আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজিন রিভিউ - Skyfall

“দ্য নেম ইজ বন্ড, প্রাইজ বন্ড থুক্কু থুক্কু জেমস বন্ড। “ বন্ডের মুভিতে আর কী আশা করা যাবে? কথায় কথায় প্রাইজ বন্ড ডায়লগ, ধুম ধারাক্কা মারামারি আর ভয়ংকর সুন্দরী কিছু বন্ড গার্ল দ্বারা বিছানার চাদরের বিজ্ঞাপন। কিন্তু পরিচালক Sam Mendez ভাবলেন নাহ্! এবার এমন কিছু বানাবো যা দেখে দর্শকের মনে কিছু চিন্তা খেলা করবে। খুব সফলভাবেই সেটা করে দেখিয়ে বিশ্বের সামনে নিয়ে আসলেন James Bond 007 সিরিজের ২৩ তম চলচ্চিত্র “Skyfall”। কাহিনী জানা যাক।

বন্ড ভাইদের এক কলিগের ল্যাপটপ থেইক্কা হার্ড ডিস্ক গেসে চুরি। হার্ড ডিস্কের মধ্যে ছিল অনন্ত জলিলের মোস্ট ওয়েলকাম এর DVDrip আর সাথে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা প্রেরিত সকল গুপ্তচরদের পরিচয়। বন্ড ভাইদের সর্দারনী M (Judy Dench) চোরটারে খুঁজতে পাঠায় James Bond ( Daniel Craig) আর বিশিষ্ট নিশানাবিদ Eve ( Naomie Harris) কে। চোরটারে বন্ড এক্কেরে সাইজ কইরা ফালাইসিলো কিন্তু M এর খায়েশ মোস্ট ওয়েলকাম আজকেই দেখুম। চালাও গুলি।

ইভ চোরটারে গুলি করতে গিয়ে গুলি করে বন্ডরে। কী সৌন্দর্য!! বন্ড গেলো মইরা আর M গান গাইতে শুরু করে :”বুড়ি হইলাম তোর কারণে ... ...”। এদিকে বিরাট বিপদ। হার্ড ডিস্কের মধ্যে সকল গুপ্তচরদের নাম একে একে ছড়িয়ে দেয়া হয় ওয়েবসাইটে। প্রতি সপ্তাহে মৃত্যুর খবর।

অবশেষে হেড কোয়ার্টার MI-6 এ ঘটে বিস্ফোরণ। পুরো ব্রিটেনের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। কার কাজ এটি? ফিরে আসে বন্ড। দেশকে এখন তারই দরকার। কিন্তু বন্ডের অবস্থা খুবই খারাপ।

কিছু পরীক্ষা নেয়া হয় তার। ফিটনেস টেস্ট, ফায়ারিং টেস্ট, মানসিক টেস্ট। সবগুলোতেই জামানত বাজেয়াপ্ত অবস্থা। কিন্তু এম এর সুপারিশে পাশ। তদন্তে নেমে পড়ে বন্ড।

অবশেষে পেয়ে যায় মূল হোতাকে। বান্দার নাম Raoul Silver( Javier Bardem)। একসময়ের ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার সবচাইতে তুখোড় গুপ্তচর। এক কথায় জিনিয়াস। লড়াকু, হ্যাকার এবং কূটকৌশলবিদ।

কিন্তু একদা চীনাদের হাতে ধরা পড়ে সে। চরম অত্যাচারের শিকার হয় সে। কিন্তু এম এবং ব্রিটিশ সরকার তার জন্য কিছুই করেনি। অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ভয়ংকর কেমিকেল খেয়ে তার দেহ বিকৃত হলেও ভাগ্যে মৃত্যু আসেনি।

অনেকদিন হয়েগেছে। নিজেকে ধীরে ধীরে সামলিয়ে নিয়েছে। এখন সময়। প্রতিশোধের সময়। খুব সহজেই ধরা পরে যায় বন্ডের কাছে।

কিন্তু এত সহজ জিনিস সিলভার না। সেও বন্ডের বাপ। তার মূল লক্ষ্য M কে হত্যা করা। পারবে কী বন্ড তাকে থামাতে ? নাকি সিলভার নিবে তার প্রতিশোধ? মূলধারার বন্ড মুভি থেকে একেবারে আলাদা করে আসলে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে মুভিটি। পিটার মরগানের শুরু করে দেয়া কাহিনী দারুনভাবে রং দিয়েছেন পরিচালক স্যাম মেন্ডেস।

বন্ড মুভির ৫০ বর্ষপূর্তি হিসেবে একেবারে মানানসই মুভি। অভিনয়ের দিক দিয়ে ড্যানিয়েল ক্রেগ, জুডি ডেঞ্চ যথারীতি ভালো করেছে। কিন্তু অসাধারণ লেগেছে হাভিয়ের বার্দেমকে। মুভির প্রায়ই অর্ধেক সময় অনুপস্থিত থাকলেও মুভি শেষে শুধুমাত্র তার কথাই মনে পড়ে। দুর্দান্ত।

এই স্প্যানিশ অভিনেতার আসলেই জবাব নেই। এছাড়া Ralph Fiennes, Albert Finney, Ben Whishaw ভালোই করেছেন। Naomie Harris কে মোটামুটি লেগেছে। তবে খুবই সংক্ষিপ্ত চরিত্রে Bérénice Lim Marlohe কে বেশ ভালো লেগেছে। মুভিটি অন্য সকল বন্ড মুভি থেকে আলাদা হলেও একশানের কিছু কমতি নেই।

মুভিটির একশানের মজা IMAX এ আরো দুর্দান্ত লেগেছে। মুভিটিতে Adele এর গাওয়া Skyfall তো সবার মনে ভালোভাবেই গেঁথে গেছে। এবার মুভিটির খারাপ দিকগুলি দেখা যাক। মুভিটিতে জেমস বন্ডের সেই চলাফেরার স্টাইল একটু কম থাকায় কিছুটা হতাশ হয়েছি। নায়ক যদি মারামারি একটু ভুলে যায় তখন মুভি দেখতে একটু বিরক্ত লাগে।

মুভির শেষের দিকে স্কটল্যান্ডের আত্মগোপনের ব্যাপারটা পুরোপুরি অবাস্তব বলে মনে হয়েছে। মুভিটিতে বার্দেমের চরিত্রটি আমার মতে আরো একটু আগে আনলে বোধহয় ভালো হত। এছাড়া সিলভার চরিত্রটি অন্যরকম হলেও তার মূল লক্ষ্য কিছুটা সস্তা ধরণের। সব মিলিয়ে বলা যায় একটি উপভোগ্য মুভি। রেটিং – ৩.৫ /৫ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।