আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজিন রিভিউ - “Man of Steel”

ঘুম থেকে উঠে দাঁত মাজা। পাউরুটিতে কামড়। তারপর অফিস। ধুর আর ভালো লাগে। ইশশ যদি উড়তে পারতাম।

যদি গুন্ডা বদমাইশগুলারে এক ঘুষিতে উড়ায়ে দিতাম কিংবা রাজাকার গুলারে যদি নিজের চোখ থেকে রে মাইরা জ্বালায় দিতাম। এভাবেই মানুষের সাধারন জীবনের বিতৃষ্ণা থেকে সামান্য রেহাই দিতে DC Comics এর Jerry Siegel এবং Joe Shuster নামক দুই তরুন সৃষ্টি করেন Superman নামক এক অতিমানব। ধীরে ধীরে কমিকসের জোয়ার আসে। আসে একের পর এক Superhero । কিন্তু ভেজালটা লাগাইলো Christopher Nolan।

২০০৮ সালে The Dark Knight Rises দেখার পর দর্শকদের মনে সুপারহিরো মুভি নিয়ে উচ্চাশা পুরাই আসমান পার হইয়া গেল। সে আশাকে কিছুটা পূরণ করার প্রচেষ্টা নিয়ে এবার পৃথিবীর সর্বপ্রথম কমিক সুপার হিরো নিয়ে Zack Snyder এর মুভি Man of Steel । কানসাসের এক গ্রামের কৃষকের ছেলে ক্লার্ক (Henry Cavill) । ছোটবেলায় স্কুলে গিয়ে দেখে এইডা কী হইতেসে? মানুষের দিকে তাকাইলে হাড্ডি পর্যন্ত দেখা যায়। কে যেন আরেফিন রুমীর ৪ নম্বর ভালোবাসা নিয়া কথা কয় এটাও শোনা যায় আবার কেউ বাথরুমে বসে “বোরকা পরা মেয়ে পাগল করেছে ... “ গান ফিসফিস করলে সেটাও শোনা যায়।

মহা মুসিবত। অনন্ত জলিলের মুভি দেইখা সবাই হাইসা ভাসায় দেয় কিন্তু ক্লার্ক একটু চেষ্টা করলেই অনন্ত জলিলের মত “ঢাকার পোলা ... ভেরি ভেরি ইশমার্ট” হতে পারে। এতে হাসির কী হলো? অবশেষে একদিন নিজের বাবার (Kevin Costner) কাছে জানতে পারে যে সে তার সন্তান নয়। এমনকি সে এই পৃথিবীরই কেউ নয়। একটি স্পেস শিপে করে ক্ষেতের মধ্যে তাকে পাওয়া গিয়েছিল।

ছোটবেলায় কোন এক বিয়ে বাড়িতে দৌড়াদৌড়ি করছিলাম। হঠাৎ দেখি আমি এমন এক রুমে আছি যেখানে আমার মা-বোন , পরিবারের কেউই নেই। নিজেকে ভয়ংকর একা লেগেছিল। ক্লার্ক জানতে পারে যে সে এমন এক জায়গায় আছে যেখানে তার প্রজাতির কোন প্রাণীই নেই। কতটা একা হয়ে গেল সে সেটা বোঝানো কঠিন।

ক্লার্ক যখন যৌবনে তখন নেমে পড়ে এক খোঁজে। নিজের পরিচয়ের সন্ধানে। দেখা পায় তার আসল বাবা (Russell Crowe) এর সাথে। এদিকে ক্লার্কের উৎপত্তিস্থল “Krypton” গ্রহ থেকে এসেছে কিছু এলিয়েন। খুঁজতে এসেছে ক্লার্ককে।

তাদের পর পৃথিবীতে কিছু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবে। কী যে করবে সেটাতো বোঝাই যাচ্ছে। ক্লার্কের যা শক্তি সবই তো তাদের কাছেও আছে। ক্লার্ক কী পারবে তাদের থামাতে? মুভিটির প্রথম ভাগে বেশ আবেগঘন হওয়ায় বেশ দারুন লেগেছে। পরের ভাগ ধুম-ধারাক্কা মারামারি একটু গাজাখুঁড়িই লেগেছে।

মুভিটির প্রযোজক Christopher Nolan হলেও মুভিটি Zack Snyder এর 300 টাইপই হয়েছে। তবুও Superman নিয়ে বানানো এটাই সেরা মুভি। মুভিতে সবচাইতে দুর্দান্ত লাগা জরুরী মুভির নায়ককে। সেটাই লেগেছে Henry Cavill কে । সুপারম্যানের চরিত্রে Henry Cavill ছাড়া এখন চিন্তা করাই কষ্টকর।

দারুন অভিনয় সাথে সুদর্শন এক নায়ক। প্রতিদিন ৫০০০ ক্যালরী খাবার এবং ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যায়াম ঠিকই কাজে দিয়েছে। Lois চরিত্র Amy Adams কেও ভালো লেগেছে। এছাড়া Kevin Costner, Diana Lane, Michael Shannon সবাই ভালো করেছে। তবে অসাধারণ লেগেছে Russell Crowe কে।

Marlond Brando ‘র করা চরিত্রের জন্য এমন যোগ্যই কাওকে দরকার ছিল। মুভির Soundtrack এর কথা না বললেই নয়। সব সময়ের মত ফাটাইসেন Hans Zimmer। পুরো মুভিতে সাউন্ডট্র্যাক বেশ উপভোগ্য। মুভিটি একশান সম্পর্কে আগেই বলেছি বেশ আজগুবি।

খুব একটা অসাধারণ লাগেনি। কিছুটা ট্রান্সফর্মার টাইপ বিরক্তিকর। Zack Snyder এই জায়গাতেই Nolan এর কাছে ধরা খাইলেন। আরেক ব্যাপার খুবই অবাক করা। মুভিটি কিন্তু 3D তে চিত্রায়িত হয়নি।

বরং পরবর্তীতে 3D তে রুপান্তরিত করা হয়েছে। সে কারণে IMAX 3D তে দেখলেও মুভিটিকে সাধারণ 2D মুভি লাগবে। ব্যাপারটি আমার কাছে কিছুটা ধাপ্পাবাজি লেগেছে। সেকারনে মুভিটির জন্য 3D দেখার পয়সা খরচের দরকার নেই। কিছু কিছু দৃশ্য আসলেই অসাধারণ লেগেছে।

কিছু দৃশ্য একেবারেই গাজাখুঁড়ি। কিন্তু সব মিলিয়ে সবাইকে নিয়ে দেখার মত একটি ছবি। রেটিং – ৩.৫ /৫ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।