আমার চাকরির সুবাদে বহু জায়গায় ঘুরাঘুড়ি করতে হয়,বিশেষ করে ভারতের নানান জায়গা। আমার কাজই হচ্ছে বিভিন্ন ফল চাষি বা বাগানিদের কাছ থেকে ফল ক্রয় করে তা প্রক্রিয়াজাতকরে বাংলাদেশে পাঠানো। বিশাল ভারতের একই সময়ে একেক অঞ্চলে একেক ধরনের আবহাওয়া আর এই আবহাওয়ার তারতম্যের কারনে একেক অঞ্চলে একেক ধরনের ফল উৎপন্ন হয় যেমন,পশ্চিম বংগের ২৪পরগনা জেলা ও নদিয়া জেলায় হিমসাগর আম,মালদহ জেলায় ফজলি,আস্বিনা আম ও লিচু। উত্তর প্রদেশের আমরুহা জেলায় ল্যাংড়া,চোষা আম,কানপুর থেকে কাঁচা মরিচ, মহারাস্ট্র প্রদেশের নাসিক জেলায় আংগুর, টমেটো, আনার, নাগপুর থেকে কমলা, আর এবার গিয়েছিলাম জন্মু-কাশ্মিরের শ্রীনগর আপেল কেনার জন্য। কাশ্মিরের সৌন্দর্য দেখে আমি অভিভূত।
কাশ্মিরের সৌন্দর্য নিয়ে আমি একটা পোস্ট দেওয়াতে প্রিয় ব্লগারদের কাছ থেকে অনেক সাড়া পেয়েছি, সবাই জানতে চেয়েছে কাশ্মির কিভাবে যেতে হয়, খরচ কেমন ইত্যাদি। তাদের জ্ঞ্যাতার্থে আমার আজকের এই পোস্ট।
কিভাবে যাবেনঃ প্রথমত ভারতীয় ভিসা লাগবে, ভিসা ফরম পাওয়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন, কাশ্মিরে যাবার জন্য আলাদা কোন ভিসার প্রয়োজন নাই। ভিসা পেলে দুই ভাবে কাশ্মির যেতে পারেন ১) বিমানেঃ সরাসরি ঢাকা থেকে দিল্লী থেকে শ্রীনগর এক্ষেত্রে জেট এয়ার-এর টিকেট কাটাই ভালো, কারন, তরাই আপনাকে কানেক্টিং বিমানের সব বন্দবোস্ত করে দিবে২)রাস্তা দিয়ে গেলে খরচ একটু কম তবে কষ্ট বেশী। প্রথমতঃ আপনাকে কলকাতা যেতে হবে, কলকাতা থেকে রেলগাড়িতে সরাসরি জম্মু, জম্মু থেকে জীপ গাড়িতে শ্রীনগর, পাহাড়ি রাস্তা ৭/৮ ঘন্টা লাগবে,ভাড়া জনপ্রতি ৬০০/৭০০ রুপী নেবে, শ্রীনগর নেমে প্রথমেই আপনার পাসপোর্ট নিবন্ধন করানো জরুরী, নিরাপত্তার কারণে কাশ্মিরে সব বিদেশিদের জন্য পাসপোর্ট নিবন্ধন করা জরুরী, এর জন্য শ্রীনগর বিমান বন্দরে আলাদা একটা ডেস্ক আছে সেখানে কেন এসেছেন, কোথায় থাকবেন, কতদিন থাকবেন, পাসপোর্ট নাম্বার, ভিসা নাম্বার ইত্যাদি তথ্য সম্বলিত একটা ফরম পুরন করতে হয়।
যদি বিমানে যান তাহলে বিমান বন্দরেই এই কাজটা সেরে ফেলতে পারবেন, আর রাস্তায় দিয়ে গেলে শ্রীনগর ডাল লেকের সামনেই বিদেশী পাসপোর্ট নিবন্ধিকরণঃ অফিস আছে, সেখানেই এই জরুরী কাজটা সেরে ফেলতে পারবেন।
ডাল লেকে বোট হাউসের সারি।
ডাল লেক।
শ্রীনগর শহরের মাঝেই ডাল লেক,এখানেই সব পর্যটকদের ভিড়। আশেপাশে নানা মানের হোটেল, মোটামুটি ১০০০ রুপির নিচে কোন রুম নাই।
এখানে জুন মাসেই পর্যটকদের আগমন শুরু হয় এবং তা সেপ্টম্বর পর্যন্ত চাপ থাকে। এই সময় খরচ পাতি একটু বেশি, তারপরও আমার মতে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসেই ভাল কারন এসময় পরযটকদের চাপ একটু কম থাকে। খরচপাতি ও তুলনামূলক ভাবে কম থাকে। শ্রীনগরের ডাল লেক এর সৌন্দর্য দেখে যেকোন মানুষ আবিভূত হয়ে যাবে। ডাল লেকে হোটেল সাদূশ্য বোট হাউস আছে।
এখানে রাত্রি যাপন না করলে আপনার সফরের পূর্ণতা পাবে না। প্রতি রাতের জন্য ৩/৪ রুমের বোট হাউজের ভাড়া ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার রুপি পর্যন্ত। একটা বোট হাউসে ১০/১৫ জন থাকা যায়। অফ সীজনে এক রুমের ভাড়াও নিতে পারেন। হয়তঃ ২/৩ হাজার রুপিতে পেতে পারেন।
বোট হাউসের ভিতরের ছবি।
কাঠের কারুকার্যময় বোট হাউসের ছবি।
ডাল লেকে ঘুরার জন্য নৌকা সাদৃশ্য সিকারা আছে।
সিকারা।
প্রতি ঘন্টা ঘুরার জন্য নিয়ে থাকে ৩শত থেকে ৫শত রুপি।
তারপর যেতে পারেন শ্রীনগর থেকে ৪০কিলোমিটার দূর গোলমার্গ, টাংমার্গ, এই সব যায়গায় গেলে আপনি প্রকৃতিক সুন্দর্যর এক অদভূত দৃশ্য দেশতে পাবেন, দেখতে পাবেন পাহাড়ের মধ্যে বরফ জমে থাকে, বৃষ্টি আর রদ্রের লোকচুরি, এই খানিক বৃষ্টি আপনাকে ছুয়ে যাবে, এই রৌদ্র আপনি শোকিয়ে দিবে।
গোলমার্গ যাবার পথের ছবি ।
গোলমার্গের পাহারি দৃশ্য।
গোলমার্গে হোটেলের সামনে চা পানরত আমি। এই হোটেলের ভাড়া ২০০০ রুপী প্রতি রাত।
জায়গায় জায়গায় নানান জাতের ফুলের জঙ্গল, দেখে মনে হবে যেন, পুরো ভূমিটি যেন ফুলের চাষ বাগান।
বরফে ঢাকা কাশ্মিরী উপতক্যা।
...চলবে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।