আমার বাবা (তারেক-উল আলম) গত বছর কেনাডা বেড়াতে এসেছিলেন। কেনাডা থেকে দেশে ফিরে একটা বই লিখেছেন – ‘কানাডায় ৭০ দিন’। আজ পড়ুন এর ৬ষ্ঠ পর্বঃ
রিভার ভিউ পার্ক
শামীম দম্পতি বিকেলে গাড়ি নিয়ে হাজির। আমাদের টেমস নদীর তীরে ‘রিভার ভিউ পার্কে’ বেড়াতে নিয়ে যাবে। স্বামী-স্ত্রী দু’ জনেই বাংলাদেশের একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক।
শিক্ষা ছুটিতে দু’জনেই লন্ডনের ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক। শুভর বন্ধু এবং কলিগ। গাড়ি ছোট বলে দুইটি ট্রিপ দিতে হলো। কারণ, আমরাই পাঁচজন এবং সাথে ধ্রুব'র স্ট্রলার।
উডল্যান্ড পার্ক হয়ে আমরা রিভার সাইড দিয়ে যাচ্ছি রিভার ভিউ পার্কে।
রিভার ভিউ পার্কের মাঝ দিয়ে চলে গেছে টেমস নদী। ইংল্যান্ডের টেমস নদী যেমন লন্ডন শহরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ঠিক তেমনই এই শহরের মাঝ দিয়েই এ টেমস নদী। এককালে ব্রিটিশরা কানাডার এই অঞ্চল শাসন করে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য কানাডা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। তাইতো বলা হয় ‘ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে কখনো সূর্য অস্ত যায় না’ ! এখানে সূর্য অস্ত যাবে আর ভারতবর্ষে উদয় ! এখানে থাকবে রাত আর ভারতবর্ষে দিন।
কানাডার অন্টারিও প্রদেশটি ব্রিটিশদের সবচেয়ে প্রিয় ভূমি। রাজধানী অটোয়া এই প্রদেশেই। টরন্টো প্রাদেশিক রাজধানী এবং কানাডার সবচেয়ে বড় শহর। শিল্পে বাণিজ্যে উন্নয়নে এবং বিশালত্বে টরন্টোর তুলনা নেই ! আর এই লন্ডন শহরকে ইংরেজরা গড়তে চেয়েছে ঠিক নিজেদের প্রিয় লন্ডন শহরের মতো। এ জন্যেই এই শহরের নাম থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, নদ-নদীসব কিছুই ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরের অনুরূপ।
নদীটির নাম ও তাই ‘টেমস রিভার’। আর এখানকার অধিকাংশ নাগরিকই তো ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত !
নদীর গভীরতা খুবই কম, ক্ষীণ জলধারা নিয়ে চলেছে। নদীর দুই তীরে ঘন বনবীথি। নদীকে কেন্দ্র করে নদীর তীরে সৃষ্টি করা হয়েছে পার্ক। ভ্রমন পিপাসুদের জন্যে চমৎকার সব আয়োজন।
নদীর দুই পাড়ে হাঁটার জন্যে রয়েছে সু-দীর্ঘ পায়ে চলা পথ। অতি সাধারণ এই নদীকে কি অসাধারণ করে রেখেছে ! কি চমৎকার সংরক্ষণ ! এরা সব কিছু ধারণ করে, লালন করে। বাঁচার জন্যে, শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার জন্যে দেহের যেমন ফুসফুস, নদীকে ও তারা ঠিক তেমনি তাদের দেশের জন্যে, শহরের জন্যে, সৌন্দর্যের জন্যে, সজিবতার জন্যে, আনন্দের জন্যে ফুসফুস জ্ঞান করে। তাই নদীকে এরা এতো ভালবাসে।
আমরা টেমস নদীর এপাড়ের উদ্যানটিতে এসেছি চিত্ত বিনোদনে।
অনেক নারী- পুরুষ এসেছে তাদের শিশুদের নিয়ে। পার্কে ঢুকতেই চোখে পড়বে দৃষ্টি নন্দন চমৎকার এক পানির ফোয়ারা। ফোয়ারা দিয়ে কখনো প্রচন্ড বেগে পানি প্রবাহ সৃষ্টি করে ভাসিয়ে দেয়া হচ্ছে উঠোন, সুনির্দিষ্ট স্থান, আবার কখনো ক্ষীণ প্রবাহ-- সব কিছুই অটো কন্ট্রোল ! শিশুরা মহা আনন্দে ফোয়ারার পানিতে ভিজে খেলা করছে, আনন্দ করছে। বড়রা বেঞ্চে বসে শিশুদের আনন্দ উপভোগ করছে। অন্য স্পটে দোলনা, রাইডার ইত্যাদিতে সাজানো শিশু পার্ক।
শিশুরা খেলছে আনন্দচিত্তে !
