হে অনিন্দ্যসুন্দরী্, তোমার রুপের আগুনে তোমার শুদ্ধবচনে তোমার প্রেমে ও পবিত্রতায় আমার বিতস্পৃহ মনকে জাগিয়ে তোলো, গুঞ্জনে গুঞ্জনে মুখরিত করো আমার চারপাশ, সোনালি জোছনায় প্লাবিত করো আমার পৃথিবী।
ভার্সিটির হলে ভালো একটা সিট, কয়েকজনের উপর কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা, কখনো প্রশ্নপত্র ফাঁস অথবা টিচারদের বিরুদ্ধে শ্লোগান !
নিজের মধ্যে নেতা নেতা ভাবের উদয়, মেয়েদের উত্যক্ত করার অবাধ স্বাধীনতা, যৌনাচার অথবা স্বেচ্ছাচারিতা !
বিছানার নিচে পিস্তল, রাম-দা অথবা চাপাতি, হকি স্টিক অথবা বাঁশের লাঠি, মনে মনে আধুনিক সব অস্ত্র ব্যাবহারের ইচ্ছা !
বিনা কারনে গাড়ি ভাংচুর, আগুন লাগানো অথবা অবরোধ। রক্ত মাংসের মানুষের সুন্দর মুখে পশুত্বের প্রকাশ । ক্রমে ক্রমে নেতা হয়ে ওঠা !
অতঃপর যৌবনের শক্তি আর সামর্থ্য নির্বিকারে বিসর্জন দিয়ে অসততার গলিতে অনুপ্রবেশ। অনেক টাকা ঘুষ আর লবিং সম্বল করে কখনো ভার্সিটির টিচার অথবা উঁচু কোন সরকারী চাকুরে হয়ে ওঠা।
তারপর নিশ্চিন্তে জীবন যাপন । স্বীকৃত ধুমপায়ী আর মদখোর হয়ে ওঠার অবাধ স্বাধীনতা; ঘরে বাইরে শুধু তোষামোদ আর চাটুকারিতায় নিজেকে সম্মানে ধন্য মনে করা !
খুব ভালো প্রভাশালী নেতা হলেও বোধকরি এখনকার ছাত্র-রাজনীতি এর চেয়ে খুব বেশি কিছু আমাকে দিতে পারবে না ! আর এইগুলো অর্জনের জন্যে আমাকে গলা ফাটিয়ে সত্য-মিথ্যা বক্তৃতা দিতে হবে, খুন করতে হবে মানুষকে । সেইসব মানুষ যাদের বাড়িতে মা আছে বাবা আছে। আছে ছোট ছোট ভাই-বোন । সেইসব মা-বাবাকে করে দিতে হবে সন্তান-হারা আর আমাকে পরিচিত হতে হবে নির্ভীক দুঃসাহসী ক্যাডার হিসেবে।
আমার মতের সাথে একমত না বলেই কি আরেকজনের মাথায় বাড়ি দিয়ে তাকে আমার স্বমতে আনার চেষ্টা করতে হবে ?
বর্তমান ছাত্র-রাজনীতি আমার মা-এর মুখের উদ্বিগ্নতা দূর করতে পারে না, আমাকে নিরাপত্তা দিতে পারে না, আমার মতামতের সঠিক মুল্য দিতে পারে না, আমাকে মানসিক ভাবে প্রতিবন্ধীত্ব ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না, সর্বোপরি আমাকে শুধু প্রভু-ভক্ত কুকুরের জীবন ছাড়া আর অন্যকিছু দিতে অক্ষম ।
হ্যা … শুধু এই সহিংস এই রাজনীতিই নয় আরো যত বড় বড় সমস্যা আছে আমাদের দেশে যা মানুষের নিজের হাতেই সৃষ্টি তার সমাধান আমি দেখেছিলাম সেই ছোট বেলায় পড়া আদর্শ-লিপির প্রতিটি পাতায় পাতায় ...
“মনুষ্যত্ববিহীন লোক পশুর সমান”, “অহিংসা পরম ধর্ম”, “অল্পে তুষ্ট থাকিবে”, “গুরুজনে সম্মান করিবে”, “ মিথ্যা বলা মহা পাপ”, “আলস্য দোষের আকর” … ইত্যাদি ইত্যাদি । আদর্শ-লিপির এই কথাগুলো আমার মনে অক্ষয় হয়ে বসে যাক। কথাগুলো লিখতে বা বলতে খুব বেশি সময় লাগে না কিন্তু মানতে সারাটা-জীবন লাগে। মানুষ হয়ে ওঠা তাই সারাজীবনের সাধনা।
তবুও আমি যেন মানুষ হতে চেষ্টা করি । না… রাজনৈতিক ক্ষমতা-সম্পন্ন সম্পদশালী মানুষ নয় বরং আদর্শ মানুষ ! সততা, ভালোবাসা আর সৌন্দর্য্য আমার কাছে আরাধ্য হোক ! অর্থ, সম্মান, খ্যাতির চেয়ে আমার কাছে মানুষের জীবনের মুল্য বেশি হোক । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।