আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কৃতজ্ঞতা

লিখতে ভাল লাগে, লিখে আনন্দ পাই, তাই লিখি। নতুন কিছু তৈরির আনন্দ পাই। কল্পনার আনন্দ। কৃতজ্ঞতা মোহাম্মদ ইসহাক খান মিস্টার গর্ডন আর্নল্ড দোকান বন্ধ করে বাইরে বেরিয়ে এলেন। তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে।

বৃষ্টির ছাঁটে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে একটা দুটো গাড়ি পানি ছিটাতে ছিটাতে সাঁ করে চলে যাচ্ছে। একটা গাড়ি তো প্রায় গা ঘেঁষে চলে গেল, লাফিয়ে সরে দাঁড়ালেন তিনি। শহর এই গভীর রাতে জেগে নেই, ঘুমিয়ে পড়েছে, সব বাড়িতে দরজার খিল এঁটে দেয়া হয়েছে। মিস্টার গর্ডনের মতো কিছু মানুষ শুধু কাজের তাগিদে জেগে আছেন।

এবার বাসায় ফেরা যাক। রেনকোট ভেদ করে সূচের মতো আঘাত করছে বৃষ্টির ফোঁটা, হাড়ে কাঁপুনি তুলে দিচ্ছে। এই দুর্যোগের রাতে তিনি কেন দোকান খুলে বসে ছিলেন ভেবে নিজেকেই গাল দিলেন তিনি। এবার ভালোয় ভালোয় বাড়ি ফিরতে পারলেই হয়। কালিগোলা অন্ধকার তো বটেই, রাস্তায় জমে গেছে পানি, হাঁটতে গেলে ছপছপ করে আওয়াজ হচ্ছে।

এমন মুষলধারে বৃষ্টি অনেকদিন ধরে এখানে হয়নি, যেন সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। দ্রুত পায়ে হেঁটে তিনি গলিতে পার্ক করে রাখা নিজের সাদা অস্টিন গাড়িটার কাছে পৌঁছলেন। তিনি ছোটখাটো মানুষ, তাঁর গাড়িটাও ছোট্ট, গোলাকার। চাবি ঢুকিয়ে মোচড় দিয়ে দরজা খুলেছেন, তখন তাঁর পায়ের দিকে নজর চলে গেলো। ছোট্ট একটা কুকুরছানা, কুঁইকুঁই করে ডাকছে।

ভিজে একেবারে কাঁদার পুঁটলি হয়ে গেছে, এখন শীতে থরথর করে কাঁপছে। নিশ্চয়ই মাকে হারিয়ে ফেলেছে, এখন কোথায় যাবে ভেবে পাচ্ছে না। একটু উষ্ণতার খোঁজে তাঁর পায়ে এসে মুখ ঘষছে। মিস্টার গর্ডনের মায়া লাগলো। তিনি এক হাতে তুলে নিলেন কুকুরছানাটিকে।

বাসায় নিয়ে যাওয়া যাক। সেও তো ঈশ্বরের সৃষ্টি, এভাবে ফেলে গেলে হয়তো মরেই যাবে। তাছাড়া তিনি একা মানুষ, কারো কোন সমস্যা হবে না। গাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন তিনি, হিটার চালু করে দিলেন। খানিকক্ষণের মধ্যেই একটা আরামদায়ক গরম আবহাওয়া তৈরি হয়ে গেলো গাড়ির ভেতরে।

শুকনো কাপড় ছিল, সেটা দিয়ে তিনি কুকুরটার গা ভাল করে মুছে দিলেন। আরাম পেয়ে কুণ্ডলী পাকিয়ে সে সীটের ওপর শুয়ে পড়লো চুপটি করে। মিস্টার গর্ডন গাড়ি স্টার্ট দিলেন। বাসায় চলে এসেছেন তিনি। কুকুরটাকে ঘরে নিয়ে এলেন।