শিশুদের নিয়ে এসেছে মায়েরা। এসেছে বিভিন্ন দেশের নরনারী ! মধ্য প্রাচ্য এবং ইরানের মহিলাদের মাথায় স্কার্ফ না থাকলে বোঝার উপায় থাকেনা তারা এশিয়ান বা মুসলিম। সালোয়ার কামিজে বোঝা যায় এরা ভারতীয়, পাকিস্তানি অথবা বাংলাদেশি। চীনা, থাই, জাপানীজ কংিবা কোরয়িান-- এদের চেনা যায় তাদের চেহারায়। এখানে জাতিভেদ নেই।
সব জাতির, সব বর্ণের, সব ধর্মের লোকজন বসবাস করে পরম শান্তিতে। চমৎকার স¤প্রীতির দেশ ! বসবাসের জন্যে পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তির দেশ, সুন্দরতম দেশ !
নদীর এপাড়ে আমরা হাঁটছি। শুভ স্ট্রলারে ধ্র“বকে নিয়ে আগে আগে আর আমরা পেছনে নদীর দুই পাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে। নদীর পাড়ে সুন্দর সারি সারি গাছ। মাঝে মাঝে বাঁধানো ঘাট সিঁড়ি ভেঙ্গে চলে গেছে নদীতে।
আবার কোথাও বড় বড় পাথর, ঝোপ জঙ্গল কিন্তু সুন্দর !
ওপাড়ে অন্য এক স্পটে আরেকটি দৃষ্টিনন্দন পানির ফোয়ারা ! এক দেড়শ ফুট উপরে উঠে যাওয়া পানির সর্পিল নৃত্য দৃশ্য ভারি সুন্দর ! মনকাড়া !
নদীতে কোথাও বা মানুষ ছিপ ফেলে বসে আছে। হাঁস সাতার কাটছে ! এখানে হাঁসের কোন ব্যক্তি মালিকানা নেই, সবই উম্মুক্ত। নদীর পাড়েই ঝোপের আড়ালে ডিম দেয়, বাচ্চা ফোটায়। সবই প্রাকৃতিক নিয়মে। সব পাখি এখানে নিরাপদ।
কেউ ধরবেনা, কেউ মারবে না, কেউ খাবেনা। কি শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ!
আমরা নদীর এক নিরিবিলি স্থানে বসে বিশ্রাম নিলাম। এই ফাঁকে ধ্র“বকে খাওয়ানো হলো। ধ্র“বর কোন কান্নাকাটি নেই, কোন বিরক্তি বোধ নেই। সেও বোধ হয় সব কিছু উপভোগ করছে ! অবাক বিম্ময়ে নুতন পৃথিবী দেখছে, এর নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করছে।
মাঝে মাঝে সুন্দর ফুলের বাগান। বাগানে নানা রকম ফুল ফুটে আছে, প্রজাপতি ফুলে ফুলে বসে মধু আহরন করছে। মনমাতানো দৃশ্য !
নদীর ওপাড়ে রাস্তায় সাইকেল নিয়ে ছুটছে কেউ কেউ। স্কেটিং করছে শিশু যুবা। কেউ বা ট্র্যাক স্যুট পড়ে দৌঁড়াচ্ছে।
নদীর উপর ওভারব্রীজ দিয়ে গাড়ি ছুটছে। কখনো বা ধবল বগ উড়ে এসে পানির কিনারায় বসছে ভন্ড তাপস সেজে ! আবার কোনটি উড়ে যাচ্ছে শিকার শেষে। ঘন্টা তিনেক সময় যে কোথা দিয়ে পার হয়ে গেলো টেরই পেলাম না !
