আফ্রিকার সাভানার তৃণভূমিতে সিংহীর দল যখন বড় কোন বন্য মহিষ বা জেব্রা বা উইল্ডার-বিস্ট শিকার করে, তখন প্রথমে তা' খায় দলটির সবচেয়ে বড় সিংহ, এরপর খায় অন্য সিংহেরা, এরপর খায় যে সিংহীগুলো শিকার করেছে তারা!
সিংহের দল খেয়ে যাওয়ার পর পরে থাকা বাকি শিকার খেতে আসে হায়েনা, লেপার্ড বা চিতাবাঘেরা।
তারপরেও যা পরে থাকে তা খায় বন্য কুকুর, শেয়াল ও শকুনের মত scavenger-টাইপ প্রাণীগুলো।
তার-ও পরে কিছু পরে থাকলে সেগুলো খায় মাংশাসী কীট-পতঙ্গেরা!!
আমার কথা শুনে হয়তো মনে হবে আমি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক বা এনিমেল প্ল্যানেটের কোন প্রতিবেদক। না, তা' নয়, আমি আমার কথা দিয়ে শুধু আমাদের দেশের উচ্চতর শিক্ষায় ভর্তি প্রক্রিয়ার একটা অসঙ্গতি তুলে ধরতে চেয়েছি।
প্রথমেই বলতে হয়, উচ্চতর শিক্ষায় ভর্তি হওয়াটা হচ্ছে বন্য মহিষ বা জেব্রা বা উইল্ডার-বিস্ট-এর মত বড় কোন তৃণভোজী প্রাণী, যাকে কেউ না কেউ খাবেই!
সবচেয়ে বড় সিংহ হল বুয়েট ও ডিএমসি, অন্য সিংহেরা হল বাকি সব মেডিকেল ও কুয়েট-চুয়েট-রুয়েট-আইইউটি!
সিংহীগুলো হল ডিইউ, সিইউ, আরইউ, কেইউ, সাস্ট ও প্রথম সারির প্রাইভেট ভারসিটি ও প্রাইভেট মেডিকেলগুলো।
হায়েনা, লেপার্ড বা চিতাবাঘ হল বিভিন্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাকি প্রাইভেট ভারসিটিগুলো।
বন্য কুকুর, শেয়াল ও শকুনেরা হল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলো ও টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটগুলো।
আর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হল মাংশাসী কীট-পতঙ্গ!
প্রথমজন না খাওয়া পর্যন্ত বাকিরা অনাহারে থাকে, অভুক্ত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে অগ্রজের দিকে!
উচ্চতর শিক্ষার এই বাস্তুসংস্থান মেধা, দক্ষতা ও আগ্রহের ভিত্তিতে বিভিন্ন পেশার যোগ্য পেশাদার জনবল তৈরী করে না; এটি শুধুমাত্র সামাজিক শ্রেণীবিন্যাসকে আরো জোরদার করে। প্রমাণ করে যে, আমাদের এডুকেশন সিস্টেম ক্যারিয়ার-ওরিয়েন্টেড না! এখানে ভালো জায়গায় লড়াই করে চান্স পাওয়া শুধুমাত্র একটা সম্মানের ব্যাপার, মর্যাদার ব্যাপার, স্ট্যাটাসের ব্যাপার!
১০% মানুষের জন্য ৯০% মানুষের নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়, কারো নিজের জন্য, কারো বা নিজের সন্তানের জন্য।
যতদিন আমরা নিজেদের স্বকীয় প্রতিভা বিকাশে সক্ষম কোন শিক্ষা-ব্যবস্থা পাবো না, ততদিন এভাবে একে অন্যের ঘাড়ের উপরে পা দিয়েই উপরে উঠতে হবে।
এগিয়ে যাবে শুধু এক শ্রেণী, বাকিরা তাবেদারী করে যাবে! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।