ঘুমিয়ে পড়েছিল সে, ঘরে নিয়ে আসতেই আবার কুঁইকুঁই করে জেগে উঠলো। আদুরে গলায় ডাকল কয়েকবার, তাঁর হাত চেটে দিলো। বুঝিয়ে দিলো, তাঁকে বেশ পছন্দ হয়েছে কুকুরছানাটির। কয়েকদিন গত হয়েছে। এখন মিস্টার গর্ডনের সাথে সবসময় ঘোরাফেরা করে কুকুরছানাটি।

তিনি ওকে নিজের হাতে গোসল করিয়ে দেন, খাইয়ে দেন, বিকেলে হাঁটতে যাবার সময় সাথে করে নিয়ে যান। তিনি একা মানুষ ছিলেন, এখন একজন সঙ্গী পেয়ে মন্দ লাগছে না। মাঝে মাঝে ওর সাথে কথাও বলেন। ওর নাম রেখেছেন টেডি। টেডি বেয়ার নামের এক ধরণের খেলনা ভালুক পাওয়া যায়, বাচ্চাদের খুব পছন্দের।

টেডি দেখতে অনেকটা সেই পুতুলের মতো নাদুসনুদুস, গোলগাল, তাই তিনি এই নাম রেখেছেন। সে তাঁকে ভালোই সঙ্গ দেয়, লেজ নেড়ে, কুঁইকুঁই করে এমন চেহারা করে যেন সে মিস্টার গর্ডনের সব কথা বুঝতে পারছে। তাঁর সাথে একই বিছানায় ঘুমোয় সে, কোন উৎপাত করেনা। বন্ধুদের দেখালেন টেডিকে, তারাও দেখে বেশ আমোদ পেলেন চমৎকার একটা ছোট্ট প্রাণীকে দেখে। সেদিন আবার বৃষ্টি হচ্ছে।

নির্জন রাস্তায় গাড়ি ছুটিয়েছেন মিস্টার গর্ডন। কেন যেন দোকান বন্ধ করতে আজ তাঁর আবার দেরী হয়ে গেছে। ওয়াইপার চালু করা আছে, কিন্তু সামনে থেকে বৃষ্টির ছাঁট মুছে কুলিয়ে উঠতে পারছে না ওগুলো, তাই খুব আস্তে আস্তে সাবধানে গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি। হঠাৎ ব্রেক কষলেন মিস্টার গর্ডন। কুণ্ডলী পাকিয়ে রাস্তায় পড়ে আছে কে? একটা মানুষ না? তিনি বৃষ্টির মধ্যেও নেমে এলেন।

লোকটা উপুড় হয়ে পড়ে আছে। তিনি চিৎ করে শোয়ালেন। ডাকলেন, এই যে মিস্টার। কী হয়েছে? লোকটা চোখ মেলল, মিস্টার গর্ডন ইতোমধ্যেই খেয়াল করেছেন যে লোকটার সারা মুখে অনেকগুলো আঘাতের ছাপ। লোকটা কঁকিয়ে উঠলো।

উফ, ব্যথা। মিস্টার গর্ডন লোকটাকে তুলে নিলেন, টানাটানি করে গাড়িতে ঢোকালেন। এই দুর্যোগের মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে বাসায় নিয়ে যাওয়া যাক। তাছাড়া হাসপাতালে যেতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে, আর মিস্টার গর্ডনের বাসা প্রায় এসে গেছে। লোকটাকে ধরে ধরে নিয়ে এসে সোফায় বসালেন তিনি।

এক গ্লাস গরম দুধে খানিকটা ব্র্যান্ডি মিশিয়ে এনে দিলেন। খেয়ে নিন, ভাল লাগবে। লোকটা ঢকঢক করে পুরো গ্লাস খালি করে দিলো। মুখ থেকে কাহিল ভাবটা কেটে যাচ্ছে। বলল, ধন্যবাদ, মিস্টার ... ... আমি আর্নল্ড।

গর্ডন আর্নল্ড। নিজের পরিচয় দেন তিনি। ও। আমি গ্লেইন ফিটজেরাল্ড। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মিস্টার গর্ডন।

