে কর্মীদের। একই সাথে তারা তাদের ভোট ব্যাংক নিয়ে যে গর্ব করতো সে ভোট ব্যাংকে ফাটল ধরেছে। বিষয়টি আরেকটু ব্যাখ্যা করি,
জোটবদ্ধ নির্বাচনের সময় মোটামুটি শতকরা ১০টি আসনে নির্বাচনের যদি জামায়াত প্রার্থী পেয়ে থাকে সেখানে দেখা গেলো জামায়াতের নেতৃত্বে থেকে নির্বাচন হচ্ছে ফলে জোটের অন্য কর্মীগন জামায়াতের সাথে মিলেমিশে নির্বাচনী কাজ করছেন। আর স্বাভাবিক ভাবেই জামায়াত বাদে অন্যান্য কর্মীদের বিড়ি-সিগারেট-লিকুইডের ব্যয়ভার জামায়াতই বহন করেছে।
অপরদিকে জোটপ্রার্থি যদি বিএনপি হয় তাহলে সেখানে জামায়াত কর্মীরা বিএনপির সাথেই হাততালি দিতে দিতে মিছিল করেছে, ক্ষেত্রবিশেষে ভোটারদেরকে টাকা বিতরনও তাদেরকে করতে হয়েছে।
ফলে তারা নিজেরা যতই ইসলামী দলের কর্মি সমর্থক বলুক না কেন, জোট করতে গিয়ে তাদের কিছুটা বিসর্জন দিতে হয়েছে। নৈতিকভাবে বিএনপি বা অণ্য প্রার্থীকে পছন্দ না হলেও তাকেই ভোট দিতে হয়েছে।
আবার নির্বাচনে দীর্ঘদিন পাশাপাশি অবস্থানের কারনে বিএনপির লোক জামায়াত মুখী না হলেও জামায়াতের লোক বিএনপিমুখী হয়েছে। ফলে মেজর লাভ বিএনপির ঘরেই গিয়েছে।
একজন জামায়াত কর্মীর ভোটে যখন একজন জোটপ্রার্থী জিতে যায় আর ক্ষমতায় থেকে যখন সে এমপি-মন্ত্রী ত্রানের টিন চুরি করে, বা ২ লাখ টাকার সিএনজি ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হয় তখন এর দায়ভার কি জামায়াতের ঐ কর্মীর উপরে যায় কি না?
এমনি সময় সামান্যতম ইস্যুতেই জামায়াত-শিবির মিছিল মিটিংএ দেশ গরম করে দেয় কিন্ত ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দেশ বিদেশে ইসলাম বিরোধী কোন কার্যক্রমে তাদের প্রতিবাদ সর্বোচ্চ মিনমিন করে হয়।
বিগত সংসদে তাদের একদিনও দেখি নাই এমপিদের দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে।
জোটের রাজনীতি করে জামায়াত কি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করছে নাকি ক্ষমতায় যাবার সিড়িকে সহজলভ্য করছে???? বর্তমার জামায়াত কতটুকু দাওয়াতী কাজ করছে আর কতটুকু নির্বাচনে বিজয়ী হবার নকশায় ব্যস্ত রয়েছে?
