বন্দনা: সাঁওতাল বিদ্রোহ
নবাবগঞ্জের সাঁওতালি আন্দোলন
শুনেন শ্রোতা সর্বজন।
সাঁওতাল জাতি কর্মঠ অতি
বিশ্বস্ততায় সত্যবাদী
মিথ্যেবাদী হয় তাদের দুশমন।
এই আন্দোলনের কথা শুনলে
শরীলের রোম হইয়া যায় খাঁড়া
সাঁওতাল বিদ্রোহের নামে আন্দোলনের ধারা
কৃষক মজুর সাঁওতাল মিল্যা
আন্দোলন দিলে তুঙ্গে তুল্যা।
এই আন্দোলনের হোতা
রমেণ মিত্র যুবনেতা
তার স্ত্রী ইলা মিত্র
আন্দোলনের দেয় নেতৃত্ব।
সাঁওতাল মাতলা সরদার
দলের নেতা বরাবর
আন্দোলনের প্রাণ কেন্দ্র
নাম হইল নাচোল বিদ্রোহ।
ইলা মিত্রের কঠোর শ্রমে
জোয়ার আসে আন্দোলনে
সাঁওতালেরা ‘রাণী মা’ ডাকিতো।
ইলা মিত্র বুদ্ধিবলে
সাঁওতালদের ভাষা শিখ্যা লিলে
জোতদারগণ অবস্থায় ফেরে
কিছু দাবী স্বীকার করে।
গোপনে সব জোতদার
সরকারের সোঁতে আঁতাত করে
দ্বিমুখী নীতি লিলে তারা
আন্দোলনের নেতা ছিল যারা
তাদের সোঁতে কথা বলে
নানান কলা কৌশলে।
জোতদার করে রিপোর্ট পাচার
গুপ্ত রিপোর্ট পায় সরকার
দারোগ সোঁতে পুলিশ বাহিনী
দমন হেতু যায় তখনি।
দু’দলে যুদ্ধ বাইধ্যা গ্যালো
দারোগাসহ পুলিম মরিলো
সরকার সেনাবাহিনী প্যাঠায়
তারা ম্যালা বাড়ি পুড়ায়
ম্যালা মানুষ মারা যায়
ম্যালা মানুষ উধাও হয়।
কিছু নেতা ভারতে পালায়
ইলা মিত্র রহনপুরে
রাতের ব্যালা তারে ধরে
চলে স্টীম রোলার
নির্যাতন বেশুমার
বন্দীদের নানা নির্যাতন।
সেকথা যায় না কহন
ইলা মিত্র বন্দীবস্থায়
দশ বিশ দিন নবাবগঞ্জ থানায়
সব খুনের দোষ দিল তারে
অস্তির হৈল অত্যাচারে।
রাজশাহী সদর কারাগারে
সেলে দ্যায় এক বছর পরে
আদালতের কাঠগড়ায়
মর্মান্তিক জবানবন্দী দ্যায়।
ভাষার সাধ্য নাই বর্ণনার
যাবজ্জীবন দণ্ড হইল তার
হাইকোর্টে আপিলের পর
দন্ড কমে যায় তার।
জেলখাটা শ্যাষ হইলে
ভারতবর্ষে যায় চলে
ইলা মিত্রের বিদ্রোহ কাহিনী
সভারই কাছে পরশমণি
ইতিহাসের উজ্জ্বল নক্ষত্র
কৃষক নেত্রী ইলা মিত্র।
।
(সূত্র: ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীত: আলকাপ গান
রচনা: মাহবুব ইলিয়াস সরকার)
(বি:দ্র: কোন ভুল থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।