আপনি আমার জীবন বাঁচিয়েছেন। হয়তো মরেই পড়ে থাকতাম রাস্তায়। আসলে হয়েছিলো কী ... ... তাকে থামিয়ে দেন মিস্টার গর্ডন, কথা পরে হবে। আপনার এখন বিশ্রাম দরকার। শুকনো কাপড় দিচ্ছি, কাপড় পাল্টে ঘুমিয়ে পড়ুন।

আপনার অনেক অসুবিধা করে ফেললাম। না না, কীসের অসুবিধা? গেস্টরুম খুলে দিচ্ছি, আপনি নিশ্চিন্তে বিশ্রাম করুন। আমি একা থাকি, কোন অসুবিধা হবে না। আমার ঘরের দরজা খোলা রইলো, কোন অসুবিধা হলে ডাকবেন, কোন সংকোচ বোধ করবেন না। লোকটা ক্লান্ত হাসি হাসল।

পায়ের কাছে নড়াচড়া টের পেয়ে নিচে তাকালেন মিস্টার গর্ডন। টেডি এসে দাঁড়িয়েছে, লেজ নাড়ছে। ও আমার কুকুর, টেডি। টেডি, মিস্টার গ্লেইন, আমাদের অতিথি। টেডি গরগর করে আওয়াজ করলো।

শুঁকে দেখল নতুন আদমিটিকে। গ্লেইন ধপ করে গড়িয়ে পড়লো বিছানায়। বড্ড বিধ্বস্ত লাগছে তাকে। মিস্টার গর্ডন বাতি নিভিয়ে দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলেন। সকাল হয়েছে।

মিস্টার গর্ডনের ঘুম ভাঙল চোখে সূর্যের আলো পড়াতে। বৃষ্টি থেমে গেছে, গাছের ভেজা পাতায় সদ্য উদয় হওয়া সূর্যের আলো পড়ে চকচক করছে। মিস্টার গর্ডন ঘড়ি দেখলেন। ঘুম ভাঙতে দেরী হয়ে গেছে। ঘরে নতুন আসা অতিথিটির খোঁজ নিতে হয়।

রোজ সকালে টেডির চেঁচামেচিতে তাঁর ঘুম ভাঙে। আজ কোথায় গেলো সে? কোন সাড়াশব্দ নেই কেন? বাইরে গেছে নাকি? আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলেন মিস্টার গর্ডন। ঘরের চারদিকে চোখ বুলিয়ে বুকটা ধড়াস করে উঠলো। সারা ঘর এলোমেলো, দেরাজের জিনিসপত্র ঘরময় ছড়ানো, যেন এখানে একটা প্রলয়কাণ্ড ঘটে গেছে। মাথার কাছে ছোট্ট টেবিলটার ওপরে থাকে তাঁর ওয়ালেট, ওটাও উধাও।

মিস্টার গর্ডন প্রথমেই উঁকি দিলেন তিন নম্বর ড্রয়ারটাতে। সেখানে তিনি তাঁর যৎসামান্য সঞ্চয়ের টাকা রাখেন। উঁকি দিয়ে দেখলেন, জায়গাটা খালি। কার কাজ, বুঝতে কষ্ট হয়না। তিনি লিভিং রুমে চলে এলেন, এক ছুটে।

সেখানেও বইপত্র, সিডি- সব ছড়িয়েছিটিয়ে আছে। মিস্টার গর্ডন একে একে আবিষ্কার করলেন, তাঁর টাকাকড়ি, মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ কম্পিউটার নিয়ে তাঁর "অতিথি" চম্পট দিয়েছে। একটা মৃদু হুটোপুটির আওয়াজ পেয়ে তিনি রান্নাঘরে হাজির হলেন। থলের ভেতরে নড়ছে কিছু একটা। তিনি থলের মুখ খুলতেই লাফিয়ে বেরিয়ে এলো টেডি।