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। আমরা বাসায় ফেরার জন্যে উঠে পড়লাম। সু-দীর্ঘ সময় আমাদের নির্মল আনন্দের উৎস সেই নদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং মমতা ভরা ভালোবাসা বুকে ধারণ করে গাড়িতে উঠলাম।
প্রাতঃ ভ্রমন
ভোর ৬টায় আমরা (আমি ও আমার স্ত্রী) প্রাতঃভ্রমনে বের হই। এখানে হাঁটার চমৎকার পরিবেশ। রাস্তার পাশ দিয়ে সমান্তরালে চলে গেছে পায়ে চলা পথ (ফুটপাত)। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, ধূলাবালি নেই। ছিমছাম নিরিবিলি পরিবেশ।
ফুটপাতের পাশেই সু-উচ্চ বড় বড় গাছ, সবুজ ঘাসের বাগান। মনে হয় সবুজ কার্পেট বিছিয়ে রেখেছে। ছোট ছোট বাংলো ধরণের একতলা দোতলা বাড়ি, দেখতে সব একই রকম। বাড়ির সম্মুখের খালি জায়গায় ফুলের বাগান। চমৎকার সাজানো গোছানো।
প্রতিটি বাড়ির সামনেই এক্সমাসট্রি, ম্যাপল ট্রি। প্ল্যাটস লেন পার হয়ে চেরিহিল পার্ক। চেরিহিল পার্ক ধরে আমরা দক্ষিণ দিকে হাঁটা শুরু করলাম।
চেরিহিল পার্ক বৃদ্ধদের আবাসিক এলাকা। এখানে সু-বৃহৎ বহুতল ভবনে অবসর প্রাপ্ত বৃদ্ধরা থাকেন।
সরকার এদের জন্যে নানা সুযোগ সুবিধা এবং চমৎকার থাকার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এক সময় তারা দেশকে দিয়েছে। তাদের শ্রমে, অর্থে, আন্তরিকতায় এবং মেধায় দেশ আজ উন্নতির শিখরে। কৃতজ্ঞ দেশ, কৃতজ্ঞ সরকার তাদের অবদানের কথা কখনো বিম্মৃত হয়নি !
নানান ধরণের গাছ গাছালি পুরো পার্কটিকে ঘিরে রেখেছে। ফুটপাতের পাশে মাঝে মাঝে বেঞ্চ পাতা।
কোথাও বেঞ্চের পাশে অথবা যাত্রী ছাউনির পাশে বক্স বসানো। বক্সের মধ্যে প্রতিদিনকার খবরের কাগজ বিশেষ করে “মেট্রো” । আপনি বসে পড়তে পারেন অথবা নিয়ে যেতে পারেন। বিনা মূল্যে এসব খবরের কাগজ আপনার জন্যে রাখা। বৃদ্ধরা তাদের সাথী একমাত্র কুকুরটি নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হাঁটছে।
দেখা হলেই ‘গুড মর্নিং’ বলবে। আপনিও হেসে উত্তর দেবেন।
গাড়ি চলছে অতি সাবধানে ! কোন হর্নের শব্দ নেই, কোন শব্দ দুষণ নেই। কাউকে রাস্তা পার হতে দেখলে অনেক দূর থেকে গাড়ি থেমে যাবে। কখনো ওভারটেক করবেনা যতোক্ষণ না পথচারি রাস্তাপার হয়ে যায়।
চেরিহিল পার্ক পার হয়ে আমরা অক্সফোর্ড স্ট্রীটের ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে থাকলাম। বাঁদিকে চেরিহিল মল। দোকানপাট এখনো খোলেনি। লন্ডনের মানুষ এখনো জাগেনি। লন্ডন শহরের অন্যতম প্রধান সড়ক অক্সফোর্ড স্ট্রীট চলে গেছে পূর্ব পশ্চিমে।
ডান এবং বাম উভয় দিক থেকে লেন বাই লেন এসে মিশেছে অক্সফোর্ড স্ট্রীটের সাথে। রাস্তায় এখনো তেমন একটা গাড়ি চলাচল শুরু হয়নি। কানাডা ট্রাস্ট ব্যাংক বাঁয়ে রেখে অক্সফোর্ড স্ট্রীট পার হয়ে আমরা চলে এলাম উডল্যান্ড এভিন্যুতে।
উডল্যান্ড এভিন্যুর ফুটপাত ধরে হাঁটতে থাকলাম। লোকজন নেই, গাড়ি ঘোড়া নেই, নীরব নিস্তব্ধ সব।
রাস্তার একদিকে একই ধরণের সব একতলা বাড়ি অপর দিকে সবই দোতলা। বাড়ির নিচে বেইজমেন্ট এবং গাড়ির গ্যারেজ। প্রতিটি বাড়ির গ্যারেজের সামনে দুই একটি গাড়ি। প্রায় বাড়িই আদিকালের ব্রিটেনের বাড়ি ঘরের আদলে তৈরি।
উডল্যান্ড এভেন্যুর ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমরা গিয়ে উঠলাম রিভার সাইড রোডে।
গতকাল আমরা এই রিভার সাইড রোড দিয়েই গাড়ি করে গিয়েছিলাম রিভার ভিউ পার্কে। সেই রোডের ফুটপাত দিয়েই আমরা হাঁটছি। হাঁটতে হাঁটতে আমরা অনেক দূর পর্যন্ত এসে পড়েছি। সামনেই টেমস নদী। নদীর উপর দিয়ে চলে গেছে ব্রীজ।
ব্রীজ থেকে রাস্তা ভাগ হয়ে একটি বাম দিকে এবং অন্যটি গিয়ে মিশেছে ডানডাস স্ট্রীটের সাথে। ব্রীজ পার হলেই ডানদিকে রিভার ভিউ পার্ক। আমরা দুই ব্রীজের সংযোগ স্থলের ফুটপাতের পাশে বেঞ্চে বসলাম । লতা অরেঞ্জ জুসের ক্যান বের করলো !