জামায়াতে ইসলামী: গনতন্ত্র
জামায়াত তার গঠনতন্ত্রের একদিকে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর আইন মান্য করার কথা বলেছে। অন্যদিকে গণতন্ত্রের কথা বলেছে। জামায়াতের এই ধরণের স্ববিরোধিতা অনেকটা “ধরি মাছ না ছুঁই পানি”র মতো। একদিকে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের এই কথা বোঝানো যে তারা ইসলামী আইন বাস্তবায়নে আন্দোলন করছে।
অন্যদিকে, পুঁজিবাদীদের সৃষ্টি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে সর্মথন করছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক জনগণ। ইসলামী আইনে সার্বভৌম একমাত্র আল্লাহর এবং ইসলামের সংবিধান আল-কুরআন। কিন্তু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংবিধান মানব সৃষ্ট। তাই জামায়াতের উপরোক্ত ইসলাম রক্ষার স্বার্থে রাজনীতি করার তত্ত্ব প্রকৃতপক্ষে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের সাথে এক ধরণের ধোঁকাবাজি।
জামায়াত ইসলামের কথা ও কাজে মিল না থাকার বহু প্রমাণ আছে। এই সব কথা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই জানে। কিন্তু নানা সময়ে তারা এসব স্ববিরোধিতা এড়িয়ে জামায়াতকে সাথে নিয়ে একে অপরের স্বার্থ সিদ্ধি করেছে।
জামায়াত তার দলের আভ্যন্তরে গনতন্ত্র ব্যবস্থা নিয়ে গর্ব করে। কিন্তু প্রকৃত অবস্থা কি তাই? সম্ভবত বছর ৪/৫ আগে জামায়াত একযোগে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় শৃঙখলা ভংগের অভিযোগে শতাধিক জামায়াত নেতাকে দল থেকে বহিস্কার করে।
একটি গনতান্ত্রিক দলের দাবীদার জামায়াত তাদের কাউকে শোকজ করেনি, তাদের থেকে জানতে চায়নি তাদের সমস্যা কি, তাদেরকে জানানো হয়নি তাদের অপরাধ কি? একজন খুনের আসামীকেও তার স্বপক্ষে বলার জন্য সুযোগ দেয়া হয়। জামায়াত সে সুযোগও আজকাল দেয় না। এই হলো জামায়াতীয় গনতন্ত্র।
জামায়াতে ইসলামী: খোলাফায়ে রাশেদীন।
ইসলামী শাসনের উদাহরন দিলেই জামায়াত উমর(রা.) এর অর্ধ পৃথিবীর শাসনের উদাহরন দিয়ে থাকে।
মসজিদে বসে অর্ধ পৃথিবী শাসনের কথা বলে থাকে, বালিতে শুয়ে হাতে মাথা রেখে ঘুমানোর কথা আবেগ দিয়ে বলা হয়। কিন্তু জামায়াত এমপিরা কোটি টাকার ট্যাক্স ফ্রী গাড়ী আমদানী করে। পাজেরো সহ দামী গাড়ী এখন জামায়াতের কাছে স্বাভাবিক বিষয়। আরাম আয়েশ বিলাসিতায় সাধারন লোকদের থেকে জামায়াতের কোন নেতা-কর্মীই পিছিয়ে নেই। সংগঠনের টাকায় ব্যক্তিগত কাজে গাড়ী/ফোন ইত্যাদি ব্যবহার স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
অনেক গরীব ছাত্রের এয়ানতে(মাসিক চাদা) যে শিবির চলে সেই শিবিরের অফিসেও আজকাল এসি দেখা যায়। এরা করবে ইসলাম কায়েম?????
জামায়াতে ইসলামী: দল প্রীতি
জামায়াতের প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে শতকরা ৯৯% ভাগ জামায়াত শিবিরের লোক। অবাক হবার কি আছে তাতে? এটাই তো হবার কথা তাই না??? জ্বী, তাই। তাহলে বলুন আওয়ামীলীগ যদি ক্ষমতায় গিয়ে নিজের দলের লোক ক্ষমতায় বসায়, বিএনপি বসায় সেখানে তাদের দোষ হয় আর জামায়াত করলে দোষ হবে না? জামায়াত ক্ষমতায় না গিয়েই দলীয়করণের অসাধারন উদাহরন তাদের প্রতিস্ঠানে করে রেখেছে। তাদের দল ক্ষমতায় গেলে কারা দেশে চাকরি পাবে নতুন করে বলতে হবে?
পরিশেষে:
কাল কিয়ামতে কি আল্লাহ আপনাকে বলবে আপনি ইসলাম কায়েম করে মারা যান নাই বিধায় আপনি ডাইরেক্ট জাহান্নামে যাবেন।
কয়টা এমপি হলো, কয়টা মন্ত্রী এগুলো দিয়ে লাভ কতটুকু??? বরং আপনি কতটুকু আন্তরিকতার সাথে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছেন এটিই গুরুত্বপূর্ন। আল্লাহ এইটাই দেখবেন। কে গ্রহন করলো আর কে গ্রহন করলো না এটি যার যার ব্যপার। কাজেই দেশের ক্ষমতা দখল, এমপি হওয়া মন্ত্রী হওয়া ইত্যাদি করতে গিয়ে মুল ইসলাম থেকে সরে গিয়ে ইসলাম কায়েম হবে কিভাবে? ক্ষমতার জন্য জোট করতে গিয়ে জোটের জন্য সমঝোতা করতে গিয়ে দিনে দিনে অনৈসলামিক সমঝোতার পরিমান বেড়েই চলেছে। এভাবে হয়তো জামায়াতের ইসলাম কায়েম হবে কিন্তু কোরআনের ইসলাম নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।