কাজে সে যাতে বাধা না পড়ে সেজন্য টেডিকে সে আগেই থলেতে ঢুকিয়ে রেখেছে। টেডি ভয় পেয়েছে বোঝাই যাচ্ছে। মৃদু শব্দ করে তাঁর পায়ে মুখ ঘষছে। মিস্টার গর্ডন ঘরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন। যাকে তিনি রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এলেন, আহত বলে সেবা করলেন, ঘরে থাকতে দিলেন, সে তাঁর সবকিছু চুরি করে নিয়ে ভেগে গেলো? মিস্টার গর্ডনের বন্ধুরা, পরিচিতজনেরা সবাই সাধারণ হলেও ভালোমানুষ, তাই তিনি কখনো কাউকে অবিশ্বাস করতে শেখেন নি।

কিন্তু সবকিছু লুট হয়ে যাবার পর তিনি বুঝতে পারলেন, মানুষ জাতটা নিয়ে বোধহয় নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। *** চোখ মেললেন মিস্টার গর্ডন। এটা একটা হাসপাতাল, দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তাঁর ডান হাতে লাগানো আছে স্যালাইনের সূচ, প্লাস্টিকের প্যাকেট থেকে বর্ণহীন তরল যাচ্ছে শরীরে। আস্তে আস্তে তাঁর সব মনে পড়তে থাকে।

দোকানে কাজ করতে করতেই তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল, তিনি লুটিয়ে পড়েছিলেন মাটিতে। তারপর তাঁর জ্ঞান ছিল না। কেউ একজন নিশ্চয়ই তাঁকে এখানে নিয়ে এসেছে। পাশ থেকে একজনের গলা পাওয়া গেলো, কী খবর গর্ডন? তিনি তাকান। তাঁর বন্ধু লারসেন।

হাসলেন তিনি। লারসেন বললেন, খুব তো দেখালে। তোমার দোকানে জিনিস কিনতে গেলাম, তুমি বলা নেই কওয়া নেই বুক চেপে ধরে চিৎপটাং হয়ে পড়ে গেলে। হ্যাঁ, তাহলে লারসেনই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। ভাবেন মিস্টার গর্ডন।

এখন তুমি বিপদমুক্ত, বললেন লারসেন। ধন্যবাদ, বন্ধু। তিনি কৃতজ্ঞতাভরে বন্ধুর হাত চেপে ধরলেন। আরে, তুমি অসুস্থ, আমি তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবো না? তোমার জায়গায় আমি হলেও তো তুমি তাই করতে, এখানে ধন্যবাদ দেবার কী আছে? দিব্যি খোলতাই হেসে বললেন লারসেন। মিস্টার গর্ডনের সেই লোকটির কথা মনে পড়ে যায়, তিনি চুপ করে থাকেন।

*** মিস্টার গর্ডনের দুশ্চিন্তা করা একদম বারণ। খুব সাবধানে চলতে বলে দিয়ে ডক্টর তাঁকে রিলিজ করে দিয়েছেন। একবার হার্ট অ্যাটাক কোনমতে সামলানো গেছে, আরেকবার হলেই দেখতে হবেনা। তিনি বাড়ি ফিরে এসে দেখলেন, টেডি নেই। টেডি? টেডি? ডাকতে শুরু করলেন তিনি।

ঘরময় খুঁজলেন তিনি, বাগানে, বাইরের রাস্তায়, আশেপাশে, প্রতিবেশীদের বাড়িতে, কোথাও বাদ দিলেন না। তাঁর কান্না পেলো। তাঁর বলতে গেলে কেউ নেই, টেডি তাঁর সবসময়ের সঙ্গী ছিল, সেও তাঁকে ছেড়ে চলে গেলো? অবশ্য তার তো চলে যাওয়ারই কথা, কারণ এতদিন ধরে তিনি হাসপাতালে পড়ে ছিলেন, কে টেডিকে খেতে দেবে? কাজেই সে মনিবকে ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গেছে। এটাই তো স্বাভাবিক। মিস্টার গর্ডন নিজেকে সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করেন।