রাস্তার ওপারে রিভার ভিউ গার্ডেন এবং পার্ক। পার্কের পাশ দিয়ে চলে গেছে টেমস নদী।
যদি ও এ নদীতে কোন মর্মরধ্বনি নেই, নেই চোখ জুড়ানো ঢেউ, তবুও ‘নদী’ নাম শুনলেই মনটা ভরে যায় প্রশান্তিতে। এখান থেকে যে গার্ডেন দেখা যায় তা ফুলের বাগান নয়, বড় বড় বৃক্ষের। সবুজ ঘাসের মাঠে দিগন্ত বিস্তৃত বৃক্ষের সারি চলে গেছে বহুদূর। অপূর্ব সুন্দর এ দৃশ্য ! বৃক্ষরাজীর এই সুন্দর পত্র পল্লবিত শাখা প্রশাখা যার পরতে পরতে চোখ জুড়িয়ে যায়, মন ভরে যায় কিন্তু হায়, গ্রীষ্ম শেষে এই সুন্দর সবুজের আয়ূ ও বুঝি শেষ হয়ে যায় !
গ্রীষ্মে কানাডা নব যৌবনা ! চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ, সবুজের সমারোহ।
যেদিকে তাকাবেন চোখ জুড়িয়ে যাবে সবুজের পত্র পল্লবে,ঘাসে, দিগন্ত বিস্তৃত শস্যক্ষেত্রে, দৃষ্টি সীমার শেষ প্রান্তের বনবৃক্ষে এবং সমস্ত প্রকৃতি জুড়ে। শরতে কানাডা পরিপূর্ণ যৌবন পার করবে, প্রকৃতি যৌবন বিদায়ের গান ধরবে ! প্রকৃতির রং পরিবর্তন হবে ! গাছের পাতা হলুদ, লাল খয়েরি প্রভৃতি নানা রং ধারণ করবে। রং পরিবর্তনের উৎসবের মধ্যেই যৌবন বিদায়ের বার্তা দেবে ! আর হেমন্তে কানাডা হয়ে যাবে ন্যাড়া-- গাছের সব পাতা ঝড়ে যাবে। প্রাকৃতিক দৈন্যে সে হয়ে পড়বে শীর্ণ ,বিদীর্ন । সবচেয়ে করুণ অবস্থা তখন তার ! আর শীতে ? সে হবে বৃদ্ধ পবিত্র সম্মানিত শ্রদ্ধেয়।
পত্রহীন শাখা প্রশাখায় তখন তুষারের শুভ্র বরফ কনা। মনে হবে শুভ্র মুকুট পরে প্রকৃতি ধ্যানমগ্ন !হঠাৎ
বায়ু প্রবাহ শুরু হয়েছে। বিনা নোটিশে ঠান্ডা বাতাস। কানাডায় এই এক সমস্যা। কখনো পরিষ্কার আকাশ, চমৎকার আবহাওয়া।
আবার হঠাৎই মেঘ, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ! আমরা গরম কাপড় সাথে আনিনি। তাই তাড়াতাড়ি বাসার পথ ধরলাম।
(ক্রমশ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।