ছোটবেলা থেকেই ঘুরে বেড়াতে খুব পছন্দ করি। একটু বড় হয়ে এর সাথে যুক্ত হ’লো পড়া ও লেখালেখি, তারপর ফোটগ্রাফি।
আমি ও নোমান আমাদের পরিবার সহ ইতিমধ্যে হিমাচল প্রদেশ সহ ভারতের দর্শনীয় জায়গাগুলোতে ভ্রমণ শেষ করেছি। তাই কি ধরনের ট্রাভেল গিয়ার নিতে হয় সে-সম্পর্কে আমাদের বেশ ভালোই ধারনা আছে। ভ্রমনের তারিখ যতই ঘনিয়ে আসতে লাগলো, আমরা ততই এক্সাইটেড হতে লাগলাম।
প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে ঘুচানো শেষে একদিন সত্যি সত্যি সোহাগ-পরিবহনের তথাকথিত স্ক্যানিয়াতে করে রওনা দিলাম কলকাতার উদ্দেশ্যে। সীমান্ত পার হলে ভারতের হরিদাসপুর থেকে কলকাতাগামী বাসে দেখা হলো একসময়ের চিত্রনায়ক সাকিল খান ও তার স্ত্রীর সাথে, সহজাত মিশুক স্বভাবের নোমান শুরুতেই গল্প শুরু করে দিলো ওই দম্পতির সাথে। কিছু পরে আমরা বাকীরা যোগ দিতেই আসর জমে গেল। প্রবল বৃস্টির মধ্যে নামায়িত সন্ধ্যায় আমাদের বাস থামলো কলকাতার মারকিউস স্ট্রিটে। বৃষ্টি তখনও পুরোপুরি থামেনি।
টিপটিপ বৃষ্টির মধ্যেই জলকাদা ভেঙে আমি আর নোমান হোটেল ঢুরতে বেরুলাম বউ-বাচ্চাদের বাস কাউন্টারে বসিয়ে রেখে । অনেক খুঁজে শেষে হোটেল কন্টিনেন্টালে উঠলাম প্রতিরাত ২০০০ রুপি চুক্তিতে, যেখানে আমাদের বাজেট ছিল ১০০০ রুপি। শুরুতেই দ্বিগুন খরচের ব্যাপারটা আমার হিসেবি মন ঠিক মেনে নিতে পারছিল না। যাইহোক প্রথমদিন কলকাতায় রাত্রিযাপন শেষে পরদিন সকালে নাস্তা সেরেই ছুটলাম ফেয়ারলি প্লেসে ফরেন কোটায় দি্ল্লি টু কলকাতা টিকেট কাটাতে। কেনানা আমাদের যাওয়ার টিকেট কনর্ফাম থাকলেও আসার টিকেট পাইনি পূজার ছুটির ভিড়ের কারনে।
ওই দিনের জন্যে মাত্র ছয়টি টিকেটই ছিল এসি -থ্রিটায়ারে ফরেন কোটতে। রিজার্ভেশন অফিসারকে অবাক করে দিয়ে ছ'টি টিকেটই আমরা কনফার্ম করলাম। তারপর আধুনিক জিপিএস সুবিধা ব্যবহার করে পুরানো কলকাতা নগরীর পথে পথে হেঁটে-হেঁটে আমি আর নোমান হোটেলে ফিরলাম দুপুরবেলায়। ওইদিনই আমাদের ট্রেন রাত ১১.৫৫ মিনিটে। তাই ঠিক করলাম একদিনের জন্যে শুধু শুধু ৪০০০ রুপি খরচ না করে সেই সময়টা সিনেমা দেখে আর মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে পার করে দিবো।
নিউমার্কেট সংলগ্ন এলিট সিনেমা হলের ছটি টিকেট কাটলাম ৬০০ রুপি দিয়ে। তিনটে থেকে ছটা অবদি সিনেমা দেখলাম তারপর কলকাতা নিউমার্কেটের অলিগলি ঘুরে সামান্য শপিং করলাম। রাত সাড়ে-আটটায় হোটেলে ফিরে ফ্রেশ হয়ে রাধুনীতে ডিনার সারলাম সাড়ে-ন'টা অবদি। হোটেল লবিতে খানিক অপেক্ষা শেষে রাত দশটায় টেক্সি ধরলাম হাওয়ার উদ্দেশে। বাকী সবাই সহ নোমান রইল এসি ওয়েটিং রুমে আর আমি নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে লাগেজ-পত্তর নিয়ে একা একা বসে রইলাম প্রায় দু'ঘন্টা ধরে।
ট্রেন আসার ঘোষনা শুনেই ফোন লাগালাম নোমানকে, সে সবাইকে নিয়ে উপস্থিত হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ট্রেন লেগে গেল প্ল্যাটফর্মে। দশমিনিটের মাথায় রওনা দিলাম ভূ-স্বর্গের উদ্দেশ্যে..........যাত্রা হলো শুরু
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।