নাকি ওকে কেউ তুলে নিয়ে গেছে? ভাবনাটা দূর করে দেন তিনি, হয়তো টেডি ভালোই আছে। *** আজকাল মিস্টার গর্ডনের মন খুব খারাপ থাকে, তিনি মাঝে মাঝে দোকান বন্ধ করে বিকেলে এই লেকের পাড়ের পুরনো বেঞ্চিটাতে বসে থাকেন। আগে টেডি তাঁর সাথে এসে বসে থাকতো, পায়ে পায়ে ঘুরঘুর করতো; এখন তিনি একা। তিনি বাড়ির পথ ধরলেন। সন্ধ্যা হয়ে আসছে, ঘরে ঘরে জ্বলে উঠছে আলো।

খুব অন্যমনস্ক থাকাতে তাঁর ওয়ালেটটা যে কখন পকেট গলে মাটিতে পড়ে গেলো, তিনি টেরই পেলেন না। টের পেলেন অনেক দূর গিয়ে। হায় হায় করে উঠলেন তিনি। এত বড় একটা জিনিস পকেট থেকে পড়ে গেলো, তিনি টেরই পেলেন না? নিজের ওপরই রাগ লাগলো তাঁর। জিনিসপত্র হারানো খুব অসাবধান লোকের লক্ষণ।

তিনি ভাবলেন, এখনো খুঁজে দেখলে হয়তো পাওয়া যাবে, কেউ যদি না তুলে নিয়ে থাকে। কালো রঙয়ের ওয়ালেট, তাছাড়া আঁধার হয়ে এসেছে, মতলববাজ কারো চোখে নাও পড়ে থাকতে পারে। মিস্টার গর্ডন ওয়ালেট খুঁজতে যাওয়ার জন্য পেছনে ঘুরলেন, আর সাথে সাথেই স্থির হয়ে গেলেন। তাঁর ওয়ালেট মুখে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে টেডি। তাঁকে দেখে নামিয়ে রাখল ওটা, আদুরে ভঙ্গিতে কুঁইকুঁই করে উঠলো।

তিনি হাতের লাঠিটা ফেলে দিলেন। তাঁর টেডি ফিরে এসেছে, টেডি! টেডিকে তিনি বুকে তুলে নিলেন। টেডি পুরনো অভ্যাসমতো তাঁর হাত চেটে দিলো। কোথায় ছিলি, টেডি? মিস্টার গর্ডনের চোখে আনন্দে আবার পানি চলে আসে। টেডি জবাব দেয় না, শুধু গরগর আওয়াজ করে।

*** মিস্টার গর্ডন হাঁটছেন আর ভাবছেন। তাঁর পাশে পাশে লাফিয়ে লাফিয়ে চলছে টেডি। রাস্তার আশেপাশে নানা জিনিস শুঁকে দেখছে। তিনি ভাবছেন, এই অবোধ প্রাণীটি তাঁর কাছে আবার ফিরে এলো। শুধু ফিরেই এলো না, তাঁর হারানো ওয়ালেট মুখে করে নিয়ে এলো, তাঁকে ফিরিয়ে দিলো।

আর সেই লোকটা? যাকে তিনি আশ্রয় দিয়েছিলেন? সে তাঁর সব লুট করে নিয়ে গিয়েছিলো। মিস্টার গর্ডনের এক বন্ধু বলেছিলেন, কুকুর উপকারীর উপকার মনে রাখে। একজন মানুষের উপকার করলে সে যে তোমাকে উপকার করবে, এমন কোন কথা নেই, এমনকি অপকারও করতে পারে। একটা কুকুর কিংবা অন্য কোন প্রাণী কখনো সেটা করবে না। সে যতটা পারে ততটা ফেরত দেবে।

অকৃতজ্ঞতা ব্যাপারটা পশুসমাজে নেই। অকৃতজ্ঞ মানুষ দেখা যায়, অকৃতজ্ঞ পশু কখনো দেখা যায় না। মিস্টার গর্ডন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। এর উল্টোটাই কি হবার কথা ছিল না? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।